ভূগোল ও পরিবেশ ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর : পরিবেশের সাথে মানুষের অভিযোজনের প্রথম পদক্ষেপ বসতি স্থাপন। বসতি গ্রামীণ ও শহুরে দুই ধরনের। যে বসতির সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী জীবিকা অর্জনের জন্য প্রথম পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশেষত কৃষির উপর নির্ভরশীল সে বসতিকে গ্রামীণ বসতি বলে। যে বসতি অঞ্চলে অধিকাংশ অধিবাসী প্রত্যক্ষ ভূমি ব্যবহার ব্যতীত অন্যান্য অকৃষিকার্য যেমন গ্রামীণ অধিবাসীদের উৎপাদিত দ্রব্যাদির শিল্পকরণ, পরিবহন ইত্যাদি পেশায় নিয়োজিত থাকে তাকে নগর বসতি বলে।
ভূগোল ও পরিবেশ ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : ঢাকায় বসবাসাশ আসাদ রাঙামাটিতে বেড়াতে গিয়ে দেখল ঢাকার ও রাঙামাটির জনবসতির মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।
ক. পরিবেশের সঙ্গে মানুষের অভিযোজনের প্রথম পদক্ষেপ কোনটি?
খ. শহরে অপরাধ বেশি সংঘটিত হয় কেন?
গ. আসাদের বসবাসরত অঞ্চলের জনবসতি কী কী নিয়ামক দ্বারা প্রভাবিত হয় ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আসাদের ভ্রমণকৃত অঞ্চলের জনবসতির নিয়ামকগুলো বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : মাঠ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা সৌরভ। তিনি সারা দেশ ঘুরে একটি বিষয় উপলব্ধি করেন, বিভিন্ন নিয়ামকের অনুপস্থিতি বসতি স্থাপনের অন্তরায়।
ক. জনসংখ্যার ঘনত্ব কী?
খ. অতিজনাকীর্ণতা বলতে কী বুঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. সৌরভের মতে, বসতি গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভূপ্রকৃতি ও যোগাযোগব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সৌরভের দেখা কোন ধরনের নিয়ামক বসতি স্থাপনের অন্তরায়-বিশ্লেষণকর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : এইচএসসি পরীক্ষা পাস করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির উদ্দেশ্য মুহিত ঢাকায় রওনা হলো। ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে সে দেখল রেললাইন ঘেঁষে অসংখ্য ছোট ছোট বসতি গড়ে উঠেছে। যেখানে জীবনযাত্রার মান অত্যন্ত নিম্ন। তবে কিছুদিন থাকার পর বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেখে মুহিত ঢাকায় থেকে যেতে উৎসাহী হলো।
ক. নগরায়ন বিকাশের ধারাক্রম কী?
খ. বুড়িগঙ্গা নদী কীভাবে দূষিত হচ্ছে?
গ. মুহিত কেন ঢাকায় থেকে যেতে উৎসাহী হলো? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মুহিত যে বসতিগুলো দেখলো তা গড়ে উঠার কারণ ও প্রভাব বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : রাজন নদীর পাশে বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছে। তার আশেপাশে বসতিগুলোর মাঝে দূরত্ব আছে। কয়েকটি বসতির মাঝখানে খামার আছে। শফিক যে এলাকায় বাস করে সেখানে বসতিগুলো কাছাকাছি অবস্থিত । তারা সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করে। নিরাপত্তার জন্য এই বসতি বেশ উপযোগী। আরমান আমেরিকায় থাকে। সেখানে এক ধরনের বসতিতে খুব ছোট পরিবার বাস করে। এই বসতির লোকজনের মাঝে দেখা সাক্ষাৎ সহজে হয় না।
ক. গ্রামীণ বসতি কাকে বলে?
খ. বাংলাদেশের কোন নগরকে বিনোদন কেন্দ্র বলা হয়?
গ. রাজনের বসতি কী ধরনের? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে শফিক ও আরমানের বসতির নাম উল্লেখপূর্বক তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো।
এ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো
বসতি স্থাপনের নিয়ামক : বসতি স্থাপনের পেছনে নানাবিধ প্রাকৃতিক ও সামাজিক কারণ কাজ করে। যেমন : ১. ভূপ্রকৃতি, ২. পানীয় জলের সহজলভ্যতা, ৩. মাটি, ৪. প্রতিরক্ষা, ৫. পশুচারণ, ৬. যোগাযোগ ইত্যাদি।
গ্রামীণ বসতি : গ্রামীণ বসতি অঞ্চলের জনগণ প্রধানত কৃষি পেশায় নিয়োজিত থাকে। গ্রামীণ জনপদের জীবনযাত্রার মান শহরের মানুষের চেয়ে অনুন্নত। গ্রামীণ জনপদের রাস্তাগুলো সোজা না হয়ে আঁকা-বাঁকা ও অনুন্নত হয়। জনপদগুলো বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত ও গোষ্ঠীবদ্ধ হতে পারে। গ্রামীণ জনপদের মানুষ সহজ, সরল ও আন্তরিক হয়ে থাকে।
নগর বসতি : যে বসতি অঞ্চলের জনগণ কৃষিপেশায় নিয়োজিত না থেকে অকৃষিকার্য যেমন : ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবহন, অধিবাসীদের উৎপাদিত দ্রব্যাদির শিল্পজাতকরণ, শিল্প ও শ্রমভিত্তিক ও প্রশাসনিক পেশায় নিয়োজিত থাকে, তাকে নগর বসতি বলে। নগরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, নার্সিংহোম, আমোদ-প্রমোদের জন্য বহুপ্রকার সংস্থা, পার্ক ইত্যাদি থাকে।
গোষ্ঠীবদ্ধ বা সংঘবদ্ধ বসতি : কোনো নির্দিষ্ট স্থানে একত্রে বেশ কয়েকটি পরিবার বহু বাড়িঘর নিয়ে যে বসতি গড়ে তোলে তাকে গোষ্ঠীবদ্ধ বসতি বলে।
বিক্ষিপ্ত বসতি : এ ধরনের বসতিতে একটি পরিবার অন্যান্য পরিবার থেকে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় বসবাস করে। পৃথিবীর অধিকাংশ বিক্ষিপ্ত বসতি বন্ধুর ভূপ্রাকৃতিক অঞ্চলে গড়ে উঠেছে।
রৈখিক বসতি : নদী তীরবর্তী উঁচু স্থান, খালের কিনারা এবং রাস্তার পাশে যে বসতিগুলো গড়ে ওঠে তাকে রৈখিক বসতি বলে। এই ধরনের বসতিতে বাড়িগুলো একই সরলরেখায় গড়ে ওঠে।
নগরায়ণ ও নগরসভ্যতা : অনেকের মতে নগরায়ণ বিকাশের ধারাক্রম হচ্ছে সংগ্রহ ও শিকার, কৃষি এবং নগরায়ণ। নগরের উৎপত্তি লগ্নে অর্থনৈতিক কারণগুলোই প্রাধান্য পায়। নীলনদের অববাহিকায় মেমফিস, থেবস, সিন্ধু অববাহিকায় মহেঞ্জদাড়ো, হরাপ্পা প্রভৃতিতে নগরের উৎপত্তি ঘটে। এগুলো নগর সভ্যতার সূতিকাগার।
নগরের শ্রেণিবিভাগ : বিভিন্ন শহর ও নগরের মধ্যে সাদৃশ্যের চেয়ে বৈসাদৃশ্যই বেশি চোখে পড়ে। এর মধ্যে আয়তন, গঠন, জনসমষ্টির বৈশিষ্ট্য, ক্রিয়াকলাপ ইত্যাদিতে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। ক্রিয়াকলাপের প্রকৃতি ভেদে নগর বসতিগুলোকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়, যথা : ১. সামরিক ক্রিয়াকলাপ ভিত্তিক নগর, ২. প্রশাসনিক নগর, ৩. শিল্পভিত্তিক নগর, ৪. বাণিজ্যভিত্তিক নগর, ৫. সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকলাপ ভিত্তিক নগর, ৬. স্বাস্থ্য নিবাস ও বিনোদনের কেন্দ্র ইত্যাদি।
নগরায়ণের প্রভাব : নগরায়ণ ও নগর কাঠামো গড়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় কিছু প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেমন : ১. জনসংখ্যার আকার ও ঘনত্ব, ২. বসত-বাড়ির ধরন, ৩. যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা, ৪. পরিবার, ৫. চালচলন, ৬. খাদ্যাভ্যাস ও পোশাক পরিচ্ছদ, ৭. অর্থনীতি, ৮. সেবা সুবিধা, ৯. শিক্ষা ও চিকিৎসা, ১০. বিনোদন ব্যবস্থা, ১১. অপরাধ বৃত্তি, ১২. রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন ইত্যাদি।
অপরিকল্পিত নগরায়ণে সৃষ্ট সমস্যা : বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ শহরে বসবাস করে। তুলনামূলকভাবে যদিও শহরবাসীর সংখ্যা বাংলাদেশে কম। কিন্তু বর্তমান সময়ে এ হার দিন দিন বাড়ছেই। অপরিকল্পিত নগরায়ণের সাথে সাথে প্রত্যক্ষ পরিবেশগত সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষি জমি কমে যাওয়া, খাবার পানি ও উপযুক্ত পয়ঃনিষ্কাশনের সংকট, বর্জ্য অপসারণ সমস্যা, পরিবহন ও যানজট সংকট, বাসস্থানের অভাব ও বস্তির সৃষ্টি, পানি, বায়ু, মাটি ও শব্দ দূষণ, খোলা জায়গা ও বিনোদন ব্যবস্থার অভাব ইত্যাদি।
এছাড়াও এসএসসি অন্যান্য বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ সাজেশন রয়েছে কোর্সটিকায়। যা তোমরা বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবে। উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে ভূগোল সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post