৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ নমুনা ২ : পারুল ফোন করে জানাল, তার প্রিয় একটা বই হারিয়ে গেছে। সেটি টেবিলের উপরে রাখা ছিল। শাহেদ সেখান থেকে বইটা নিয়েছে বলে তার সন্দেহ হয়।
তবে ঠিক কে নিয়েছে, পারুল সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয়। সন্দেহের তালিকায় মিনু আর চিনুর নামও আছে। পারুলের ধারণা, ওরাও বইটা নিতে পারে। সব শুনে আমি বললাম, কোনো ব্যাপারে নিশ্চিত না হয়ে কাউকে দোষ দেওয়া ঠিক নয়। যে নিয়েছে, সে হয়তো পড়ার জন্যই নিয়েছে।
৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ নমুনা ২
কয়েক দিন অপেক্ষা করে দেখো, বইটা পাওয়া যায় কি না! কিছু দিন পরে পারুল নিজেই জানাল, বইটা পাওয়া গেছে। পারুলের বাবা বইটা বুকশেলফে তুলে রেখেছিলেন। তিনি বুঝতেও পারেননি, এক বই নিয়ে এত ঘটনা ঘটে যাবে। আর পারুলও না বুঝে অন্যদের দোষ দিচ্ছিল!
উপরের নমুনা থেকে বিশেষ্যের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে এমন শব্দ খুঁজে বের করো এবং নিচের খালি জায়গায় লেখো: (মূল বইয়ের ২৩ নম্বর পৃষ্ঠা)
উত্তর: তার, সেটি, সেখান, ওরাও, কাউকে, যে, তিনি।
সর্বনাম (মূল বই থেকে)
বিশেষ্যের পরিবর্তে ব্যবহৃত শব্দকে সর্বনাম বলে। বাক্যের মধ্যে বিশেষ্য যে ভূমিকা পালন করে, সর্বনাম অনুরূপ ভূমিকা পালন করে। যেমন: শিমুল মনোযোগের সঙ্গে পড়াশোনা করত। তাই সে পরীক্ষায় ভালো করেছে। দ্বিতীয় বাক্যের ‘সে’ প্রথম বাক্যের ‘শিমুল’-এর পরিবর্তে বসেছে।
১. সর্বনাম কাকে বলে?
উত্তর: বিশেষ্যের পরিবর্তে যে পদ ব্যবহৃত হয় তাকে সর্বনাম পদ বলে। বাক্যে আমরা কোনো কিছুর নোমর পরিবর্তে যে শব্দগুলো ব্যবহার করি, তাই সর্বনাম। যেমন- তুমি, তোমার, তোমাকে, তুই, তোর, তোকে, আপনি, আপনার, আপনোক ইত্যাদি।
২. সর্বনাম পদের উদাহরণ আলোচনা করো।
উত্তর: নিচে সর্বনাম পদের উদাহরণ আলোচনা করা হলো:
বর্ষা সকালবেলা পড়াশোনা করে। বর্ষা দুপুরবেলায় স্কুলে যায়। বর্ষা বিকালবেলায় টেনিস খেলে। বর্ষা সন্ধ্যাবেলা পড়তে বসে।
উপরে কথিত বাক্যগুলোতে ‘বর্ষা’ শব্দটি চারবার ব্যবহৃত হয়েছে। তার ফলে একটা একঘেঁয়েমি এসেছে তাই বাক্যগুলিকে যদি এইভাবে লেখা যায়-
বর্ষা সকালবেলায় পড়াশোনা করে। সে দুপুরবেলায় স্কুলে যায়। সে বিকালে টেনিস খেলে। সে সন্ধ্যেবেলা পড়তে বসে।
এখানে ‘বর্ষা’ শব্দের পরিবর্তে ‘সে’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। তাই ‘সে’ শব্দটি সর্বনাম পদ।
৩. বিভিন্ন প্রকার সর্বনাম পদ সংজ্ঞা ও উদাহরণসহ লেখো।
উত্তর: নিচে বিভিন্ন প্রকার সর্বনাম পদ সংজ্ঞা ও উদাহরণসহ আলোচনা করা হলো:
১. সাপেক্ষ সর্বনাম: তিনি, সে. উনি, তাহাকে, তাঁহাকে, তাহাদের, তাহার, তাঁহার, এটি, এইটি প্রভৃতি শব্দগুলি বিশেষ্য পদের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়। এদের প্রকৃত অর্থ বোঝাবার জন্য বিশেষ্য পদের অপেক্ষা করতে হয়। আর এ কারণেই এদের সাপেক্ষ সর্বনাম পদ বলা হয়।
২. নিরপেক্ষ সর্বনাম: তুমি, আপনি, আমি, আমরা প্রভৃতি শব্দগুলি কোনো বিশেষ নাম নয়। কিন্তু কোনো না কোনো ব্যক্তির পরিবর্তে বাসে বলে এগুলিও সর্বনাম। এরা বিশেষ্য পদের অপেক্ষা না রেখেই বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে বলে এরা নিরপেক্ষ সর্বনাম পদ।
৩. ব্যক্তিবাচক সর্বনাম: আমি, তুমি, সে আমাদের প্রভৃতি শব্দগুলি কোনো না কোনো ব্যক্তির পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই এরা ব্যক্তিবাচক সর্বনাম।
৪. নির্দেশক সর্বনাম: ইনি, উনি, এটি, সেটি, ওটা, এই, ওই প্রভৃতি শব্দগুলি কোনো না কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে নির্দেশ করে। তাই এদের নির্দেশক সর্বনাম বলে।
৫. অনির্দেশক সর্বনাম: কেউ, কেহ, কেউ কেউ প্রভৃতি শব্দগুলি কোনো নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশ করে না। তাই এদের অনির্দেশক সর্বনাম বলে।
৬. প্রশ্নবাচক সর্বনাম: কে, কী কোনো, কারা প্রভৃতি শব্দগুলির দ্বারা কোনো প্রশ্ন করা যায়-তাই এগুলি প্রশ্নবাচক সর্বনাম।
৭. আত্মবাচক সর্বনাম: নিজে নিজে, স্বয়ং আপনি প্রভৃতি শব্দগুলির দ্বারা কোনো ব্যক্তি নিজেকে প্রকাশ করে সে কারণেই এগুলিকে আত্মবাচক সর্বনাম বলে।
৮. সম্বন্ধসূচক সর্বনাম: তাঁর, তাঁহার, নিজের প্রভৃতি শব্দগুলির দ্বারা অন্য পদের সঙ্গে সম্বন্ধ প্রকাশ করে এ কারণেই এদের সম্বন্ধসূচক সর্বনাম বলে।
৯. সমষ্টিবাচক সর্বনাম: সকলের, সকলে, সমস্ত উভয়, উভয়কে প্রভৃতি শব্দের দ্বারা সকল বা সমস্ত বোঝায়। তাই এদের সমষ্টিবাচক সর্বনাম বলে।
পাঠ থেকে সর্বনাম খুঁজি
“চিঠি বিলি ছড়া ও “সুখী মানুষ’ নাটক থেকে সর্বনাম শব্দ খুঁজে বের করে তার একটি তালিকা তৈরি করো: (মূল বইয়ের ২৪ নম্বর পৃষ্ঠা)
- ‘চিঠি বিলি’ থেকে পাওয়া: সে, তার।
- ‘সুখি মানুষ’ থেকে পাওয়া: তোমার, আপনি, তার, সেই, তোমরা, যা, তাই।
অনুচ্ছেদ লিখে সর্বনাম খুঁজি
কোনো একটি বিষয় নিয়ে ১০০ শব্দের মধ্যে একটি অনুচ্ছেদ লেখো। লেখা হয়ে গেলে সর্বনাম শব্দগুলোর নিচে দাগ দাও: (মূল বইয়ের ২৪ নম্বর পৃষ্ঠা)
স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি আমাদের জাতির পিতা। তাঁর জীবনাদর্শে আমরা সংগ্রামী চেতনা ও কর্মনিষ্ঠার পরিচয় পাই। তিনি ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা শেখ লুৎফর রহমান এবং মা সায়েরা খাতুন। টুঙ্গিপাড়া গ্রামে প্রকৃতির নিবিড় আশ্রয়ে জল-মাটি-কাদায় হেসে-খেলে শৈশব কাটে তাঁর। বাড়ির সবাই তাঁকে খোকা নোম ডাকত। ছোটোবেলা থেকে শেখ মুজিবের মধ্যে দরিদ্র-বঞ্চিতদের জন্য ভালোবাসার প্রকাশ দেখা যায়। উঁচু ক্লাসে এসে তাঁর প্রতিবাদী চেতনার পরিচয়ও মেলে। একবার অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও মন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল পরিদর্শনে আসেন। সবার হয়ে স্কুলের দাবিদাওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি। তাঁর জোরালো বক্তব্য স্কুলটির সমস্যা নিরসনে সাহায্য করে। ছোটোবেলা থেকে তাঁর মধ্যে সুস্পষ্ট প্রতিবাদী ব্যক্তিত্বের পরিচয় পাওয়া যায়।
আরো দেখো: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা সকল অধ্যায়ের সমাধান
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, ওপরে দেওয়া Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে তোমার ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ নমুনা ২ সমাধান সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post