৭ম শ্রেণির বাংলা ৭ম অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ : তোমাদের পাঠ্যবইয়ে নানা রকমের পাঠ অছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে এমন দুটি পাঠ সম্পর্কে তোমার অভিমত দিতে হবে। অভিমত দেওয়ার আগে নিচের ছকে ভালো লাগার কারণগুলো লেখো। (মূল বইয়ের ১৮৬ নম্বর পৃষ্ঠা)
৭ম শ্রেণির বাংলা ৭ম অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ
তোমাদের পাঠ্যবইয়ে নানা রকমের পাঠ অছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে এমন দুটি পাঠ সম্পর্কে তোমার অভিমত দিতে হবে। অভিমত দেওয়ার আগে নিচের ছকে ভালো লাগার কারণগুলো লেখো।
পাঠের শিরোনাম |
ভালো লাগার কারণ |
চারপাশের লেখার সাথে পরিচিত হই | ১. আমার চারপাশের বিভিন্ন লেখার সাখে পরিচত হয়েছি।
২. ব্যানার, পোস্টার, লিফলেট, বিলবোর্ড ইত্যাদি সম্পর্কে জেনেছি এবং এগুলোর ব্যবহার কোথায় হয়, তা জেনেছি। ৩. এসব ব্যানার, পোস্টার, লিফলেট, বিলবোর্ড ইত্যাদি আমার চারপাশের কোথায় কোথায় ব্যবহৃত হচ্ছে, তা সম্পর্কে ধারণা নিয়েছি। |
বিবরণমূলক লেখা: পিরামিড | ১. পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি স্থাপনা, অর্থাৎ পিরামিড সম্পর্কে জেনেছি।
২. পিরামিড কীভাবে তৈরি হয়েছিল এবং কারা তৈরি করেছিল কা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। ৩. পিরামিড কী উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল তা জেনেছি। ৪. বিবরণমূলক লেখা কীভাবে তৈরি করতে হয়, তা শিখেছি। |
ভালো লাগার কারণগুলো লেখা হয়ে গেলে সেই অনুযায়ী সবার সামনে দাঁড়িয়ে তোমার অভিমত দাও। এই অভিমতের সঙ্গে কেউ একমত হতে পারে, আবার কেউ ভিন্ন মত প্রকাশ করতে পারে। সবার ভালো লাগার কারণ ও যুক্তি একরকমের হয় না। অভিমতের মধ্যে বিবরণ, উদাহরণ ও যুক্তি থাকে। অন্যদিকে, কারো মত খড্ডন করার জন্য যুক্তি দিয়ে কথা বলতে হয়। অন্যের মতের ইতিবাচক অংশকে গ্রহণ করার মানসিকতা থাকা দরকার। যুক্তিযুক্ত যে কোনো মত গ্রহণ করা যায়।
অভিমত প্রদান
ভালো লাগার কারণগুলো লেখা হয়ে গেলে সেই অনুযায়ী সবার সামনে দাঁড়িয়ে তোমার অভিমত দাও:
চারপাশের লেখার সাথে পরিচিত হই: আমরা আমাদের চারপাশে প্রায়ই বিভিন্ন লেখা দেখে থাকি। এসব লেখাগুলো আমাদের বিভিন্ন পরিচিতিমূলক তথ্য প্রদান করে। যেমন- ব্যানার, পোস্টার, লিফলেট, বিলবোর্ড ইত্যাদি। আমি আমার পাঠ্যবই থেকে ‘চারপাশের লেখার সাথে পরিচিত হই’ এই পাঠটি পড়ার পরে এসব লেখা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। আমি জানতে পেরেছি যে, ব্যানার, পোস্টার, লিফলেট, বিলবোর্ড ইত্যাদি কী এবং কী কারণে এগুলো লেখা হয়। তাই এই পাঠটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।
পিরামিড: আমি প্রাচীন স্থাপনা ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে অনেক আগ্রহী। আর আমার পাঠ্যবইয়ে থাকা ‘পিরামিড’ রচনাটি আমাকে নতুন একটি প্রাচীন বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি। এই পাঠে আমি পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি অর্থাৎ পিরামিড সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আমি জেনে অবাক হয়েছি যে, এই পিরামিড আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর পূর্বে তৈরি করা হয়েছিল।
আমি তৎকালীন প্রকৌশলীদের নির্মাণকৌশল দেখে অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছি। কীভাবে এই পিরামিড নির্মিত হয়েছিল, কারা নির্মাণ করেছেন এসব তথ্য আমি এই ‘পিরামিড’ পাঠ থেকে জানতে পেরেছি। আর ‘পিরামিড’ যেহেতু একটি বিবরণমূলক লেখা, আমি এই পাঠ থেকে বিবরণমূলক লেখা কীভাবে লিখতে তা হয়, তা শিখেছি। আর এসব কারণেই আমার কাছে ‘পিরামিড’ পাঠটি অনেক ভালো লেগেছে।
পক্ষ নিয়ে যুক্তি দেই
জাবের আলি একজন কৃষক। কৃষিকাজ করেই জাবের আলি পুরো জীবনটা কাটিয়েছেন। তার দুই ছেলে। বড়ো ছেলে গ্রামে বাবার সাথে কৃষিকাজ করে। আর ছোটো ছেলে শহরে চাকরি করে। এ বছর ধান ভালোই হয়েছে। বড়ো ছেলে এতে ভীষণ খুশি। কিন্তু ছোটো ছেলে জানাল, মুরগির খামারে লাভ অনেক বেশি। সে তাদের চাষের জমিতে একটি মাছ ও হাঁস-মুরগির খামার করতে চাইল। বড়ো ছেলের মতে, খানের আবাদ বেশি সুবিধাজনক।
কারণ, এই ধান তাদের সারা বছরের খোরাকি জোগায়। তাছাড়া ধান বিক্রি করে তাদের সংসারও চলে। ছোটো ছেলের মতে, যদি খামার করা যায়, তবে সেখান থেকে প্রচুর নগদ টাকা পাওয়া যাবে। সারাবছরের সংসার চালানোর মতো খরচও পাওয়া যাবে। বড়ো ভাই জানাল মুরগির খামার করা হলে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হবে। তাছাড়া মুরগির নানা রকম রোগবালাই আছে। ছোটো ভাই জানাল, ধান চাষ করে সংসারের বড়ো ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। তাছাড়া ধান গাছেরও তো নানা রকম অসুখ আছে।
১৮৬ নম্বর পৃষ্ঠায় বর্ণিত কাহিনীতে দুই পক্ষের মধ্যে কোন পক্ষের যুক্তি তোমার কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছে? তুমি এদের মধ্যে কোনো একটি পক্ষ অবলম্বন করো। সেই পক্ষের সমর্থনে তোমার যুক্তি দাও। অন্য পক্ষের যুক্তিও তোমাকে খণ্ডন করতে হবে। (মূল বইয়ের ১৮৭ নম্বর পৃষ্ঠা)
নমুনা উত্তর: আমি মনে করছি, বড় ছেলে যে যুক্তি প্রদান করেছেন তা অধিক গ্রহণযোগ্য। নিচে আমার মতের পক্ষে যুক্তি এবং অপর পক্ষের যুক্তির খণ্ডন করা হল।
আমার মতের পক্ষে যুক্তি |
অন্য পক্ষের যুক্তি খণ্ডন |
১. ধানচাষ লাভজনক। কারণ ধান চাষ করলে প্রতিদিন পরিচর্যা করতে হয় না।
২. ধানচাষে নির্দিষ্ট একটি সময় পরপর ক্ষেতে সার প্রয়োগ করা হয়। তাই এখানে খরচ কম। ৩. ধানের চাষ করলে ধান বিক্রি করে সংসারের ব্যয় বহন করা যায় এবং নিজেদের চাহিদাও মেটানো যায়। ৪. ধান চাষ করলে জমিতে কোনো প্রকার পরিবর্তন আনার প্রয়োজন পড়ে না। |
১. মুরগি পালনে প্রতিদিন মুরগির পরিচর্যা করতে হয়। ২. মুরগিকে প্রতিদিন খাবার খাওয়াতে হয়, তাই খরচ বেশি হয়। ৩. মুরগির বিভিন্ন রোগব্যাধী লেগেই থাকে এবং দুর্গন্ধ ছড়ায়। ৪. মাছ চাষ করতে গেলে জমি কেটে পুকুর তৈরি করতে হয়। যা অনেক খরচসাপেক্ষ বিষয়। |
যুক্তি প্রদান ও খণ্ডনের সময় খেয়াল রাখতে হবে
১. নিজের কথা ও যুক্তি কাগজে টুকে রাখতে হয়: বিতর্কের সময় নিজের বলার মত কথাগুলো কাগজে সংক্ষিপ্ত আকারে লিপিবদ্ধ করতে হবে। যাতে করে যখন বলার সুযোগ আসবে, তখন খুব সহজেই বিষয়গুলো সম্পর্কে কথা বলা যায়।
২. নিজের পক্ষের যুক্তিগুলো একে একে তুলে ধরতে হয়: উল্লেখযোগ্য যুক্তিগুলো পর্যায়ক্রমে ধারাবাহিকভাবে বলতে হবে। যুক্তিগুলো যেন এলোমেলো না হয়ে যায়, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
৩. নিজের যুক্তির পক্ষে উদাহরণ ও ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয়: প্রয়োজনবোধে নিজের যুক্তির পক্ষে বিভিন্ন উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও যুক্তিটির গ্রহণযোগ্যতা বোঝাতে সূত্র ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
৪. নিজের কথা সংক্ষেপে গুছিয়ে বলতে হয়: বিতর্কের সময়ে অনেক বেশি কথা না বলে শুধুমাত্র যুক্তিসঙ্গত কথাগুলো সাজিয়ে-গুছিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে বলতে হবে। এতে করে সময় এবং কম লাগবে এবং সবগুলো যুক্তি যথাসময়ের মধ্যে উপস্থাপন করা যাবে।
৫. অন্যের কথা ও যুক্তি মনোযোগ দিয়ে শুনতে হয়: বিতর্কের সময় অন্যের কথা ও যুক্তি মনোযোগ দিয়ে শোনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে তার যুক্তি খণ্ডন করতে সুবিধা হয়।
৬. অন্যের বক্তব্যের দুর্বল অংশ খুঁজে বের করতে হয়: প্রতিপক্ষের বক্তব্যের দুর্বল অংশ খুঁজে বের করতে পারলে বিতর্কে জয়ী হওয়া যায়। তাই প্রতিপক্ষের কোন যুক্তিটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল, কোন বিষয়টি এড়িয়ে গেল তা খুঁজে বের করতে হবে এবং নিজের যখন কথা বলার সুযোগ আসবে, তখন না উপস্থাপন করতে হবে।
৭. বিনয়ের সঙ্গে অন্যের যুক্তি খণ্ডন করতে হয়: বিতর্ক কিন্তু তর্ক নয়। তাই অবশ্যই বিনয়ের সাথে অন্যের যুক্তি খণ্ডনের চেষ্টা করতে হবে। যুক্তি উপস্থাপন যেন মার্জিত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অবশ্যই কথার বলার মধ্য দিয়ে প্রতিপক্ষের মনে কষ্টা দেওয় যাবে না।
৮. অন্যের কথার মাঝখানে কথা বলা যায় না: বিতর্কের সময় নিজের কথা বলার সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কখনোই অন্যের কথা বলার মাঝখানে কথা বলা যাবে না। এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, বিতর্কের পরিবেশ নষ্ট হবে।
বিতর্ক করি বিতর্ক প্রতিযোগিতার জন্য শিক্ষক তোমাদের জোড় সংখ্যক দলে ভাগ করবেন। এরপর প্রতি জোড়া দলের জন্য একটি করে বিতর্কের বিষয় ঠিক করে দেবেন। বিষয়টির পক্ষে এক দল বলবে এবং বিপক্ষে অন্য দল বলবে। প্রতি দলে একজন দলনেতা থাকবে। কথা বলার সময়ে প্রমিত ভাষার ব্যবহার করতে হবে। যুক্তি, পালটা যুক্তি ও ভাষা ব্যবহারে পারদর্শিতার ভিত্তিতে শিক্ষক বিজয়ী দল ঘোষণা করবেন।
আরো দেখো: ৭ম শ্রেণির বাংলা সকল অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা, উপরে আমরা তোমাদের বাংলা বইয়ের ৭ম শ্রেণির বাংলা ৭ম অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ সমাধান শেয়ার করেছি। তোমাদের মূল বইতে যেভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, আমরা ঠিক সেভাবেই উত্তরগুলো তৈরি করেছি। আশা করছি, এই প্রশ্নের উত্তরগুলো তোমাদের জন্য অনেক হেল্পফুল হয়েছে।
আমাদের ওয়েবসাইটে তোমার প্রয়োজনীয় সাবজেক্টের প্রশ্নের উত্তর না পেলে কোর্সটিকা ফেসবুক পেজে ইনবক্স করতে পারো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post