অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, কোর্সটিকায় আজ আমি ৮ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি ১ম অধ্যায় সেশন ১ নিয়ে আলোচনা করব। এই সেশনটির নাম হচ্ছে— ভুল তথ্যের রকমফের। এই সেশনে যে কাজগুলো থাকবে, তা আমি তোমাদের সরাসরি ক্লাস নিয়ে বুঝিয়ে দেব। এই সেশনের আলোচনা শেষে তোমরা সমাধানের জন্য বিস্তারিত একটি ক্লাস পাবে।
বই পরিবর্তনের ফলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তোমাদের কাছে পাঠ্য বইকে সহজ করার উদ্দেশ্য আজকে ৮ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির মতো ৮ম শ্রেণির প্রতিটি বইয়ের সমাধান মনোযোগ দিয়ে পড়লে তোমাদের পড়াশোনা হবে সহজ। সেই সাথে তোমরা সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তর ধারণা লাভ করতে পারবে।
৮ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি ১ম অধ্যায় সেশন ১
আমরা যেহেতু তথ্য যাচাই করে সঠিক তথ্য খুঁজে বের করব, তাই কী কী প্রক্রিয়ায় ভুল তথ্য আসতে পারে সেটি বুঝে নিব। ইতোপূর্বে আমরা কোনো তথ্য সঠিক কিনা তা যাচাই এর কিছু সাধারণ নিয়ম জেনে তথ্য যাচাই করেছিলাম। এখন আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্যের যথার্থতা যাচাই করব।
পরিস্থিতি ১: একটি সংবাদ প্রতিবেদনের শিরোনামে সংবাদ ছাপানো হয়েছে একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন “ক” নামক একজন ব্যক্তি। সেই সংবাদের নিচে একজনের ছবি ছাপানো হয়েছে যেটি ক নামক ব্যক্তির ছবি না। এটি একটি ভুল তথ্য কিন্তু সংবাদ কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করে এই ভুলটি করেননি। এটিকে অনিচ্ছাকৃত ভুল তথ্য বা মিসইনফরমেশন বলা হয়।
পরিস্থিতি ২: একটি ভিডিও প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে একটি রেস্টুরেন্টে “নিরাপদ খাদ্য অভিযান” পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিবেদন যিনি বর্ণনা করছেন তিনি বলছেন এই রেস্টুরেন্টের নাম “গ”, এখানে মেয়াদোত্তীর্ণ মসলা দিয়ে খাবার বানানো হয়। প্রকৃতপক্ষে যেই রেস্টুরেন্ট ভেজাল খাবার তৈরি করছে সেই রেস্টুরেন্ট এর নাম “ঘ”।
“গ” রেস্টুরেন্ট এর ক্ষতি করার জন্য একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান “ঘ’ রেস্টুরেন্টের উপর তৈরি ওই ভিডিও প্রতিবেদনটি ডাউনলোড করে শব্দ (ভয়েস ওভার) পরিবর্তন করে “গ” রেস্টুরেন্টের নাম ব্যবহার করে ইন্টরনেটে আপলোড দিয়েছে। এই ধরনের ইচ্ছাকৃত প্রচারিত ভুল সংবাদকে ভুল তথ্য বা ফেইক নিউজ বা ডিসইনফরমেশন বলা হয়।
পরিস্থিতি ৩: অনেক সময় কোনো সঠিক সংবাদও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করতে পারে। “ক” নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চোযেয়ারম্যানকে তার ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত করা হল। এই সময় “পরিকল্পিত অপরাধের তদন্ত চলছে “ক” প্রতিষ্ঠানের চ্যেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে পূর্বের একটি খবর ব্যাপকভাবে প্রচার করা শুরু করলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে।
সংবাদটি সঠিক কিন্তু ওই সময়ে ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলেন অন্য আরেকজন ব্যক্তি। কিন্তু অনেকে ভাবলেন এই পুরস্কার প্রাপ্ত চ্যেয়ারম্যানই অপরাধ করেছেন। অর্থাৎ সঠিক সংবাদটি একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াল। ব্যক্তি, দল, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে সঠিক সংবাদকে ভিন্ন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করলে একে অপতথ্য বা ম্যালইনফরমেশান বলা হয়।
এখানে আমরা তিনটি ভিন্ন কাল্পনিক পরিস্থিতির উদাহরণ পড়লাম। কীভাবে আমরা বুঝতে পারব উপরের বিভিন্ন পরিস্থিতির তথ্যগুলো ভুল? নিচে আমাদের ধারণাগুলো লিখবো।
যাচাই করার লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহ
কিছু তথ্য যাচাই করার মাধ্যমে তথ্য যাচাই এর প্রক্রিয়া জানব। কিন্তু তার জন্য আমাদের প্রথমে ঠিক করতে হবে আমরা কী তথ্য যাচাই করব। আমাদের পরিচিত জনের কাছ থেকে জানতে চাইব কোন কোন তথ্য যাচাই করা প্রয়োজন। এর জন্য আমরা গুগল ফর্ম ব্যবহার করব। গুগল ফর্ম তৈরির জন্য আমাদেরকে জিমেইল একাউন্ট লগইন করে গুগল ড্রাইভে যেতে হবে। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে চলো আমরা কাজটি করি।
১. গুগল ড্রাইভে গিয়ে “New” তে ক্লিক করলে গুগলের অনেকগুলো ফিচারের নাম আসবে। সেখান থেকে “Google Form” সিলেক্ট করলে ডানপাশে আরও কিছু ফিচার আসবে। সেখান থেকে ‘Blank Form’ সিলেক্ট করব।
২. তারপর সবুজ তীর চিহ্নের জায়গায় আমাদের প্রথম প্রশ্নটি লিখব। বামের তীরচিহ্নের জায়গায় এই “▽” ড্রপডাউন মেন্যুতে ক্লিক করে আমাদের প্রশ্নটি থেকে কী ধরনের উত্তর আশা করছি তা সিলেক্ট করব।
৩. আমাদের যে ধরণের উত্তর প্রয়োজন যেমন ছবি, লিংক, বহু নির্বাচনী উত্তর ইত্যাদি সেভাবে সবগুলো প্রশ্ন তৈরি করবো।
৪. গুগল ফর্ম তৈরি হয়ে গেলে আমরা ফর্ম এর লিংকটি ফর্মের ডান কোণায় থাকা Send বাটনে ক্লিক করে আমাদের পরিচিত জনদের ই-মেইল ঠিকানায় পাঠাব এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উপযুক্ত তথ্যসহ সাবমিট করতে বলব। এক্ষেত্রে এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া যেতে পারে।
আমাদের ওয়েবসাইটে তোমার প্রয়োজনীয় সাবজেক্টের প্রশ্নের উত্তর না পেলে কোর্সটিকা ফেসবুক পেজে ইনবক্স করতে পারো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post