৮ম শ্রেণির শারীরিক শিক্ষা ১ম অধ্যায় প্রশ্নের উত্তর : সুস্থ জীবন সকলেরই কাম্য। সুখী ও সুন্দর জীবনের জন্য প্রয়োজন শারীরিক সুস্থতা। শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের জন্য আমরা নানা ধরনের ব্যায়াম করে থাকি। ব্যায়াম করার ফলে দেহ ও মনের উন্নয়ন সাধিত হয়। প্রতিদিন নিয়মিত ও পরিমিত ব্যায়াম করলে দেহ কাঠামো সুদৃঢ় ও সবল হয়। ব্যায়াম একাকী বা দলগতভাবে করা যায়।
তবে একটানা ব্যায়াম করলে শরীরের জীবকোষপুলো ক্ষয়পূরণ করার সময় পায় না। তখন আমরা অবসাদপ্রস্থ হয়ে পড়ি। এই ক্ষয়পুরণ এবং কর্মদ্যম পুনরুজ্জীবিত করার জন্য পূর্ণ বিশ্রামের প্রয়োজন। বিশ্রাম করলে ক্ষয্রাপ্ত জীবকোবগুলো পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে এবং শরীরের ক্লান্তি ও মানসিক অবসাদ দূর হয়। ঘুম আমাদের শরীর ও মনকে বিশ্রাম দেয়। প্রকৃতপক্ষে ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেয়।
ভালো ঘুম হলে শরীর ও মন সতেজ থাকে। শারীরিক সুস্থতার জন্য আমরা সরঞ্রামবিহীন ও সরঞ্জামসহ বিভিন্ন প্রকার ব্যায়াম করি। কখনো কখনো ব্যায়ামের পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন অঞ্চলের লোকগীতির মাধ্যমে শারীরিক কসরত করে থাকি। ব্রতচারী নৃত্য শারীরিক কসরতের একটি অন্যতম উদাহরণ। এই ধরনের ব্যায়াম ও শারীরিক কসরতের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শারীরিক সুস্থতার সাথে সাথে আনন্দ ও চিন্তবিনোদনের সুযোগ ঘটে।
৮ম শ্রেণির শারীরিক শিক্ষা ১ম অধ্যায় প্রশ্নের উত্তর
১. কোন ব্যায়াম করতে হলে সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়?
ক. হেড স্ট্যান্ড
খ. হ্যান্ড স্প্রিং
গ. হেড স্প্রিং
ঘ. হ্যান্ড স্ট্যান্ড
২. কোন ব্যায়াম করার সময় একজন সাহায্যকারীর প্রয়োজন?
ক. হেড স্প্রিং
খ. হ্যান্ড স্প্রিং
গ. হেড স্ট্যান্ড
ঘ. হ্যান্ড স্ট্যান্ড
৩. সবচেয়ে বেশি ঘুমের প্রয়োজন হয় কাদের?
ক. শিশু
খ. কিশোর
গ. যুবক
ঘ. বয়স্ক
৪. এবডোমিনাল এক্সারসাইজে শরীরের কোন অংশের মেদ কমে?
ক. বাহুর
খ. উরুর
গ. নিতম্বের
ঘ. তলপেটের
৫. প্রাত্যহিক ব্যায়ামকে কার্যকর করতে ভূমিকা পালন করে নিম্নের কোনটি?
ক. বিশ্রাম ও ঘুম
খ. খেলাধুলা
গ. চিত্তবিনোদন
ঘ. নির্মল পরিবেশ
৬. শারীরিক সুস্থতার প্রধান বাহন কোনটি ?
ক. প্রাত্যহিক ব্যায়াম
খ. পরিমিত খাবার
গ. আর্থিক সচ্ছলতা
ঘ. নিয়মিত চিকিৎসা
মেধা অষ্টম শ্রেনীর ছত্রী। ঘুম ঘুম চোখে তার মা সকাল সাতটায় তাকে বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। বিদ্যালয় থেকে ফিরে গান শেখা, ছবি আঁকা, আরবি পড়া আ বাড়ির সব কাজ করতে করতে সারাটা দিন লেগে যায়। ঘুমাতে ঘুমাতে রাত ১১টা বেজে যায়। এভাবে কিছুদিন পর দেখা গেল মেধা অসস্থি হয়ে পড়েছে। কারো সাথে মেশার সুযোগ না পাওয়ায় পড়ালেখা তার কাছে এখন বিরক্তকর মনে হয়।
৭. মেধার কাছে পড়ালেখা বিরক্তকর মনে হওয়ার কারণ-
ক. পিতা-মাতার অসচেতনতা
খ. বয়স অনুপাতে বেশি পরিশ্রম করা
গ. পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু কঠিন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
৮. মেধার শারীরিক সক্ষমতার বৃদ্ধি করতে পারে কোনটি?
ক. পুষ্টিকর খাবার
খ. নিয়মিত শরীরচর্চা
গ. প্রয়োজনীয় ঘুম ও বিশ্রাম
ঘ. সহপাঠীদের সাথে খেলাধুলা
প্রধান শিক্ষক জামাল সাহেবের মেদ বেড়ে যাওয়ায় শারীরিক শিক্ষার শিক্ষকের পরামর্শে এক ধরনের ব্যায়াম করেন। এতে তার মেদ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যায়। এরপর তিনি বিদ্যালয়ে অধিক সময় থেকে শিক্ষকদের ক্লাসরুম মনিটরিংসহ যাবতীয় কর্মকান্ডে আগের চাইতে বেশি স্বচ্ছন্দ্যবোধ করতে লাগলেন।
৯. জামাল সাহেবের ব্যায়ামটি কোন ধরনের?
ক. স্পিড এক্সারসাইজ
খ. এবডোমিনাল এক্সারসাইজ
গ. এডুকেশনাল জিমন্যাস্টিক্স
ঘ. সরঞ্জামসহ ব্যায়াম
১০. উক্ত ব্যায়ামের ফলে জামাল সাহেবের কি উপকার হয়?
ক. হাতের শক্তি বাড়ে
খ. পায়ের শক্তি বাড়ে
গ. দৈহিক কর্মক্ষমতা বাড়ে
ঘ. পেটের পেশীর শক্তি বাড়ে
৮ম শ্রেণির শারীরিক শিক্ষা ১ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১. পরিমিত বিশ্রাম ও ঘুম সুস্থ থাকতে সহায়তা করে- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর. শরীর সুস্থ না থাকলে মন ভালো থাকে না । ফলে কোনো কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়না। কোনো কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন এবং স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজন নিজেকে সুস্থ রাখা। আমাঅধ্যায় ২দের দেহে খাদ্য ও পানির যেমন প্রয়োজন তেমনি বিশ্রাম ও ঘুমেরও প্রয়োজন। শরীর সুস্থ রাখার জন্য ব্যায়ামের পর শরীর ও মনের বিশ্রাম এবং ঘমের প্রয়োজন। চলাফেরা, কাজকর্ম ও ব্যায়ামের পর শরীর পরিশান্ত হয়, শরীরের জীবকোষগুলো ক্ষয় হতে থাকে।
তখন আমরা অবসারগ্রস্ত হয়ে পরি। শরীরের জীবকোষগুলো ক্ষয়পূরণ ও পূর্বাবস্থায় ফিরে আসার জন্য বিশ্রামের প্রয়োজন। বিশ্রামে শরীরের ক্লান্তি ও অবসাদ দূর হয়। বিশ্রাম ও ঘুমের পরিবেশ শান্ত ও নির্জন হলে ভালো ঘুম হবে। কারণ ঘুমের সময় দেহের সমস্ত অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ স্থির হয়ে পূর্ণ বিশ্রামে থাকে এবং শ্বাসপ্রশ্বাস ও হজমশক্তির কাজ সুশৃঙ্খলভাবে চলতে থাকে। তাই বলা যায় পরিমিত ঘুম ও বিশ্রাম সুস্থ থাকতে সহায়তা করে।
২. ‘সুস্থ দেহে সুন্দর মন’ উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: সুন্দর মন সরাসরি সুস্থ দেহের সাথে সম্পর্কিত। সুস্থ দেহ না থাকলে শারীরিক দুর্বলতা, অবসাদ ইত্যাদির প্রভাব মনের ওপর পড়ে। শারীরিক সুস্থতার প্রধান বাহনই হলো ব্যায়াম। ব্যায়াম ও খেলাধুলা শুধু দেহের বৃদ্ধিই ঘটায় না, মনের ও উন্নতি সাধন করে। কারণ মন ছাড়া দেহ এককভাবে চলতে পাড়ে না , দেহ হচ্ছে মনের আধার।
মন কাজ করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে অর্থাৎ মস্তিষ্ক দ্বারা। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সাহায্যে দেহের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজের সমন্বয় সাধিত হয়। ব্যায়াম এ সকল অঙ্গের সুষম উন্নতি সাধন করে। তাই ‘সুস্থ দেহে সুন্দর মন’ এটি প্রতিষ্ঠিত প্রবাদ হিসেবে সমাজে স্বীকৃত।
৩. এবডোমিনাল এক্সারসাইজ মূলত শরীরের গতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে মতামত দাও।
উত্তর: এবডোমিনাল এক্সারসাইজ মূলত শুধু তলপেটের মেদ কমানোর জন্য সহায়তা করে, শরীরের গতি বৃদ্ধিতে নয়। শুধু তলপেটের মেদ কমানোর জন্য বিশেষ কিছু ব্যায়াম করা হয়, যেমন- সিট আপ, হাঁটু ভেঙে সিট আপ, দুই পা শূন্যে উঁচু করে রাখা ইত্যাদি। আর এ ব্যায়ামগুলো এবডোমিনাল এক্সারসাইজের অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে শরীরের গতি বৃদ্ধি করতে স্পিড আপ এক্সারসাইজ করতে প্রথমে আস্তে আস্তে দৌড়ে শরীর গরম করে নিতে হবে।
পরে বিভিন্ন ধরনের ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো ব্যায়ামের উপযোগী হওয়ার পর গতি বাড়ানোর জন্য অল্প দূরত্বে বারবার জোরে দেওরাতে হবে। যেমন- ২৫ মিটার দূরে একটি দাগ দিয়ে শুরু থেকে ঐ দাগ পর্যন্ত পুরো গতিতে দৌড়াতে হবে। এভাবে একনাগাড়ে ব্যায়ামের পুরো সময় না থেমে একের পরএক ব্যায়াম করে গেলে শরীরের গতি বৃদ্ধি পায়। তাই বলা যায়, এবডোমিনাল এক্সারসাইজ নয় মূলত স্পিড এক্সারসাইজ শরীরের গতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৪. কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ সুস্থ দেহ ও মনের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: উচ্চস্বরে গান-বাজনা, মাইক বাজানো গাড়ির হর্ণ বাজানোর মাত্রাতিরিক্ত শব্দ কোলাহলপূর্ণ পরিবেশের সৃষ্টি করে এরূপ কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ আমাদের মেজাজ খিটখিটে করে ফেলে। কাজের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায়। শুধু তাই নয় কোলাহল মূখর পরিবেশ আমাদের ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটায়। বিশ্রাম ও ঘুম আমাদের দেহ ও মনের সুস্থতার জন্য আবশ্যক। চলাফেরা কাজকর্ম ও ব্যায়ামের পর শরীর পরিশ্রান্ত হয়, শরীরের জীবকোষগুলো ক্ষয় হতে থাকে।
তখন আমরা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ি। শরীরের জীবকোষগুলোর ক্ষয়পূরণ ও পূর্বাবস্থায় ফিরে আসার জন্য ঘুম ও বিশ্রামের প্রয়োজন। আর নির্জন ও শান্ত পরিবেশ ছাড়া ভালো ঘুম হওয়া সম্ভব নয়। এরূপ পরিস্থিতিতে শ্বাসপ্রশ্বাস ও হজমশক্তির কাজ সুশৃঙ্খলভাবে চলতে পারে না। শরীর সুস্থ না থাকলে মনও ভালো থাকে না। সুতরাং কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ সুস্থ দেহ ও মনের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে।
৫. যত ব্যাধির বালাই বলবে পালাই পালাই কীভাবে ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: যত ব্যাধির বালাই বলবে পালাই পালাই- এ অংশটুকু বাংলাদেশের জনপ্রিয় আঞ্চলিক নৃত্যগুলোর অন্যতম লড়ি নৃত্যের গানের অংশবিশেষ। এ নৃত্যের মাধ্যমে সহজেই আনন্দের সাথে দৈহিক ব্যায়াম করা যায়। গানের তালে তালে নাচের মাধ্যমে এ নৃত্য অনুশীলনের মাধ্যমে বিভিন্ন শারীরিক কসরত ও মানসিক আনন্দ পাওয়া যায়। এ নৃত্য পরিবেশের জন্য স্থান হিসেবে খেলার মাঠ এবং সরঞ্জাম হিসেবে একটি বাঁশের লড়ি ও ঢোল প্রয়োজন হয়। ঝা, ঝা, ঝা, ঝা তা তা – তালে কয়েকটি স্তরে এ নৃত্য শুরু করা হয়।
এ নৃত্যের স্তরগুলো হলো- ১. হুঁশিয়ার পজিশন, ২. পাঁয়তারা, ৩. নৌকাবাইচ, ৪. সখা, ৫. মানুষ পোতা ও ৬. বিজয়। উপরোক্ত স্তরগুলো নিয়মিত ও যথাযথ অনুশীলন করতে পারলে মানসিক আনন্দ লাভের পাশাপাশি শরীর ও সুস্থ থাকবে। অর্থাৎ যত ব্যাধির বালাই বলবে পালাই পালাই।
উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে ৮ম শ্রেণির শারীরিক শিক্ষা প্রশ্নের উত্তর ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post