৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ : নিচে কয়েকটি পরিস্থিতির উল্লেখ আছে। এসব পরিস্থিতিতে তোমার বন্ধু-বান্ধব, পরিবারের লোকজন কিংবা এলাকার মানুষ যেভাবে কথা বলে, তা কথোপথনের মাধ্যমে উপস্থাপন করো: (মূল বইয়ের ৯ নম্বর পৃষ্ঠা)
৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ
পরিস্থিতি-১: খেলার সময়ে কোনো একটা বিষয় নিয়ে তর্ক হচ্ছে।
রাজু: আমি এই আউট মানি না। এইডা কোনো আউট অয় নাই।
আবির: ক্যান? মানবা না ক্যান? ঠিকই তো আছে। তুমি আউট অইছো রাজু।
রাজু: না, তানভীর ঠিক কইরা বল করতে পারে নাই, এর লইগ্যা আমি আউট মানি না।
তানভীর: না রাজু, আমি তো ঠিক কইরাই বল করলাম। তোমার আউট মাইনা লওয়া উচিত।
সজীব: হ রাজু, তোমার এমন করা উচিত না। সবাই যেইডা কয়, সেইডাই মাইনা লওয়া উচিত।
রাজু: না, আমি মানমু না। আমারে আউট দেলে আমি খেলমু না।
পরিস্থিতি-২: পড়াশোনা কেমন চলছে তা নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে কথা হচ্ছে।
বাবা: রাজু, তোমার পড়া-ল্যাহার খবর কী? সবকিছু ঠিকমত চলতাছে তো?
আমি: হ বাবা, আমি ঠিকমত পড়া-ল্যাহা করতাছি। সামনের মাসেই আমাগো স্কুলে পরীক্ষা অইব। আর এইজন্য আমার পড়া-ল্যাহার এহন অনেক চাপ।
মা: হ, আমাগো রাজু ঠিকমতই পড়া-ল্যাহা করে। আশা করি এবছরও ও ক্লাসে ফার্স্ট অইব।
বাবা: এইডা তো খুবই ভালো খবর। রাজু, তুমি যদি এবছরও ফার্স্ট অইতে পারো, তাইলে তোমারে একটা উপহার দিমু।
আমি: সত্যি কইতাছো? তাইলে আমি আরো ভালো কইরা পড়মু।
পরিস্থিতি-৩: সবজি কিনতে গিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দর কষাকষি হচ্ছে।
ক্রেতা: এক কেজি আলুর দাম কত?
সবজি বিক্রেতা: ছার, এক কেজি আলুর দাম ৮০ টাহা।
ক্রেতা: এত ক্যান? এক কেজি আলুর দাম এত টাহা ক্যামনে অয়?
সবজি বিক্রেতা: ছার, এই বছর বন্যায় ম্যালা পানি উঠছে। আর এইজন্য ফলন বেশি ভালো অয় নাই। বাজারে আলুর কমতি আছে। আর এইজন্যই আলুর দাম এহন অনেক বেশি।
ক্রেতা: ও আচ্ছা, তাইলে কি আর করার। আমারে আধা কেজি আলু দেও।
সবজি বিক্রেতা: এই লন ছার। আবার আইয়েন।
উপরের পরিস্থিতিগুলোতে যে ভাষায় কথা বলেছ, নিচের ক্ষেত্রে তা আলাদা কি না, তা নিয়ে আলোচনা করো। (মূল বইয়ের ৯ নম্বর পৃষ্ঠা)
৪ রেডিও-টেলিভিশনে পঠিত সংবাদ ও প্রতিবেদনের ভাষা: রেডিও-টেলিভিশনে পঠিত সংবাদ ও প্রতিবেদনের ভাষা প্রমিত রীতি মেনে বলা হয়। এসব ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ভাষাকে প্রাধান্য দেওয়া হয় না। মূলত সকল শ্রেণির দর্শক ও শ্রোতাদের কাছে সহজবোধ্য করার জন্য প্রচারমাধ্যমগুলোতে প্রমিত ভাষা ব্যবহার করা হয়।
৫. সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনের ভাষা: ভাষা একটি দেশের সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান উপাদান। তাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রমিত এবং আঞ্চলিক ভাষা উভয়েরই প্রয়োগ দেখা যায়। তবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোতে আঞ্চলিক ভাষার প্রয়োগ বেশি হয়ে থাকে। কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের বিষয়স্তু তুলে ধরার জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোতে উক্ত অঞ্চলের ভাষা প্রয়োগকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।
৬. পাঠ্যবইয়ের ভাষা: পাঠ্যবইয়ের ভাষা সর্বদা প্রমিত রীতি মেনে লেখা হয়। কারণ একটি দেশের সকল অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য একই পাঠ্যবই তৈরি করা হয়। আর সকলেই যেন বইয়ের তথ্যগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারে, এজন্য পাঠ্যবইয়ে প্রমিত ভাষা ব্যবহার করা হয়।
প্রথমে দেওয়া পরিস্থিতি তিনটিতে তোমরা এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করেছ, কিংবা কোনো কোনো শব্দের উচ্চারণ এমনভাবে করেছ, যা পরের ক্ষেত্র তিনটির সাথে মেলে না। নিচের ছক অনুযায়ী এমন কিছু শব্দের তালিকা করো। ধরা যাক, “টাকা” শব্দটি তোমরা “টাহা” বলেছ। সেক্ষেত্রে নিচের ছকের বাম কলামে “টাহা” এবং ডান কলামে “টাকা” লিখতে হবে। (মূল বইয়ের ৯ নম্বর পৃষ্ঠা)
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই ছকভিত্তিক উত্তরটি পিডিএফ উত্তরমালায় দেখো। )
আঞ্চলিক ভাষা ও প্রমিত ভাষা
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের ভাষায় ভিন্নতা আছে। যেমন-_যশোর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, সিলেট, নোয়াখালী, চট্টগ্রামের মানুষ একভাবে কথা বলে না। “ছেলে” শব্দটিকে কোনো অঞ্চলের মানুষ বলতে পারে “পুত” কোনো অঞ্চলে “ব্যাটা, কোনো অঞ্চলে “পোলা”।
এভাবে অঞ্চলভেদে অনেক শব্দই বদলে যায়। কখনো কখনো শব্দের উচ্চারণে পার্থক্য ঘটে। যেমন, “ছেলে” শব্দটি উচ্চারিত হতে পারে ‘চেলে বা ‘শেলে”। ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের ভাষার এই রূপভেদকে বলা হয় আঞ্চলিক ভাষা। আঞ্চলিক রূপের জন্য এক অঞ্চলের মানুষের কথা আর এক অঞ্চলের মানুষের বুঝতে সমস্যা হয়। এ কারণে, সব অঞ্চলের মানুষের সহজে বোঝার জন্য ভাষার একটি রূপ নির্দিষ্ট হয়েছে, তাকে প্রমিত ভাষা বলে।
উচ্চারণ ঠিক রেখে ছড়া পড়ি: চিঠি বিলি
মূল বইয়ের ১১ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘চিঠি বিলি’ ছড়াটি সরবে এবং নীরবে পাঠ করো। ছড়াটির লেখক রোকনুজ্জামান খান সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো:
নাম: রোকনুজ্জামান খান।
জন্ম-মৃত্যু: জন্ম: ৯ এপ্রিল, ১৯২৫ (রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায়) – মৃত্যু: ৩ ডিসেম্বর, ১৯৯৯।
পরিচয়: বাংলাদেশের একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক ও সংগঠক। বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত দৈনিক ইত্তেফাকের শিশু-কিশোরদের উপযোগী কচিকাঁচার আসর বিভাগের পরিচালক হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন।
সম্মাননা: শিশু সংগঠনে অসামান্য অবদান রাখায় রোকনুজ্জামান খান ২০০০ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৮), শিশু একাডেমী পুরস্কার (১৯৯৪), একুশে পদক (১৯৯৮), জসিমউদ্দীন স্বর্ণপদক এ ভূষিত হন।
শব্দ খুঁজি
অনেক শব্দ তোমার অঞ্চলের মানুষ ভিন্নভাবে উচ্চারণ করে। আবার, অনেক প্রমিত শব্দের অঞ্চলের মানুষ আলাদা শব্দ ব্যবহার করে। এ রকম শব্দ খুঁজে বের করো এবং নিচের ছক করো। (মূল বইয়ের ১২ নম্বর পৃষ্ঠা)
আফনে – আপনে
মুরহা – মুরগি
বিলই/বিলাই – বিড়াল
নাহইল – নারিকেল
সফরি/গইয়া – পেয়ারা
উশ্যি – শিম
চান – চাঁদ
ওশ্যাঘর – রান্নাঘর
আইজ – আজ
পুত/ফুয়া/ছাওয়াল – ছেলে
শালুন – তরকারি
রাইত – রাত
ম্যালা – অনেক
পুস্কুনি – পুকুর
প্রমিত ভাষার চর্চা করি
এই পরিচ্ছেদ শুরুর পরিস্থিতি তিনটিতে যেভাবে কথোপকথন হয়েছে, সেই কথাগুলো এবার প্রমিত ভাষায় বলার চেষ্টা করো। (মূল বইয়ের ১৩ নম্বর পৃষ্ঠা)
পরিস্থিতি-১: খেলার সময়ে কোনো একটা বিষয় নিয়ে তর্ক হচ্ছে।
রাজু: আমি এই আউট মানি না। এটা কোনো আউট হয়নি।
আবির: কেন? মানবে না কেন? ঠিকই তো আছে। তুমি আউট হয়েছো রাজু।
রাজু: না, তানভীর ঠিক করে বল করতে পারেনি, এ জন্য আমি আউট মানি না।
তানভীর: না রাজু, আমি তো ঠিক করেই বল করলাম। তোমার আউট মেনে নেওয়া উচিত।
সজীব: হ্যাঁ, রাজু, তোমার এমন করা উচিত না। সবাই যেটা বলে, সেটাই মেনে নেওয়া উচিত।
রাজু: না, আমি মানব না। আমাকে আউট দিলে আমি খেলব না।
পরিস্থিতি-২: পড়াশোনা কেমন চলছে তা নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে কথা হচ্ছে।
বাবা: রাজু, তোমার পড়ালেখার খবর কী? সবকিছু ঠিকমত চলছে তো?
আমি: হ্যাঁ বাবা। আমি ঠিকমত পড়ালেখা করছি। সামনের মাসেই আমাদের স্কুলে পরীক্ষা হবে। আর এজন্য আমার পড়ালেখার এখন অনেক চাপ।
মা: হ্যাঁ, আমাদের রাজু ঠিকমতই পড়ালেখা করে। আশা করি এবছরও ও ক্লাসে ফার্স্ট হবে।
বাবা: এটা তো খুবই ভালো খবর। রাজু, তুমি যদি এবছরও ফার্স্ট হতে পারো, তাহলে তোমাকে একটা উপহার দেব।
আমি: সত্যি বলছো? তাহলে আমি আরো ভালো করে পড়ব।
পরিস্থিতি-৩: সবজি কিনতে গিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দর কষাকষি হচ্ছে।
ক্রেতা: এক কেজি আলুর দাম কত?
সবজি বিক্রেতা: স্যার, এক কেজি আলুর দাম ৮০ টাকা।
ক্রেতা: এত কেন? এক কেজি আলুর দাম এত টাকা কীভাবে হয়?
সবজি বিক্রেতা: স্যার, এ বছর বন্যায় অনেক পানি উঠেছে। আর এজন্য ফলন বেশি ভালো হয়নি। বাজারে আলুর কমতি আছে। আর এজন্যই আলুর দাম এখন অনেক বেশি।
ক্রেতা: ও আচ্ছা, তাহলে কি আর করার। আমাকে আধাকেজি আলু দাও।
সবজি বিক্রেতা: এই নিন স্যার। আবার আসবেন।
আরো দেখো: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা সকল অধ্যায়ের সমাধান
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, ওপরে দেওয়া Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে তোমার ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post