৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান ৮ম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর : আমাদের ভূগর্ভ কতকগুলো ভাগে বিভক্ত যাদেরকে টেকটোনিক প্লেট বলে। এ টেকটোনিক প্লেট কিন্তু স্থিতিশীল নয়, এগুলো চলমান। চলমান একটি প্লেট আরেকটি প্লেটে চাপ দেওয়ার কারণে সেখানে শক্তি সঞ্চিত হয়।
যখন হঠাৎ করে প্লেটগুলো সরে যায় তখন সঞ্চিত শক্তি বের হয়ে ভূমিকম্প সৃষ্টি করে। এ শিখন অভিজ্ঞতার প্রথমে শিক্ষার্থীরা ভূমিকম্প নিয়ে তাদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতা বা পরিবারের অন্যদের অভিজ্ঞতা শুনবে এবং আলোচনা করবে।
এরপর শিক্ষার্থীরা পৃথিবীতে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া বড় বড় ভূমিকম্প সম্পর্কে জানবে। ভূমিকম্প কেন হয় এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পৃথিবীর বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ গঠন কাঠামো অনুসন্ধান করবে। পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন স্তর, প্লেট, টেকটোনিকস সম্পর্কে জেনে ভূমিকম্পের কারণ উদ্ঘাটন করবে।
৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান ৮ম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
এ সময়ে মডেল তৈরির মাধ্যমে মহাদেশ, মহাদেশগুলোর অপসারণ, সময়ের সাথে ভূ-ত্বকের পরিবর্তন ও এর ফলে সৃষ্ট আপাত সাম্যাবস্থা নিয়ে তারা আলোচনা করবে। ভূমিকম্প কেন হয় বোঝার পর তারা এও আলোচনা করবে যে ভূমিকম্প কেন আগে থেকে অনুমান করা যায় না।
সেক্ষেত্রে ভূমিকম্পের সময়, বা ভূমিকম্পের পরে করণীয় কী সে বিষয়ে আলোচনা করবে। এই পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা চিলি এবং হাইতির ঐতিহাসিক ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির তুলনা করবে; এ থেকে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে কমানো যায় তা অনুমান করার চেষ্টা করবে।
ভূমিকম্পের সময়/আগে/পরে করণীয় কী কী তা আলোচনা করে তা অনুশীলন করবে (earthquake drill)। অনুশীলনের পর অন্যদের সচেতন করার জন্য কী করা যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করবে।
প্রথম সেশন (মূল বই: পৃষ্ঠা ৭৪)
১. ভূমিকম্প কেন হয়? (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ৭৪)
উত্তর : আমাদের ভূগর্ভ কতকগুলো ভাগে বিভক্ত যাদেরকে টেকটোনিক প্লেট বলে। এ টেকটোনিক প্লেট কিন্তু স্থিতিশীল নয়, এগুলো চলমান। চলমান একটি প্লেট আরেকটি প্লেটে চাপ দেওয়ার কারণে সেখানে শক্তি সঞ্চিত হয়। যখন হঠাৎ করে প্লেটগুলো সরে যায় তখন সঞ্চিত শক্তি বের হয়ে ভূমিকম্প সৃষ্টি করে।
২. ভূমিকম্প হওয়ার খবর আগে থেকে জানা যায় কি না? (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ৭৪)
উত্তর : না, ভূমিকম্প হওয়ার খবর আগে থেকে জানা যায় না।
৩. ভূমিকম্প হলে কী ঘটে? (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ৭৪)
উত্তর : ভূমিকম্প হলে ভূপৃষ্ঠের যেমন নানারূপ পরিবর্তন সাধিত হয়, তেমনি বহু প্রাণহানি ও জনপদ ধ্বংস হয়। যেমন-
ফাটল ও চ্যুতির সৃষ্টি : ভূমিকম্পের ফলে অসংখ্য ফাটল ও চ্যুতির সৃষ্টি হয়। এই সব ফাটলের মধ্য দিয়ে ভূগর্ভস্থ গরম পানি ও বাষ্প বাইরে বেরিয়ে আসে। আবার চ্যুতির সৃষ্টি হলে ভূভাগ উপরে উঠে বা নিচে নেমে স্তূপ পর্বত উপত্যকার সৃষ্টি করে।
নদীর গতিপথ পরিবর্তন : ভূমিকম্পের ফলে ধ্বসজনিত কারণে নদীর গতিপথ রুদ্ধ হলে, নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়, যেমন- ১৭৬২ সালে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে আমাদের অন্যতম প্রধান নদ ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল।
সমুদ্রতলের পরিবর্তন : ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় নতুন দ্বীপ সৃষ্টি হয়। আবার অনেক সময় অনেক দ্বীপ সমুদ্রের পানিতে ডুবে যায়।
সুনামি : সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্প হলে তা সমুদ্রের বিশাল ঢেউয়ের মাধ্যমে উপকূলে ধ্বংসলীলা চালায়। এই সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসকে সুনামি বলে। ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে প্রচণ্ড ভূমিকম্পের কারণে যে সুনামির সৃষ্টি হয়েছিল, তার কারণে বিভিন্ন দেশের ২,৪০,০০০ এরও অধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১১ সালের সুনামির ফলে জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ধ্বংসলীলা : ভূমিকম্প যেহেতু আকস্মিক ঘটনা, তাই হঠাৎ করে প্রবল ভূমিকম্প হলে শহর, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। পাহাড়ি এলাকাগুলোতে পাহাড় ধ্বস হতে পারে। এসবের ফলে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে ।
শিক্ষকের কাছ থেকে চিলি এবং হাইতিতে ঘটে যাওয়া দুইটি ভূমিকম্প সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করো। নিচের ছক-১ পূরণ করো। প্রয়োজনে ছক পূরণ করার জন্য বাসায় বা শ্রেণিকক্ষের বাইরেও কাজ করো। (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ৭৪)
উপরের ছক দেখে কোন ভাবনা আসছে মাথায়? ভূমিকম্পের মাত্রা ও এর সাথে দুইটি ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির তুলনা করে দেখো কোনো পার্থক্য কী দেখছ? কী কারণে পার্থক্য ঘটতে পারে? দলগত আলোচনা করে নিচে লিখে রাখো তোমাদের মতামত। (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ৭৫)
উত্তর : উপরের ছকে চিলিতে সংঘটিত ২০১৪ সালের ভূমিকম্প ও হাইতিতে সংঘটিত ২০১০ সালের ভূমিকম্পের তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এ তথ্যের আলোকে দেখা যাচ্ছে চিলিতে সংঘটিত ভূমিকম্পের মাত্রা অনেক বেশি হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুবই কম। অন্যদিকে হাইতিতে সংঘটিত ভূমিকম্পের মাত্রা (৭) চিলিতে সংঘটিত ভূমিকম্পের মাত্রার (৮.২) তুলনায় কম হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল ভয়াবহ মাত্রায় বেশি। অর্থাৎ দুটি ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পার্থক্যটা স্পষ্ট।
চিলি ও হাইতির ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পার্থক্য যেসর কারণে ঘটেছে তা হলো-
১. চিলিতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যথাযথ ভবন নীতিমালা অনুসরণ করা হলেও হাইতির ক্ষেত্রে তা হয়নি। দুর্বল অবকাঠমোর কারণে হাইতিতে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
২. ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে চিনিতে পূর্ব-প্রস্তুতিমূলক সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছিল। হাইতিতে এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
৩. চিলির ভূমিকম্পে মাত্রা বেশি থাকলেও তার উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব (১০০ কি.মি.) ও গভীরতা (২০.১) কি.মি.) বেশি ছিল। অন্যদিকে হাইতির ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল (১২ কি.মি.) ও গভীরতা কম থাকায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছিল।
দ্বিতীয় সেশন (মূল বই: পৃষ্ঠা ৭৬)
৪. পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন বর্ণনা কর। (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ৭৬)
উত্তর : পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠনকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১. ভূত্বক, ২. ম্যান্টল এবং ৩. কোর। নিচে এদের বর্ণনা করা হলো-
১. ভূত্বক (Crust) : পৃথিবীর সবচেয়ে উপরের স্তরকে ভূত্বক বলা হয়। এই স্তরটি অন্যান্য স্তরের তুলনায় পাতলা ও ভঙ্গুর। পুরুত্ব সর্বনিম্ন ৫ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার।
২. ম্যান্টল (Mantle) : ভত্বকের পরের স্তরটির নাম ম্যান্টল। ভূত্বকের সঙ্গে লাগানো ম্যান্টেলের স্তরটি কঠিন এবং ভঙ্গুর। উপরের ভূত্বক এবং নিচের এই স্তর নিয়ে তৈরি কঠিন অংশকে লিখোম-ল বলে। এই লিখোম-ল স্তরটি বড় বড় বেশ কয়েকটি টুকরায় বিভক্ত এবং সেগুলোকে টেকটোনিক প্লেট বলে। ম্যান্টেলের বাকি অংশটুকু পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠনের সবচেয়ে পুরু স্তর। এটি প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার পুরু এবং পৃথিবীর প্রায় ৮৫ শতাংশই এই ম্যান্টেল দিয়ে গঠিত।
৩. মজ্জা বা কোর (Core) : ম্যান্টলের নিচে রয়েছে মজ্জা বা কোর। মজ্জা বা কোর দুই অংশে বিভক্ত, উপরের অংশটি বা বহিঃস্থ মজ্জা তরল এবং সেটি প্রবাহিত হতে পারে। এই স্তরের উপরের ম্যান্টল ও অন্যান্য স্তরের ভরের কারণে এখানে চাপও বেশি। পৃথিবীর একেবারে অভ্যন্তরে রয়েছে অন্তঃস্থ মজ্জা। এই স্তরের বৈশিষ্ট্য বহিঃস্থ মজ্জার মতোই তবে তাপ এবং চাপ আরও বেশি। অধিক চাপের কারণে এই স্তর কঠিন।
৫. টেকটোনিক প্লেট বলতে কী বুঝ? (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ৭৬)
উত্তর : পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগের লিপোমণ্ডল স্তরটি বড় বড় বেশ কয়েকটি টুকরায় বিভক্ত। এই টুকরাগুলোই হলো টেকটোনিক প্লেট। এই টেকটোনিক প্লেটগুলো মোটেও স্থির নয়, এগুলো বিভিন্ন দিকে বছরে ৩ থেকে ৫ সে.মি. সরে যায়। টেকটোনিক প্লেটের গতিবিধির কারণেই পৃথিবীতে ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাত হয়ে থাকে।
৬. টেকটোনিক প্লেটগুলো কেন নড়াচড়া করে? ব্যাখ্যা কর। (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ৭৬)
উত্তর : পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগের লিথোমণ্ডল স্তরে টেকটোনিক প্লেটের অবস্থান। লিথোম-লের পরের স্তরে বেশি তাপমাত্রার কারণে পাথর গলিত অবস্থায় থাকে বলে এ স্তরটি পুরোপুরি কঠিন নয়। এ কারণে তার উপর অবস্থিত টেকটোনিক প্লেটগুলো মোটেও স্থির থাকে না। এ প্লেটগুলো বছরে ৩-৫ সে.মি. সরে যেতে থাকে। এ কারণে টেকটোনিক প্লেটগুলো নড়াচড়া করে। টেকটোনিক প্লেটের এই গতির কারণে প্লেটের উপর অবস্থিত মহাদেশগুলোও গতিশীল হয়।
তৃতীয় সেশন (মূল বই: পৃষ্ঠা ৭৬)
৭. ভূমিকম্প হওয়ার পূর্বাভাস আমরা পাইনা কেন? (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ৭৬)
উত্তর : ভূমিকম্প হলো এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা আকস্মিক এবং অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটে। পৃথিবীর পৃষ্ঠের গভীরে টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ার কারণে ভূমিকম্প ঘটে। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য কোনো নির্ভুল পদ্ধতি নেই। সিসমিক মনিটরিং প্রযুক্তির অগ্রগতি সত্ত্বেও বিজ্ঞানীরা এখনও সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিতে সক্ষম নয়।
তবে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ রয়েছে যা নির্দেশ করতে পারে যে ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
যেমন- স্থল স্তরের পরিবর্তন, ভূমিতে ফাটল দেখা দেওয়া এবং নতুন ঝরনা বা কূপের উদ্ভব। এছাড়াও, কিছু বিজ্ঞানী কুকুর এবং পাখির মতো প্রাণীদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করে, তাদের অস্বাভাবিক আচরণ দেখে পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে এসব পূর্বাভাস ভূমিকম্প হবে কি হবে না তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে মোটেও যথেষ্ট নয়। এসব কারণেই আমরা ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাই না।
যেহেতু আমরা ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাই না, তাই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করার জন্য স্বাভাবিক অবস্থায় কোন ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। ভূমিকম্পের সময় আমাদের কী করা প্রয়োজন এবং ভূমিকম্পের পরে আমাদের করণীয় কী? দলগত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নাও।
স্বাভাবিক অবস্থায় যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন : (বিজ্ঞান অনুশীলন বই: পৃষ্ঠা ৭৭)
উত্তর :
১. বিদ্যুৎ ও গ্যাসলাইন বন্ধ করার নিয়মকানুন পরিবারের সবার জেনে রাখতে হবে।
২. বাসায় আগুন নেভানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৩. প্রাথমিক চিকিৎসা কিট, শুকনা খাবার এবং পানি রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. বাড়িঘর নির্মাণের সময় বিল্ডিং কোড মেনে চলা আবশ্যক।
৫. ভূমিকম্প প্রতিরোধী অবকাঠামো যেমন- বাড়িঘর, সেতু, রাস্তা ও পাইপলাইন তৈরি করতে হবে।
৬. ভারী মালপত্র শেলফের উপরে রাখা যাবে না। শেলফের নিচের দিকে রাখতে হবে, যাতে ঝাঁকুনিতে এগুলো গায়ের উপর না পড়ে।
৭. জনসাধারণকে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য বিপদ এবং সেজন্য কিভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে, সে সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।
৮. নিয়মিত ভূমিকম্পের নিরাপত্তা মহড়ার আয়োজনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভূমিকম্পের সময় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৯. ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করা এবং সেগুলো মজবুত করার ব্যবস্থা করা।
১০. স্কুলে স্কুলে ভূমিকম্প সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সচেতন করে তুলতে হবে।
ভূমিকম্পের সময় আমাদের কী করা প্রয়োজন :
উত্তর :
১. ভূমিকম্পের সময় ভয়ে এবং আতঙ্কে দিগি¦দ্বিক জ্ঞানশূন্য হওয়া যাবে না।
২. ভূমিকম্পের সময় ঘরের ভিতরে থাকলে বালিশ দিয়ে মাথা ঢেকে টেবিল, ডেস্ক বা শক্ত কোনো আসবাবপত্রের নিচে আশ্রয় নিতে হবে।
৩. ঘরের বীম, কলাম ও পিলার ঘেঁষে আশ্রয় নিতে হবে।
৪. রান্নাঘরে থাকলে গ্যাসের চুলা বন্ধ করে দ্রুত বেরিয়ে আসতে হবে।
৫. বিল্ডিং থেকে একান্ত নামতে চাইলে সিঁড়ি দিয়ে নামাতে হবে।
৬. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে স্কুল ব্যাগ মাথায় দিয়ে শক্ত বেঞ অথবা শক্ত টেবিলের নিচে আশ্রয় নিতে হবে।
৭. গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, হাসপাতাল, মার্কেট ও সিনেমা হলে থাকলে বের হওয়ার জন্য দরজার সামনে ভিড় কিংবা ধাক্কাধাক্কি না করে, দু’হাত দিয়ে মাথা ঢেকে বসে পড়তে হবে।
৮. ঘরের বাইরে থাকলে গাছ, উঁচু বাড়ি, বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে দূরে খোলা স্থানে যেতে হবে।
৯. ভাংগা দেওয়ালের নিচে চাপা পড়লে বেশি নড়াচড়ার চেষ্টা করা যাবে না। কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতে হবে, যাতে ধুলাবালি শ্বাস নালিতে না ঢোকে।
১০. গাড়িতে থাকলে গাড়ি থামিয়ে কম্পন না থামা পর্যন্ত গাড়ির ভিতরে থাকতে হবে।
ভূমিকম্পের পরে আমাদের করণীয় :
উত্তর :
১. যথাসম্ভব শান্ত থাকতে হবে। ভূমিকম্প থেমে গেলেও অপেক্ষা করে তারপর বের হতে হবে। উপর থেকে ঝুলন্ত জিনিসপত্র কিছুক্ষণ পরেও পড়তে পারে।
২. নিজে আহত কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে এবং কেউ আহত হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. ঘরবাড়ির ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করে নিরাপদ মনে না হলে সবাইকে নিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।
৪. গ্যাসের গন্ধ পেলে দরজা জানালা খুলে বের হয়ে যেতে হবে এবং দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. পানি, ইলেকট্রিসিটি, গ্যাস লাইন পরীক্ষা করতে হবে, যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে তবে সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হবে।
৬. আগুন জ্বালানো যাবে না, বাড়িতে গ্যাসের লাইন লিক থাকলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
৭. ধুলাবালির মধ্যে পড়লে হাত বা রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে নিতে হবে।
৮. ধ্বংস প্রাপ্ত বিল্ডিংয়ের নিচে আটকা পড়লে উদ্ধারকারী দল এলে তাদের সংকেত দেওয়ার জন্য কোনো কিছুতে নিয়মিতভাবে আঘাত করে শব্দ করতে হবে।
৯. বড় ভূমিকম্পের পর আফটার শক হিসেবে আরো ভূমিকম্প হতে পারে, সেজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
১০. রেডিও, টেলিভিশন থেকে জরুরি নির্দেশাবলি শুনতে হবে এবং তা মেনে চলতে হবে।
আরো দেখো: ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান সকল অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা, উপরে আমরা তোমাদের ৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান ৮ম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর ভূমিকম্প ভূমিকম্প শেয়ার করেছি। তোমাদের মূল বইতে যেভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, আমরা ঠিক সেভাবেই উত্তরগুলো তৈরি করেছি। উপরে দেওয়া Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে উত্তর সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post