৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ৭ম অধ্যায় : সময়ের সাথে মানুষের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহারের পরিবর্তন অনুসন্ধান। সালমা বলল আচ্ছা আপা, এসব সম্পদের ব্যবহার তো মানবসভ্যতার শুরু থেকেই হয়ে আসছে তাই না! তখনও কি মানুষ আমাদের মতো করেই প্রকৃতিকে ব্যবহার করেছে?
খুশি আপা বললেন, খুব ভালো প্রশ্ন সালমা, চলো তাহলে আমরা খুঁজে বের করি প্রাচীন সভ্যতার মানুষ কীভাবে প্রাকৃতিক সম্পদকে ব্যবহার করেছে। মিলি বলল, আপা এই অনুসন্ধান কাজে তো আমরা আমাদের যষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের অনুসন্ধানী পাঠ এর সাহায্য নিতে পারব তাই না? রনি বলল, এছাড়া ইন্টারনেটের সাহায্যও নিতে পারি।
৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ৭ম অধ্যায়
খুশি আপা বললেন, নিশ্চয়। তখন ওরা দলে ভাগ হয়ে প্রত্যেক দল একটি করে সভ্যতা বেছে নিলো এবং সেই সভ্যতার মানুষ কী কী এবং কীভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ কে ব্যবহার করেছে সেটি অনুসন্ধান করে বের করল। কাজটি শেষ হলে রনি বলল, আপা আমরা যা অনুসন্ধান করে পেয়েছি তা যদি মানচিত্রে বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে উপস্থাপন করি তাহলে কেমন হবে?
মিলি বলল, হ্য আমরা তো জানি পৃথিবীতে কোথায় কোন সভ্যতা ছিল। খুশি আপা বললেন, এতো খুবই ভালো প্রস্তাব। তখন ওরা ওদের প্রাপ্ত তথ্য হতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদকে ভিন্ন ভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে বিশ্ব মানচিত্রে উপস্থাপন করল।
কাজটি শেষ হলে খুশি আপা বললেন, আমরা তো দেখলাম প্রাচীন মানুষরা তাদের প্রয়োজনে কীভাবে প্রকৃতিকে ব্যবহার করেছে। আমরাও তো প্রতিনিয়ত আমাদের প্রয়োজনে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করে চলেছি তাই না? রনি বলল, হ্যাঁ আপা কিন্তু কতটুকু ব্যবহার করছি তা বুঝতে পারছি না। তখন খুশি আপা বললেন, বেশ তাহলে চলো এটা বের করার জন্য আমরা একটা মজার কাজ করি।
আমরা আমাদের প্রতিদিন কে ৩টি ভাগে ভাগ করি। যেখানে সকাল দুপুর ও রাত এ আমরা আমাদের প্রয়োজনে কীভাবে প্রকৃতিকে ব্যবহার করছি তা লিখে ফেলি। মামুন বলল যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা পানি খাই, পানি তো একটি প্রাকৃতিক সম্পদ তাই না! রনি বলল, শুধু কি তাই আমরা রাতে ঘুমাতে যায় যে খাটে সেটাও তৈরি হয়েছে প্রকৃকির সম্পদ গাছ ব্যবহার করে অথবা লোহা কে ব্যবহার করে তাই না! খুশি আপা বললেন, একদম ঠিক খরেছ তোমরা। চলো তাহলে কাজটি করে ফেলি।
আমাদের জীবনে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার
আমরা আমাদের প্রতিদিনকে ৩টি ভাগে ভাগ করি। সকাল, দুপুর ও রাতে আমরা আমাদের প্রয়োজনে কীভাবে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার করি, তা নিচের ছকে লিখি: (মূল বইয়ের ১৩৮ নম্বর পৃষ্ঠা)
১. সকাল: সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা পানি দিয়ে পরিস্কার হই। এই পানি প্রকৃতি থেকে আসে। সকালে আমরা নাস্তা হিসেবে ভাত, ডাল, তরকারি, রুটি, ডিমভাজি ইত্যাদি খেয়ে থাকি। এসব খাবারের কাঁচামাল প্রকৃতি থেকে আসে।
২. দুপুর: দুপুরে আমরা পুকুরের পানিতে গোসল করি। এ পানি বৃষ্টি থেকে আসে। অনেকে নলকূপের পানি দিয়েও গোসল করি। যা আমরা প্রকৃতি থেকে পাই। দুপুরে খাবার জন্য আমরা যেসব খাদ্যগুলো আমরা গ্রহণ করি, তার কাঁচামাল প্রকৃতি থেকেই সংগ্রহ করতে হয়।
৩. রাত: সকাল ও দুপুরের মত রাতেও আমাদের খাবার গ্রহণ করতে হয়। এসব খাবারের কাঁচামাল আমরা প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করি। রাতে ঘর আলোকিত করতে আমরা যে বিদ্যুৎ চালিত বাল্ব জ্বালাই, ঘুমানোর সময় বৈদ্যুতিক ফ্যান চালাই। এসব বৈদ্যুতিক যন্ত্রসমূহ চালাতে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। আর এ বিদ্যুৎ প্রাকৃতিক বিভিন্ন শক্তি যেমন- পানির স্রোত, সূর্যের তাপ, বায়ুপ্রবাহ এবং তেল ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন হয়।
কাজটি শেষ হওয়ার পর সুমন বলল, আপা সেই মানব সভ্যতা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের প্রয়োজনে প্রকৃতিকে ব্যবহার করে চলেছি। রনি বলল, পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে, সেই সাথে তো প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের মাত্রা ও বাড়ছে তাই না! মিলি বলল, আর এটার প্রভাব আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে ও তো পড়ছে তাই না!
টেকসই উন্নয়ন ও আমাদের ভূমিকা
ভূপৃষ্ঠের সুপেয় পানি সম্পদ
চরম পানি সংকটপূর্ণ দেশ
পানির সমস্যা হতে যাচ্ছে যে যে দেশে
পর্যাপ্ত পানি আছে
প্রচুর পানি আছে
উদ্ধৃত্ত পানি আছে
itihas o samajik biggan class 7 chapter 7
৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ৭ম অধ্যায়
৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ৭ম অধ্যায় সমাধান
৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ৭ম অধ্যায় সমাধান
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ৭ম শ্রেণি ৭ম অধ্যায়
সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ৭ম অধ্যায়
খুশি আপা বললেন, তাহলে চলো সময়ের সাথে মানুষের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের যে পরিবর্তন তা আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর কী কী প্রভাব ফেলছে তা দলে আলোচনা করে খুঁজে বের করি। তখন ওরা দলে ভাগ হয়ে মানুষের সম্পদের ব্যবহারের মাত্রার সাথে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব আলোচনা করে খুঁজে বের করল এবং ক্লাসে সবার সামনে তা উপস্থাপন করল।
ভূপৃষ্ঠের সুপেয় পানি সম্পদ
পৃথিবী ও বাংলাদেশে সুপেয় পানির অবস্থা সালমা বলল আপা আমাদের বেঁচে থাকতে যেসব উপাদান লাগে সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে পানি। পৃথিবীতে তো অনেক পানি, তাহলে তো আমরা পানির সমস্যায় কখনও পড়বো না তাই! মিলি বলল, হ্যী পানি আছে তবে সুপেয় পানি খুব বেশি নেই।
খুশি আপা বললেন, ঠিক বলেছ তোমরা। চলো এখন আমরা একটা মজার কাজ করি। প্রথমে আমরা একটি পৃথিবীর মানচিত্র দেখে পৃথিবীর মহাদেশগুলোর মধ্যে কোন কোন দেশে সুপেয় পানির প্রাচুর্য্য আছে এবং কোথায় কোথায় স্বল্পতা আছে তা খুঁজে বের করব এবং পরে নিচের ছকে গ্লোবের সাহায্যে মহাদেশ অনুযায়ী দেশগুলোর নাম লিখে ছকটি পূরণ করব।
পৃথিবীর মহাদেশগুলোর মধ্যে কোন কোন দেশে সুপেয় পানির প্রাচুর্য আছে এবং কোথায় কোথায় স্বল্পতা আছে তা খুঁজে বের করব এবং নিচের ছকে মহাদেশ অনুযায়ী সেসব দেশের নাম লিখব: (মূল বইয়ের ১৪০ নম্বর পৃষ্ঠা)
চরম পানি সংকটপূর্ণ দেশ: সৌদি আরব, সিরিয়া, মিশর, ইয়েমেন, লিবিয়া, এবং পাকিস্তান।
সংকট পূর্ণ দেশ: বাংলাদেশ, ইরাক, হাইতি, আজারবাইজান, তুর্কমেনিস্তান, এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
পানির সমস্যা হতে যাচ্ছে যে যে দেশে: ভারত, চীন, আফগানিস্তান, ইরান, ইউক্রেন, এবং জার্মানি।
পর্যাপ্ত পানি আছে: জাপান, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ইংল্যান্ড, নাইজেরিয়া এবং থাইল্যান্ড।
প্রচুর পানি আছে: নেপাল, ভূটান, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কম্বোডিয়া এবং মঙ্গোলিয়া।
উদ্ধৃত্ত পানি আছে: মিয়ানমার, ব্রাজিল, রাশিয়া, মালয়েশিয়া, নরওয়ে এবং সুইডেন।
ব-দ্বীপের গড়ে ওঠা
কাজটি শেষ করার পর শিহান বলল কি সর্বনাশ, বাংলাদেশে তো পানিসম্পদের অবস্থা খুবই খারাপ দিকে চলেছে। খুশি আপা বললেন, ঠিকই বলেছ শিহান। আমরা সতিই খুব বিপদের মাঝেই আছি। মিলি বলল, কিন্তু আপা আমাদের দেশ তো নদীমাতৃক দেশ। তাহলে আমরা কেন পানির অভাবে আছি?
আনুচিং বলল আপা আমরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে জেনেছিলাম বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ যা গঠিত হয় নদীর দ্বারা, তাহলে তো আমাদের পানির প্রাচুর্য থাকার কথা ছিল কিন্তু তা না হয়ে সংকটপূর্ণ হয়ে গেল কেন? খুশি আপা বললেন, তোমাদের সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য আমাদের আগে জানতে হবে কীভাবে বদ্বীপ গঠিত হয়! চলো আমরা কিছু কাজের মাধ্যমে দেখে নিই কীভাবে বদ্বীপ গড়ে ওঠে এবং বাংলাদেশ নামক বদ্বীপ কী কী সমস্যায় পড়তে চলেছে।
মিলি বলল, এখন বুঝতে পারলাম আপা এভাবে নদীর দ্বারা পলি এসে জমে জমেই বাংলাদেশ নামক বদ্বীপের জন্ম হয়েছে। খুশি আপা বললেন, ঠিক তাই মিলি। তবে এটা তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া কিন্তু অনেক দিন ধরেই চলতে থাকে। চলো এখন আমরা আমাদের বাংলাদেশ নামক বদ্বীপের একটি মানচিত্র দেখে এই বদ্বীপে প্রবেশ করা নদীগুলো খুঁজে বের করি এবং এই নদীগুলো কোন কোন দেশের মধ্য দিয়ে এসেছে তা খুঁজে বের করে লিখে ফেলি।
বাংলাদেশের কতিপয় নদী
বাংলাদেশের এমন কিছু নদী যার উৎপত্তি বাংলাদেশে নয়; অন্য দেশ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এমন নদীগুলোর তালিকা: (মূল বইয়ের ১৪৩ নম্বর পৃষ্ঠা)
১. ব্রহ্মপুত্র – চীন, ভারত
২. পদ্মা – ভারত
৩. মেঘনা – ভারত
৪. যমুনা – তিব্বত
৫. তিস্তা – ভারত
৬. কর্ণফুলি – ভারত
৭. মহানন্দা – ভারত
সবার কাজ শেষ হলে খুশি আপা সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বললেন, তোমরা সবাই খুব সুন্দর করে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা নদীগুলো খুঁজে বের করেছ। শিহান বলল আপা আমার ভাবতেই অবাক লাগছে একই নদীর পানি কিন্তু আমরা কতগুলো দেশের মানুষ সেটা ব্যবহার করছি। খুশি আপা বললেন, ঠিক শিহান এখন ভাবো তো যদি এই নদীগুলোর ওপর বাধ দিয়ে দেওয়া হয় তাহলে কেমন হবে?
শফিক বলল আপা তাহলে তো আমাদের অনেক রকম সমস্যা হতে পারে। কারণ আমাদের দেশের অবস্থান বদ্বীপের নিচের দিকে আর উজান বা ওপরের দিকে যদি বীধ দেওয়া হয়, তাহলে তো আমাদের দেশের নদীগুলো ঠিকমতো পানি পাবে না। মিলি বলল, কিন্তু রনি কর্ণফুলি নদীর ওপর বীধ দিয়ে তো জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও তৈরি করা হয়েছে এবং জন্ম হয়েছে কাপ্তাই হৃদের। খুশি আপা বললেন, তোমাদের দুজনেরই কথা সঠিক।
আরো দেখো: ৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান সবগুলো অধ্যায়ের সমাধান
উপরে দেওয়া ‘উত্তরমালা’ অপশনে ক্লিক করে ৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ৭ম অধ্যায় সমাধান সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post