৭ম শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ : যতিচিহ্নকে বিরাম চিহ্নও বলা হয়।বিরাম অর্থ থামা বা বিশ্রাম নেয়া। আমরা এক নাগাড়ে বিরতিহীনভাবে পড়তে পারি না। আবার কোনো কিছু একটানা পড়া সম্ভবও নয়।এজন্য বাক্যের মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী থামার সংকেত প্রদান করে যেসব সাংকেতিক চিহ্ন, তাদের যতিচিহ্ন বলে।সহজভাবে বললে দাড়ি(।), কমা(,),হাইফেন (-),সেমিকোলন (;) ইত্যাদি যতিচিহ্ন। এরা বাক্যের অন্তর্নিহিত ভাব বুঝতেও সাহায্য করে। যেমন, কোনো বাক্যে আবেগসূচক চিহ্ন দ্বারা ঐ বাক্যের অন্তর্নিহিত ভাব বোঝা যাবে। উদাহরণস্বরূপঃ বাহ! কি চমৎকার কবিতা।
৭ম শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ
নিচের খালি ঘরগুলোতে যথাযথ বিরামচিহ্ন বসাও: (মূল বইয়ের ৫০ নম্বর পৃষ্ঠা)
১. এক দেশে ছিল এক রাজা।
২. লোকটিকে মুদি দোকান থেকে চাল, ডাল, ডিম আর আলু কিনতে দেখলাম।
৩. পারুল গল্প লেখে, আমি কবিতা লিখি।
৪. আপনি কখন এলেন?
৫. বলো কী! এই কলমের দাম একশ টাকা?
৬. ভালো-মন্দ নিয়েই আমাদের সমাজ।
৭. আমার বড়ো চাচা; যিনি মালয়েশিয়ায় ছিলেন, গতকাল বাড়ি ফিরেছেন।
৮. প্রমিত ভাষার দুই রূপ; কথ্য ও লেখ্য।
৯. মা বললেন, ‘তুমি দাঁড়াও, আমি আসছি’।
বুঝতে চেষ্টা করি
সহপাঠিদের সাথে আলোচনা করে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করো: (মূল বইয়ের ৫০ নম্বর পৃষ্ঠা)
১. যতিচিহ্ন কেন ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: বাক্যের অর্থ সুস্পষ্টভাবে বোঝার জন্য বাক্যের বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনীয় যতিচিহ্ন ব্যবহার করা হয়।
২. মুখের ভাষায় যতিচিহ্ন লাগে না কেন?
উত্তর: মানুষ যখন কথা বলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই সে প্রয়োজনীয় স্থানগুলোতে বিরাম নেয়। তাই মুখের ভাষায় যতিচিহ্নের প্রয়োজন নেই।
৩. লেখার ভাষায় যতিচিহ্ন কেন দিতে হয়?
উত্তর: লেখক কী লিখেছেন তা স্পষ্টাভাবে বোঝার জন্য লেখার ভাষায় যতিচিহ্ন দিতে হয়।
৪. বাক্যের শেষে কোন কোন যতিচিহ্ন বসে?
উত্তর: বাক্যের শ্রেণি অনুযায়ী বাক্যের শেষে বিভিন্ন প্রকার যতিচিহ্ন বসে। যেমন-
ক. বিবৃতিমূলক বাক্যের শেষে (।) দাঁড়ি যতিচিহ্ন বসে।
খ. প্রশ্নবোধাক বাক্যের শেষে (?) জিজ্ঞাসা যতিচিহ্ন বসে।
গ. আশ্চর্যবোধক বাক্যের শেষে (!) আবেগসূচক যতিচিহ্ন বসে।
৫. বাক্যের ভেতরে কোন কোন যতিচিহ্ন বসে?
উত্তর: বাক্যের ভেতরে বিভিন্ন প্রকার যতিচিহ্ন বসে। যেমন- কমা (,), কোলন (:), সেমি-কোলন (;), হাইফেন (-), ড্যাশ (—), উদ্ধারচিহ্ন (‘’), বিন্দু (.) ইত্যাদি।
কোথায় কোন যতিচিহ্ন বসে
১. আবেগ শব্দ ও আবেগবাচক বাক্যের শেষে- বিস্ময়চিহ্ন (!)
২. উদাহরণ দেওয়ার আগে- কোলন (:)
৩. এক ধরনের কয়েকটি শব্দ পরপর থাকলে- কমা (,)
৪. একজোড়া শব্দের মাঝখানে- হাইফেন (-)
৫. দুটি বাক্য এক করতে- ড্যাশ (—)
৬. নাটকের সংলাপে চরিত্রের নামের পরে- কোলন (:)
৭. পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি বাক্যের মাঝে- সেমিকোলন (;)
৮. প্রশ্নবাচক বাক্যের শেষে- প্রশ্নচিহ্ন (?)
৯. বইয়ের নামে- উদ্ধারচিহ্ন (‘’)
১০. বক্তার সরাসরি কথা বোঝাতে- উদ্ধারচিহ্ন (‘’)
১১. বাক্যের বিভিন্ন অংশকে আলাদা করতে- কমা (,)
১২. বিবৃতিবাচক ও অনুজ্ঞাবাচক বাক্যের শেষে- দাঁড়ি (।)
১৩. শব্দ সংক্ষেপ করার কাজে- বিন্দু (.)
যতিচিহ্ন বসাই
নিচের অনুচ্ছেদে কিছু যতিচিহ্ন বসানো আছে, কিছু যতিচিহ্ন বসানো নেই। বাদ পড়া যতিচিহ্নগুলো বসিয়ে অনুচ্ছেদটি আবার লেখো: (মূল বইয়ের ৫৪ নম্বর পৃষ্ঠা)
আকমল স্যার সেদিন ক্লাসে এসে বললেন, শোনো ছেলে মেয়েরা, তোমাদের জন্য একটা খুশির খবর আছে
সব শিক্ষার্থী খুশির খবরটা শোনার জন্য তাঁর দিকে তাকিয়ে রইল। স্যার বললেন, স্কুল থেকে প্রতিটি শ্রেণিতে একটি করে বুক-সেলফ দেওয়া হচ্ছে
বিনু বলল বুক-সেলফ দিয়ে কী হবে, স্যার?
স্যার বললেন, এই বুক-সেলফে আমরা নানা রকম বই রাখব। গল্প কবিতা প্রবন্ধ নাটক পছন্দমতো যে কোনো ধরনের বই আমরা রাখতে পারি।
শানু প্রশ্ন করল বইগুলো আমরা কোথায় পাব, স্যার
স্যার বললেন, তোমরা প্রত্যেকে একটি করে বই জমা দেবে সেসব বই এই সেলফে থাকবে। এভাবে আমরা একটি ক্লাসরুম লাইব্রেরি গড়ে তুলব এই সেলফ থেকে বই নিয়ে সবাই পড়তে পারবে।
মিতু খুশি খুশি গলায় বলল, বাহ্ দারুণ হবে
উত্তর: আকমল স্যার সেদিন ক্লাসে এসে বললেন, শোনো ছেলে-মেয়েরা, তোমাদের জন্য একটা খুশির খবর আছে।
সব শিক্ষার্থী খুশির খবরটা শোনার জন্য তাঁর দিকে তাকিয়ে রইল। স্যার বললেন, স্কুল থেকে প্রতিটি শ্রেণিতে একটি করে বুক-সেলফ দেওয়া হচ্ছে।
বিনু বলল, ‘বুক-সেলফ দিয়ে কী হবে, স্যার’?
স্যার বললেন, ‘এই বুক-সেলফে আমরা নানা রকম বই রাখব। গল্প কবিতা প্রবন্ধ নাটক পছন্দমতো যে কোনো ধরনের বই আমরা রাখতে পারি’।
শানু প্রশ্ন করল, ‘বইগুলো আমরা কোথায় পাব, স্যার’?
স্যার বললেন, ‘তোমরা প্রত্যেকে একটি করে বই জমা দেবে, সেসব বই এই সেলফে থাকবে। এভাবে আমরা একটি ক্লাসরুম লাইব্রেরি গড়ে তুলব; এই সেলফ থেকে বই নিয়ে সবাই পড়তে পারবে’।
মিতু খুশি-খুশি গলায় বলল, ‘বাহ্ দারুণ হবে’!
যতিচিহ্ন ব্যবহার করে একটি অনুচ্ছেদ লিখি
একটি অনুচ্ছেদ লেখো যেখানে বিভিন্ন রকম যতিচিহ্নে ব্যবহার আছে: (মূল বইয়ের ৫৪ নম্বর পৃষ্ঠা)
একদেশে ছিল এক রাজা, তার নাম ইন্দ্রজিৎ। তিনি ছিলেন শান্তিপ্রিয়, প্রজাদরদী এবং মহানুভব। পাশাপাশি জ্ঞান-বুদ্ধিতেও তাঁর ছিল অনেক নাম-ডাক। যেহেতু তিনি প্রজাদের অনেক ভালোবাসতেন; প্রজারাও তাদের মহারাজকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসত। যার কারণে রাজ্যের যেকোন প্রয়োজনে রাজা ইন্দ্রজিৎ প্রজাদের পাশে পেতেন। কিন্তু হায়! রাজার ছোটভাই ছিলেন উচ্চাকাঙ্খী। সিংহাসন লাভে তার ছিল প্রচণ্ড লোভ।
তার ষড়যন্ত্রে রাজ্যে বহিশত্রু আক্রমণ করে। এসময় রাজা ইন্দ্রজিৎ তার প্রজাদের ডেকে বলেন, ‘আজ আমাদের এ রাজ্যে বহিশত্রুর কুদৃষ্টি পড়েছে। তাই আমাদের এই মা-মাটি বাঁচাতে সকলকে একত্রিত হয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।’ তিনি প্রজাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানতে চান, ‘তোমরা কি দেশ রক্ষার এ যুদ্ধে আমার পাশে থাকবে?’ তখন প্রজারা চিৎকার করে তাদের সমর্থনের কথা রাজার কানে পৌঁছে দেয়; রাজা এবং তার প্রজারা মিলে দেশরক্ষায় শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। এতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়—প্রচুর প্রাণহানি এবং সম্পদহানী ঘটে। কিন্তু তারপরেও রাজা ইন্দ্রজিৎয়ের যোগ্য নেতৃত্ব এবং প্রজাদের অসীম সাহসিকতায় তারা জয়লাভ করে। ফলে তাদের রাজ্য শত্রুমুক্ত হয়।
আরো দেখো: ৭ম শ্রেণির বাংলা সকল অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা, উপরে আমরা তোমাদের বাংলা বইয়ের ৭ম শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ প্রশ্ন উত্তর শেয়ার করেছি। তোমাদের মূল বইতে যেভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, আমরা ঠিক সেভাবেই উত্তরগুলো তৈরি করেছি। আশা করছি, এই প্রশ্নের উত্তরগুলো তোমাদের জন্য অনেক হেল্পফুল হয়েছে।
আমাদের ওয়েবসাইটে তোমার প্রয়োজনীয় সাবজেক্টের প্রশ্নের উত্তর না পেলে কোর্সটিকা ফেসবুক পেজে ইনবক্স করতে পারো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post