৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ১ম অধ্যায় সমাধান মর্যাদা বজায় রেখে যোগাযোগ করি : নিচে কয়েকটি পরিস্থিতির উল্লেখ আছে। এসব পরিস্থিতিতে কী ধরনের যোগাযোগ হয়, ছোটো ছোটো দলে ভাগ হয়ে আলোচনা করো এবং ভূমিকাভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করো। (মূল বইয়ের ১-৪ নম্বর পৃষ্ঠা)
৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ১ম অধ্যায় সমাধান
পরিস্থিতি-১: রাতের খাওয়া শেষে পরিবারের সবাই মিলে কথা বলছি। সারাদিন কে কী করেছি, তা নিয়ে কথা হচ্ছে।
বাবা: মীনা, কী খবর, তুমি আজ স্কুলে গিয়েছিলে?
মীনা: হ্যাঁ বাবা, আজ আমাদের স্কুলে দারুণ একটি অনুষ্ঠান হয়েছে। আমরা সেই অনুষ্ঠানে অনেক মজা করেছি।
বাবা: তাই? রাজু, তোমার কী খবর? তোমার হাঁস-মুরগির খবর কী?
রাজু: জানো বাবা, আমার মুরগিটি আজ প্রথম ডিম দিয়েছে, আমার অনেক ভালো লাগছে।
মা: মীনা বলছিল, ওদের স্কুলে নাকি একটি অভিভাবক সমাবেশ হবে। তুমি কি সেখানে যেতে পারবে?
বাবা: আমার মনে হয় না আমি যেতে পারব। কারণ অফিস থেকে ছুটি পাওয়া যাবে না। সবচেয়ে ভালো হয়, তুমি সেখানে যাও।
মা: আচ্ছা ঠিক আছে। রাজু-মীনা, কিছুক্ষণ টিভি দেখে শুয়ে পড়ো। সকালে স্কুলে যেতে হবে।
রাজু-মীনা: ঠিক আছে মা।
পরিস্থিতি-২: মায়ের সঙ্গে ছেঁড়া জুতা সেলাই করতে গিয়েছি। একজন মুচি রাস্তার মোড়ে বসে আছেন। তাঁর সাথে আমার ও মায়ের কথা হচ্ছে।
মা: আস্সালামু-আলাইকুম, কেমন আছেন?
মুচি: ওয়ালাইকুম-আসসালাম, আমি ভালো আছি, আপনারা ভালো আছেন?
মা: হ্যাঁ, ভালো আছি। আমার ছেলের জুতাটা ছিঁড়ে গেছে। আপনি কি মেরামত করে দিতে পারবেন?
মুচি: হ্যাঁ, অবশ্যই। কই, দেখি জুতাটা।
মা: রাজু, জুতাটা দাও তো বাবা।
রাজু: এই যে মা, এই জুতাটা।
মুচি: জুতাটা তো বেশ অনেকখানি ছিঁড়ে গেছে। এটা সেলাই করতে ৫০ টাকা লাগবে।
মা: আচ্ছা, ঠিক আছে। আপনি ভালো করে সেলাই করে দিন।
মুচি: ঠিক আছে আপা। আপনি এখানে কিছুক্ষণ বসুন, আমি এখনই সেলাই করে দিচ্ছি।
পরিস্থিতি-৩: হাসপাতালে অসুস্থ আত্মীয় ভর্তি হয়ে আছেন। বাবার সঙ্গে তাঁকে দেখতে গিয়েছি এবং তার চিকিৎসার খোঁজ নিচ্ছি।
আমি: রফিক চাচা, আপনার অসুস্থতার খবর শুনে খুবই মর্মাহত হয়েছি। তাই আর দেরী না করে আপনাকে দেখতে আসলাম। আপনি এখন কেমন বোধ করছেন?
রফিক চাচা: এখন কিছুটা ভালো বোধ করছি মা। তবে পায়ের ব্যথাটা এখনো পুরোটা সারেনি। তাই ভালোভাবে হাঁটতে পারছি না।
আমার বাবা: আপনি ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী ওষুধ খেয়ে যান। আশা করছি, আপনি খুব দ্রুতই সুস্থ্য হয়ে উঠবেন।
রফিক চাচা: হ্যাঁ, আমি ঠিক তাই করছি। আমাকে দেখতে আসার জন্য তোমাদের অনেক ধন্যবাদ।
আমি: না চাচা, ধন্যবাদ দেওয়ার কিছ্ইু নেই। এটা তো আমাদের দায়িত্ব।
যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিবেচ্য
বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মর্যাদা বজায় রেখে যোগাযোগের ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিৎ বলে তোমার মনে হয়, সেগুলো নিচে লেখো। (মূল বইয়ের ৪ নম্বর পৃষ্ঠা)
ক. ব্যক্তির বয়স ও তার সাথে সম্পর্কের ধরন অনুযায়ী সম্বোধন করা।
খ. উচ্চস্বরে বা অনেক নিচু স্বরে কথা না বলা।
গ. অসম্মানজনক অঙ্গভঙ্গি না করা।
ঘ. অন্য ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনায় নেওয়া।
ঙ. প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে কথা বলা।
চ. কথোপকথনের সময় কতটা ব্যয় হচ্ছে, তা বিবেচনায় রাখা।
ছ. চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা।
জ. ব্যক্তিগত প্রশ্ন না করা।
ঝ. সম্মানজনক শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা।
ঞ. স্থান ও পরিস্থিতির রীতিনীতি বিবেচনা করা।
ভাষায় মর্যাদা প্রকাশ
তুমি যেভাবে পরিবার এবং পরিবারের বাইরের মানুষের সাথে যোগাযোগ করো, সে অনুযায়ী নিচের ছকটি পূরণ করো। পূরণ করা ছকের মিল-অমিল নিয়ে সহপাঠীর সাথে আলোচনা করো। (মূল বইয়ের ৫ নম্বর পৃষ্ঠা)
কী বলি?
- তুমি, তোমার, তোমাকে, তোমরা, তোমাদের
- আপনি, আপনার, আপনাকে, আপনারা, আপনাদের
- তুই, তোর, তোকে, তোরা, তোদের
- সে, তার, তাকে, তারা, তাদের
- তিনি, তাঁর, তাঁকে, তাঁরা, তাঁদের
- ও, ওর, ওকে, ওরা, ওদের
কাদের বলি?
- বয়সে ছোট মানুষদের।
- বয়োজ্যেষ্ঠ এবং অপরিচিত ব্যক্তিদের।
- খুব কাছের বন্ধুদের।
- সাধারণ পরিচিত ব্যক্তিদের।
- বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের।
- বয়সে ছোট মানুষদের।
নিচের বাক্যগুলো দেখো। বাক্যগুলোতে কোন কোন শব্দের পরিবর্তন হয়েছে, তা চিহ্নিত করো। (মূল বইয়ের ৫ নম্বর পৃষ্ঠা)
- তুমি কেমন আছ?
- আপনি কেমন আছেন?
- তুই কেমন আছিস?
- সে কেমন আছে?
- তিনি কেমন আছেন?
- ও কেমন আছে?
উত্তর: উপরে উল্লেখিত বাক্যগুলোতে সর্বনাম এবং ক্রিয়া পদ বোঝায় এমন শব্দগুলোতে পরিবর্তন হয়েছে। যেমন- সর্বনাম পদ: তুমি, আপনি, তুই, সে, তিনি, ও ইত্যাদি। আবার ক্রিয়া পদ: আছ, আছেন, আছিস, আছে ইত্যাদি।
যোগাযোগের অনুশীলন
এবার দলে ভাগ হয়ে নিচের পরিস্থিতি অনুযায়ী ভূমিকাভিনয় করো। কথোপকথনের সময়ে খেয়াল রাখবে মর্যাদা অনুযায়ী যেন সর্বনাম ও ক্রিয়ার ব্যবহার হয়। (মূল বইয়ের ৮ নম্বর পৃষ্ঠা)
পরিস্থিতি-১: বাইরে থেকে মাত্র বাড়ি ফিরেছ। এমন সময়ে তোমার ছোটো ভাই তোমার সাথে খেলার জন্য বায়না ধরেছে। এ নিয়ে তার সাথে কথা হচ্ছে।
আমি: রাজু, তুমি কী করছ?
রাজু: আব্বু আমাকে একটি খেলনা গাড়ি কিনে দিয়েছেন। আমি সেটা দিয়ে খেলছি। তুমিও দয়া করে আমার সাথে খেল না।
আমি: না রাজু। আমি এই মাত্র স্কুল থেকে ফিরেছি। আমি এখন বেশ ক্লান্ত। আমি খাওয়া-দাওয়া করে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে নেই, তারপর আমরা দুজনে একসাথে খেলব।
রাজু: আচ্ছা, ঠিক আছে আপু।
পরিস্থিতি-২: আজ নতুন বই হাতে পেয়েছ। খবরটি তোমার দাদা বা নানাকে ফোন করে জানাও।
আমি: আসসালামু-আলাইকুম দাদা, কেমন আছ?
দাদা: ওয়ালাইকুম-আসসালাম, আমি ভালো আছি, তুমি ভালো আছ তো?
আমি: হ্যাঁ দাদা, আমিও ভালো আছি। দাদা, তোমাকে একটি সুখবর দেওয়ার জন্য ফোন করেছি। আজ আমাদের স্কুলে নতুন বই দিয়েছে। আমি নতুন ক্লাসে উঠেছি আর নতুন ক্লাসের সবগুলো বই পেয়েছি।
দাদা: তাই? বেশ ভালো একটি খবর তো! তুমি নিশ্চয়ই বইগুলো পেয়ে খুব আনন্দিত?
আমি: হ্যাঁ দাদা, আমি তো খুশিতে ইতোমধ্যেই বইয়ের বেশ কয়েকটি গল্প পড়ে ফেলেছি। আমার কাছে নতুন ক্লাসের বইগুলো বেশ দারুণ লাগছে।
দাদা: শুনে বেশ ভালো লাগল। আমি আশা করছি, নতুন ক্লাসে তুমি মন দিয়ে পড়াশোনা করবে।
আমি: অবশ্যই। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব। তুমি আমার জন্য দোয়া করবে।
দাদা: সে আর বলতে! আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন।
পরিস্থিতি-৩: তোমার চাচা টেলিফোন করে জানালেন, তোমার দাদি অসুস্থ। এ নিয়ে চাচার সঙ্গে আলাপ করছ।
আমি: হ্যালো, চাচা, আসসালামু-আলাইকুম। কেমন আছেন?
চাচা: ওয়ালাইকুম-আসসালাম, আমি ভালো আছি। একটি জরুরি খবর দেওয়ার জন্য তোমাকে ফোন করেছি। বেশ কয়েকদিন যাবৎ তোমার দাদি বেশ অসুস্থ। আর আজ তিনি অনেক বেশি অসুস্থবোধ করছেন।
আমি: সে কি? তাঁর কী হয়েছে?
চাচা: আসলে তাঁর বুকে ব্যাথাটা একটু বেড়ে গেছে। খুব সম্ভবত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আমি একা সেটা করতে পারছি না। তুমি কি তোমার বাবাকে একটু জানাবে?
আমি: হ্যাঁ চাচা, অবশ্যই। বাবা এখন বাড়িতে নেই। বাড়িতে আসলে আমি অবশ্যই তাকে বিষয়টি জানাব।
চাচা: ঠিক আছে মা, ভালো থেকো।
আমি: আপনিও ভালো থাকবেন চাচা।
জরুরী যোগাযোগ
অনেক সময় জরুরি প্রয়োজনে কারো সঙ্গে বা কোনো সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। নিচে কিছু জরুরি পরিস্থিতি দেওয়া হলো। এমন পরিস্থিতিতে তুমি বা তোমরা কার সঙ্গে যোগাযোগ করবে তা নিচে লেখো। (মূল বইয়ের ৮ নম্বর পৃষ্ঠা)
১. তোমার এলাকায় কোনো বাড়িতে আগুন লেগেছে।
যোগাযোগ করব: নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিসে।
২. খেলার মাঠে এক বন্ধু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
যোগাযোগ করব: নিকটস্থ ডাক্তারের দোকানে, হাসপাতালে।
৩. ঝড়ের পরে বিদ্যুতের তার রাস্তায় পড়ে আছে।
যোগাযোগ করব: নিকটস্থ বিদ্যুত অফিসে।
৪. হারিয়ে যাওয়া কোনো শিশুকে খুঁজে পাওয়া গেছে।
যোগাযোগ করব: নিকটস্থ থানায়।
আরো দেখো: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা সকল অধ্যায়ের সমাধান
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, ওপরে দেওয়া Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে তোমার ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ১ম অধ্যায় সমাধান সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post