৭ম শ্রেণির বাংলা ৭ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ : আজ স্কুল বন্ধ। সকাল থেকেই খুব বৃষ্টি। রাহাত ও রেবা মায়ের কাছে বায়না ধরল খিচুড়ি খাওয়ার। তাদের মা হাসিমুখে বললেন, ‘আজ খিচুড়ি আমি রান্না করব না। তোমরা রান্না করবে, আমি শুধু তোমাদের কাজে সাহায্য করব।”
এ কথা শুনে রাহাত ও রেবা ভীষণ খুশি হলো। কিন্তু তাদের চিন্তা হলো, আগে কখনও তারা নিজেরা খিচুড়ি রান্না করেনি। মা ব্যাপারটিকে সহজ করে দিলেন। তিনি বললেন, “খিচুড়ি রান্নার উপায় বুঝে নেওয়ার জন্য তোমরা কিছু প্রশ্ন তৈরি করো।” রাহাত ও রেবা খাতা-কলম নিয়ে বসে গেল প্রশ্ন তৈরি করার জন্য।
৭ম শ্রেণির বাংলা ৭ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ
এমন সব প্রশ্ন তৈরি করতে হবে, যেগুলোর জবাব শুনে খিচুড়ি রান্নার ধাপগুলো বোঝা যায়। এবার তোমাদের পালা। তোমরা কয়েকটি দলে ভাগ হও। খিচুড়ি রান্নার উপায় জানতে তোমরাও প্রশ্ন তৈরি করো। প্রশ্নগুলো হতে পারে এমন-
১. খিচুড়ি রান্না করতে কী কী লাগে?
জবাব: খিচুড়ি রান্না করতে মূলত চাল ও ডাল লাগে।
২. খিচুড়ির মধ্যে কি কোনো সবজি দেওয়া যায়?
জবাব: খিচুড়ির মধ্যে সবজি দেওয়া যায়।
৩. কোন কোন সবজি দেওয়া যায়?
জবাব: আলু, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি দেওয়া যায়।
মূল বইয়ের অনুশীলনীর সমাধান
খিচুড়ি রান্নার জন্য কী কী প্রশ্নের জবাব পাওয়া দরকার, সেগুলো খাতায় লেখো। এসব প্রশ্নের মধ্যে যেগুলোর জবাব জানা আছে, সেগুলো প্রশ্নের নিচে লেখো। (মূল বইয়ের ১৮৪ নম্বর পৃষ্ঠা)
১. খিচুড়ি রান্না করতে কী কী লাগে?
উত্তর: খিচুড়ি রান্না করতে মূলত চাল ও ডাল লাগে।
২. খিুচুড়ির মধ্যে কি কোনো সবজি দেওয়া যায়?
উত্তর: খিচুড়ির মধ্যে সবজি দেওয়া যায়।
৩. কোন কোন সবজি দেওয়া যায়?
উত্তর: আলু, মিষ্টি কুমরা ইত্যাদি দেওয়া যায়।
৪. সবজি ছাড়া খিচুড়িতে আর কী দেওয়া যায়?
উত্তর: মাংস দেওয়া যায়।
৫. খিচুড়ি রান্নায় কীসের মাংস ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: প্রয়োজন ও পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো মাংস ব্যবহার করা যায়। যেমন- মুরগির মাংস, গরুর মাংস বা খাসির মাংস।
৬. খিচুরি রান্নায় কী কী মসলার ব্যবহার করতে হয়?
উত্তর: পেঁয়াজ কুচি, কাচা মরিচ, গোল মরিচ, হলুদের গুড়া, মরিচের গুড়া, তেজপাতা, এলাচ ও লবঙ্গ ব্যবহার করতে হয়।
প্রশ্ন করি জবাব খুঁজি এখানে আরও কিছু বিষয় দেওয়া হলো। এগুলোর সমাধানের জন্য তোমাদেরকে প্রশ্ন তৈরি করতে হবে। দলে ভাগ হয়ে একেকটি বিষয়ের জন্য প্রশ্ন তৈরি করো। আলোচনা করে জবাবও খুঁজে বের করো।
- নতুন কোনো জায়গায় যাওয়া
- সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা
- বনভোজনের ব্যবস্থা করা
প্রশ্ন করি জবাব খুঁজি
এখানে আরও কিছু বিষয় দেওয়া হলো। এগুলোর সমাধানের জন্য তোমাদেরকে প্রশ্ন তৈরি করতে হবে। দলে দলে ভাগ হয়ে একেকটি বিষয়ের জন্য প্রশ্ন তৈরি করো। আলোচনা করে জবাবও খুঁজে বের করো। (মূল বইয়ের ১৮৪ নম্বর পৃষ্ঠা)
আলোচনার বিষয়-১: নতুন কোনো জায়গায় যাওয়া।
১. এবছর ঘুরতে আমরা কোথায় যাচ্ছি?
উত্তর: আমরা কক্সবাজারে যাচ্ছি।
২. কক্সবাজারে গেলে আমরা কী দেখতে পাব?
উত্তর: কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকদ দেখতে পাব।
৩. কক্সবাজারের বিশেষত্ব কী?
উত্তর: কক্সবাজার বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত।
৪. কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত আসলে কত বড়?
উত্তর: এটি প্রায় ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ।
৫. কক্সবাজারে গিয়ে আমরা কোথায় থাকব?
উত্তর: আমরা হোটেলে থাকব।
৬. কক্সবাজারে গিয়ে আমরা কী খাব?
উত্তর: আমরা সেখানকার স্থানীয় খাবারগুলো খাব।
আলোচনার বিষয়-২: সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা।
১. কী উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে?
উত্তর: ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে।
২. অনুষ্ঠানটি কোথায় আয়োজন করা হবে?
উত্তর: পলাশডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।
৩. অনুষ্ঠানে কী কী আয়োজন থাকবে?
উত্তর: অনুষ্ঠানটি শুরু হবে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ দিয়ে। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রধান অতিথিদের বক্তব্য, মনমুগ্ধকর সঙ্গীত এবং নৃত্য পরিবেশন, অভিনয় এবং সবশেষে খাবার-দাবারের আয়োজন থাকবে।
৪. অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে কারা থাকবনে?
উত্তর: প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা প্রশাসক মহোদয়। এছাড়াও অন্যান্য অতিথি হিসেব বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ ও অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
৫. অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক আয়োজনে কারা অংশগ্রহণ করবেন?
উত্তর: বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবেন।
৬. অনুষ্ঠানটি কখন শুরু হবে?
উত্তর: সকাল ১০টায় শুরু হবে।
আলোচনার বিষয়-৩: বনভোজনের ব্যবস্থা করা।
১. কী উপলক্ষে বনভোজনের আয়োজন করা হচ্ছে?
উত্তর: পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে।
২. বনভোজনটি কারা আয়োজন করছে?
উত্তর: এলাকার তরুণরা সবাই মিলে।
৩. বনভোজনের চাঁদা কত?
উত্তর: ৫০০ টাকা।
৪. বনভোজনটি কোথায় অনুষ্ঠিত হবে?
উত্তর: স্থানীয় খেলার মাঠে।
৫. বনভোজনে কী কী খাবার ব্যবস্থা থাকবে?
উত্তর: ইলিশ মাছ, বিভিন্ন পদের ভর্তা, মাংস, পোলাও ইত্যাদি।
৬. বনভোজনটি কখন শুরু হবে?
উত্তর: দুপুরে শুরু হবে।
ছবি দেখে আলোচনা করি
দলে ভাগ হও। নিচের ছবিগুলো দেখে কী বুঝতে পারছ, তা দলে আলোচনা করো। আলোচনা শেষ হলে দলের একজন সবার সামনে দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে দুই মিনিট কথা বলবে। তার কথার গুরুত্বপূর্ণ অংশ অন্যরা খাতায় টুকে রাখবে। এবার অন্য দলের শিক্ষার্থীরা পূর্ববর্তী দলের অভিমতের সাথে একমত না হলে তাদের নিজেদের যুক্তি উপস্থাপন করবে। (মূল বইয়ের ১৮৫ নম্বর পৃষ্ঠা)
ছবি-১ নিয়ে আলোচনা
শিক্ষার্থী-১: ছবিটি দেখে তুমি কী বুঝতে পারছ?
শিক্ষার্থী-২: আমার কাছে মনে হচ্ছে, এটি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের ছবি।
শিক্ষাথী-৩: আমারও ঠিক তাই মনে হচ্ছে। পাকিস্তানী সেনারা এমন নির্মমভাবেই নিরীহ বাঙালীদের হত্যা করে ফেলে রেখেছিল।
শিক্ষার্থী-৪: হ্যাঁ, ঠিক তাই। এই বীর বাঙালীদের প্রাণের বিনিময়েই আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি।
দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে দুই মিনিট আলোচনা: ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি। প্রায় ৩০ লক্ষ শহীদ এ যুদ্ধে দেশের জন্য অকাতরে প্রাণ দিয়েছে। যার একটি খ-চিত্র আমরা এ ছবিতে দেখতে পাই। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে এদেশের সূর্যসন্তানদের হত্যা করে ফেলে রাখে। নদীতে ভাসিয়ে দেয় তাঁদের মৃতদেহ। বিভিন্ন বদ্ধভূমিতে স্তুপকরে ফেলে রাখা হয় স্বাধীনতাকামী বাঙালীদের লাশ। আমরা বাংলাদেশের এসব বীর সন্তানদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করব।
ছবি-২ নিয়ে আলোচনা
শিক্ষার্থী-১: তোমার কী মনে হয়? এই ছবিটি দেখে কী বুঝতে পারছ?
শিক্ষার্থী-২: আমার মনে হয় কিছু সহপাঠি একসাথে বসে দলগত পাঠ অনুশীলন করছে।
শিক্ষার্থী-৩: সম্ভবত তারা আসন্ন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং একে অন্যকে পড়া শিখতে সাহায্য করছে।
শিক্ষার্থী-৪: হ্যাঁ, আমিও ঠিক তাই ভাবছি।
শিক্ষার্থী-৫: তোমাদের কী মনে হয়, যে দলগত পড়াশোনা ভালো একটি অভ্যাস?
শিক্ষার্থী-৬: হ্যাঁ, আমি মনে করি। সবাই মিলে দলগত হয়ে পড়াশোনা করলে পড়া খুব দ্রুত বোঝা যায়। এতে করে কেউ কোন পাঠ না বুঝলে অপরজন তাকে সাহায্য করতে পারে।
শিক্ষার্থী-৭: তুমি ঠিক বলেছ। আমাদের উচিৎ দলগতভাবে আমাদের পাঠ্যবিষয়গুলোর সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা করা।
দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে দুই মিনিট আলোচনা: দলগত পড়াশোনা বা গ্রুপ স্টাডি পড়ালেখার একটি কার্যকরী পদ্ধতি। আমরা উপরোক্ত ছবিতে এমনই একটি দৃশ্য দেখতে পাছি, যেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী একটি লাইব্রেরিতে বসে পড়াশোনা করছে। এ পদ্ধতিতে এক জায়গায় বসে পাঁচ ছয়জন বা তার অধিক সহপাঠিরা ক্লাসের পড়া তৈরি করে। দলগত পড়াশোনার অনেক ভালো দিক রয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে- একে অন্যকে সাহায্য করার মনোভাব তৈরি হওয়া। দলগত পড়াশোনার সময় যদি কেউ কোনো পড়া বুঝতে না পারে, তাহলে অন্যরা তাকে সাহায্য করতে পারে। তাই দলগত পড়াশোনার মাধ্যমে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা সম্ভব।
ছবি-৩ নিয়ে আলোচনা
শিক্ষার্থী-১: তোমাদের কী মনে হচ্ছে? উপরের ছবিটি দেখে তোমরা কী বুঝতে পারছ?
শিক্ষার্থী-২: আমার মনে হচ্ছে, কিছু জেলে নদী থেকে মাছ ধরছে।
শিক্ষার্থী-৩: আমারও ঠিক তাই মনে হচ্ছে।
শিক্ষার্থী-৪: হ্যাঁ, ঠিক তাই। আচ্ছা, তোমরা কী বলতে পারো- এই জেলেরা কীভাবে আমাদের উপকার করছে?
শিক্ষার্থী-৫: অবশ্যই। জেলেরা মাছ সরবারহের মাধ্যমে আমাদের আমিষের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।
শিক্ষার্থী-৬: তুমি ঠিক বলেছ। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এসব জেলেদের ভূমিকা অপরিসীম।
দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে দুই মিনিট আলোচনা: আমরা মাছে-ভাতে বাঙালি। মাছ আমাদের প্রিয় খাবার। আর এই মাছ যারা সরবারহ করেন, তাদের মৎসজীবি বলা হয়। এসব মৎসজীবিরা মাছ শিকার করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। এই ছবিতে আমরা তিনজন জেলেকে নদী থেকে মাছ শিকার করতে দেখতে পাচ্ছি। তারা এভাবে প্রতিদিন মাছ শিকার করেন এবং তা বাজারজাত করেন। তাদের এই মাছ শিকারের ফলে আমরা নিয়মিত সতেজ মাছ খেতে পারি। যা আমাদের শরীরের আমিষের চাহিদা পূরণ করে।
আরো দেখো: ৭ম শ্রেণির বাংলা সকল অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা, উপরে আমরা তোমাদের বাংলা বইয়ের ৭ম শ্রেণির বাংলা ৭ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ সমাধান শেয়ার করেছি। তোমাদের মূল বইতে যেভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, আমরা ঠিক সেভাবেই উত্তরগুলো তৈরি করেছি। আশা করছি, এই প্রশ্নের উত্তরগুলো তোমাদের জন্য অনেক হেল্পফুল হয়েছে।
আমাদের ওয়েবসাইটে তোমার প্রয়োজনীয় সাবজেক্টের প্রশ্নের উত্তর না পেলে কোর্সটিকা ফেসবুক পেজে ইনবক্স করতে পারো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post