৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ : দৈনন্দিন প্রয়োজনে কথা বলার ক্ষেত্রে শব্দ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তবে শব্দের শুধু একটি অর্থ নয়, একই শব্দের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ রয়েছে যা ভাষার বৈচিত্র্য বৃদ্ধি করে।
ফলে একটি শব্দের একাধিক ভিন্ন অর্থ ব্যবহার করে আমরা খুব সহজেই বিভিন্নভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি। যেমন : কাজ শব্দটি আমরা কর্ম হিসেবে যেমন ব্যবহার করতে পারি তেমনই সমাধান হিসেবেও ব্যবহার করতে পারি।
৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ
আবার বড়ো শব্দটি দ্বারা বৃহৎ যেমন বোঝায় তেমনই উদারতাও বোঝায়। এভাবে মাথা, হাত, কাঁচা, চোখ, কান, পাকা, শেষ ইত্যাদি শব্দের রয়েছে একাধিক ভিন্ন অর্থ। আবার একটি শব্দকে একাধিক প্রতিশব্দ দিয়ে প্রকাশ করা যায়।
যেমন: আগুন শব্দটিকে অগ্নি, অনল শব্দ দিয়ে প্রকাশ করা যায়। আবার সমুদ্র শব্দটি সাগর, সিন্ধু, পাথার প্রভৃতি শব্দ দিয়ে প্রকাশ করা যায়। এভাবে কন্যা, আকাশ, পানি, পর্বত, নদী, সাপ, বাবা ইত্যাদি শব্দকে একাধিক প্রতিশব্দ দিয়ে প্রকাশ করা যায়।
শব্দের এমন ব্যবহারে ভাষার মাধুর্য বৃদ্ধি পায়। আবার একটি শব্দের বিপরীত শব্দও রয়েছে। যেমন : গরম শব্দের বিপরীত শব্দ ঠান্ডা, ভালো শব্দের বিপরীত শব্দ মন্দ। এভাবে কাঁচা, চালাক প্রতিশব্দের বিপরীত অর্থ রয়েছে।
কাজ-১ : নিচের কবিতাংশ থেকে দিন, কালো, মেঘ, আকাশ, পৃথিবী, ছেলে, রাত শব্দগুলোর দুটি করে প্রতিশব্দ লেখো।
বর্ষার কবিতা
সুকুমার রায়
কাগজ কলম লয়ে বসিয়াছি সদ্য,
আষাঢ়ে লিখিতে হবে বরষার পদ্য।
কি যে লিখি কি যে লিখি ভাবিয়া না পাই রে,
হতাশে বসিয়া তাই চেয়ে থাকি বাইরে।
সারাদিন ঘনঘটা কালো মেঘ আকাশে,
ভিজে ভিজে পৃথিবীর মুখখানা ফ্যাকাশে।
বিনা কাজে ঘরে বাঁধা কেটে যায় বেলাটা,
মাটি হল ছেলেদের ফুটবল খেলাটা
আপিসের বাবুদের মুখে নাই ফুর্তি,
ছাতা কাঁধে জুতা হাতে ভ্যাবাচ্যাকা মূর্তি।
কোনখানে হাঁটু জল, কোথা ঘন কদম-
চলিতে পিছল পথে পড়ে লোকে হরদম।
ব্যাঙেদের মহাসভা আহ্লাদে গদ্গদ্,
গান করে সারারাত অতিশয় বদ্খদ্।
উত্তর:
দিন – দিবস, দিবা।
কালো – অন্ধকার, কৃষ্ণ।
মেঘ – জলদ, জলধর।
আকাশ – গগন, আসমান।
পৃথিবী – দুনিয়া, জগৎ।
ছেলে – পুত্র, তনয়।
রাত – নিশি, রজনি।
কাজ-২ : উপরের কবিতাংশ থেকে মুখ, কাজ, বেলা, মাটি, বাবু, মূর্তি শব্দগুলোর একটি করে মুখ্য অর্থ ও গৌণ অর্থ লেখো।
উত্তর:
মুখ
মুখ্য অর্থ (অঙ্গবিশেষ) : আমরা মুখ দিয়ে আহার করি।
গৌণ অর্থ (দিক) : পথের এই মুখ দিয়ে যাওয়াই ভালো।
কাজ
মুখ্য অর্থ (কর্ম) : কাজকর্ম না থাকলে ভালো লাগে না।
গৌণ অর্থ (উদ্দেশ) : তোমার কাজের নাগাল পাওয়া খুব কঠিন।
বেলা
মুখ্য অর্থ (সময়) : সন্ধ্যাবেলায় পৌঁছতে পারলেই বাঁচি।
গৌণ অর্থ (পার্থক্য) : তোমার বেলায় এরকম কথা হবে কেন?
মাটি
মুখ্য অর্থ (মৃত্তিকা) : এই মাটিই আমার একমাত্র অবলম্বন।
গৌণ অর্থ (অনর্থ) : লোকটা আমার সব কাজ মাটি করে দিল।
বাবু
মুখ্য অর্থ (বিলাসিতা) : বাবু হয়ে ঘুরে বেড়ালে কাজ হবে না।
গৌণ অর্থ (সন্তান) মূর্তি : তোমার বাবুটা কেমন আছে?
মূর্তি
মুখ্য অর্থ (প্রতিমা) : কুমোরবাড়ি মূর্তি গড়তে দেওয়া হয়েছে।
গৌণ অর্থ (রোষ) : তার অগ্নিমূর্তি দেখে আমি ভয় পেয়ে গেলাম।
কাজ-৭ : সমার্থক শব্দ লেখো।
উত্তর:
শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিষয়ক সমার্থক শব্দ :
৪. গাল : কপোল, গ-দেশ।
৫. চুল : অলক, কুন্তল, কেশ।
৬. চোখ : অক্ষি, আঁখি, নয়ন, নেত্র, লোচন।
১৩. হাত : কর, পাণি, বাহু, ভুজ, হস্ত।
প্রাকৃতিক বস্তু বিষয়ক সমার্থক শব্দ :
অগ্নি : অনল, আগুন, দহন, পাবক, বহ্নি, বৈশ্বানর, শিখা, সর্বভুক, হুতাশন।
আকাশ : অনন্ত, অন্তরিক্ষ, অম্বর, আসমান, গগন, নভঃ, ব্যোম, শূন্য।
কন্যা : আত্মজা, তনয়া, দুহিতা, নন্দিনী, সুতা।
জল : অম্বু, জীবন, নীর, পানি, বারি, সলিল।
নারী : অবলা, কামিনী, বামা, ভামিনী, মহিলা, রমণী, স্ত্রী, ললনা, স্ত্রীলোক।
পর্বত : অচল, অদ্রি, গিরি, নগ, পাহাড়, ভূধর, মহীধর, শৈল, শৃঙ্গধর।
পুষ্প : কুসুম, ফুল, প্রসূন।
পৃথিবী : অবনী, জগৎ, ধরণি, ধরা, ধরিত্রী, বসুধা, বসুন্ধরা, বসুমতী, দুনিয়া।
বাতাস : অনিল, গন্ধবহ, পবন, প্রভঞ্জন, বায়ু, মরুৎ, সমীর, সমীরণ, হাওয়া।
ভ্রমর : অলি, ভৃংগ, মধুকর, মধুপ, শিলিমুখ।
আরো দেখো: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা সকল অধ্যায়ের সমাধান
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, ওপরে দেওয়া Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে তোমার ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post