৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন ৯ম অধ্যায় : মানুষ নিজস্ব পরিবেশে বাস করে। পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদান দ্বারা মানুষ প্রভাবিত হয়। সভ্যতার ধারাবাহিক পরিবর্তনে পরিবেশ ও মানুষের সম্পর্কের মধ্যেও পরিবর্তন এসেছে। মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলস্বরূপ পরিবেশগত বিভিন্ন সমস্যার উদ্ভব হয়েছে। পরিবেশও ভারসাম্য হারাচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে আমাদের পরিবেশগত সমস্যার প্রতিরোধে অনেক কিছু করণীয় আছে।
৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন ৯ম অধ্যায়
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : ফুরফুরা নগর পাহাড়ঘেরা সুন্দর একটি শহর, যার একপাশ দিয়ে বয়ে গেছে তুন্দ্রাভঙ্গ নদী। নদীতীরে গড়ে উঠেছে বেশকয়েকটি ইটভাটা ও কাগজকল সহ নানা ধরনের কলকারখানা। ইট তৈরিতে পাহাড় কাটা মাটি ব্যবহৃত হচ্ছে, এলাকায় গাছের সংখ্যা কমছে, আবহাওয়া ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে, মানুষ চর্মরোগ, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছে।
ক. পরিবেশ কাকে বলে?
খ. মানুষ কীভাবে প্রকৃতিকে জয় করার চেষ্টা চালিয়েছে?
গ. ফুরফুরা নগরে বায়ুদূষণের কারণ কী?
ঘ. ফুরফুরা নগরের পরিবেশগত সমস্যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উদ্বেগের কারণ ব্যাখ্যা কর।
প্রশ্নের উত্তর
ক. গাছপালা, নদী, পাহাড়-পর্বত, মাটি, পানি, বায়ু, আলো প্রভৃতি নিয়ে গড়ে ওঠে আমাদের পরিবেশ।
খ. মানুষ বনবাদাড় সাফ করে বড় বড় এলাকা জুড়ে ফসলের ক্ষেত তৈরি করছে। উৎপাদন করেছে ধান, গম, ভুট্টাসহ আরও অনেক ফসল। বন্যপশুর মধ্যে কোনোটিকে মেরে রান্না করেছে, কোনোটি মেরে চামড়া কাজে লাগিয়েছে। আবার কোনো হিংস্র পশুকে হত্যা করেছে আত্মরক্ষার জন্য। মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচার জন্য রোপণ করেছে গাছপালা। এভাবেই প্রতিনিয়ত মানুষ প্রকৃতিকে জয় করার চেষ্টা চালিয়েছে।
গ. ফুরফুরা নগরে বায়ুদূষণের কারণ হচ্ছে ইটভাটা ও কাগজকলসহ নানা ধরনের কলকারখানা স্থাপন। মানুষের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে একই জমি বারবার চাষ হওয়ার ফলে জমির স্বাভাবিক উর্বরা শক্তি কমে যাচ্ছে। এ কারণে মানুষ ভূমিতে জৈব সার ছাড়াও রাসায়নিক সার দিচ্ছে। সার তৈরি এবং কাপড়, ঔষধ, নানা সরঞ্জামসহ মানুষর বিপুল চাহিদা মেটাতে বেড়ে চলেছে ইটভাটাসহ নানা ধরনের কলকারখানা। এগুলো থেকে যে কালো ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাস বেরিয়ে আসছে তা বায়ুকে দূষিত করছে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, ফুরফুরা নগরের নদীতীরে বেশ কয়েকটি ইটভাটা ও কাগজকলসহ নানা ধরনের কলকারখানা গড়ে উঠেছে। যেহেতু ইটভাটা ও কলকারখানার ধোয়া এবং বিষাক্ত গ্যাস বায়ুকে দূষিত করে, সেহেতু বলা যায়, ফুরফুরা নগরে বায়ু দূষণের কারণ হচ্ছে ইটভাটা ও কাগজকলসহ নানা ধরনের কলকারখানা স্থাপন।
ঘ. ফুরফুরা নগরের পরিবেশগত সমস্যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উদ্বেগের কারণ— উক্তিটি সঠিক। উদ্দীপকে বর্ণিত ফুরফুরা নগরের নদীতীরে বেশ কয়েকটি ইটভাটা ও কাগজকলসহ নানা ধরনের কলকারখানা গড়ে উঠেছে। ইট তৈরিতে পাহাড় কাটা মাটি ব্যবহৃত হচ্ছে, এলাকায় গাছের সংখ্যা কমছে এবং আবহাওয়া ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে, যা পরিবেশগত সমস্যাকে নির্দেশ করছে। আর পরিবেশগত সমস্যা নিঃসন্দেহে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উদ্বেগের কারণ।
ফুরফুরা নগরের পরিবেশগত সমস্যার কারণে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট, ক্যানসার ও চর্মরোগসহ নানা ধরনের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হতে পারে। বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গিয়ে নাইট্রোজেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইডসহ উষ্ণতা বৃদ্ধিকারী নানা গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে সূর্যের ক্ষতিকর অতি বেগুণি রশ্মি ঠেকানোর জন্য পৃথিবীর মহাকাশে যে ওজোন স্তর আছে তার ক্ষয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
ক্রমাগত পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে সমুদ্রের তীরবর্তী দেশগুলোর নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে, যা ফুরফুরা নগরসহ সারা বিশ্বের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উদ্বেগের কারণ।
পরিশেষে বলা যায়, পরিবেশগত সমস্যার কারণে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নানাবিধ ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তাই পরিবেশগত সমস্যা মোকাবিলায় সবারই সচেতন হওয়া একান্ত প্রয়োজন।
নিজে অনুশীলন করো
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : মনপুরা ৫ বছর আগে একটি নিরিবিলি ফসলি জমির জায়গা ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেখানে অনেক ব্যবসায়ী কল-কারখানা স্থাপন করেছে। এর ফলে সেখানে বসত বাড়ি নির্মাণ হয়েছে। হাট-বাজার হবার ফলে সারা দিন-রাতই উচ্চ শব্দে কাজ কারবার চলতে থাকে। এছাড়াও এখানে কলকারখানার সব আবর্জনা পাশের নদীতে ফেলা হয়।
ক. রোমান সভ্যতার একজন শাসকের নাম লিখ।
খ. সামাজিকীকরণ বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে আলোচিত বিষয়গুলোর কারণে পরিবেশে কি কোনো ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন হবে? আলোচনা কর।
ঘ. উক্ত বিষয়গুলোর প্রথমটি সমাজজীবনে কি কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আনে? মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : রূপাদের বাড়ির এক পাশে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন কল-কারখানা। তাই তাদের। এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাদের বাড়ির আরেক পাশে বয়ে চলেছে ধলেশ্বরী নদী। এক সময় রূপার বড় ভাই বোনেরা এই নদীতে সাতার কেটে গোসল করত। কিন্তু এখন আর কেউ নদীতে গোসল করে না। নদীর পানি কালো হয়ে গেছে।
ক. পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে কোনটি ঘটছে?
খ. বাতাসে প্রত্যাশিত অক্সিজেনের পরিমাণ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে রূপাদের এলাকার নদীটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয়টি জলজ জীববৈচিত্র্যের জন্য বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে কি তুমি মনে কর? মতামত দাও ।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : তুষার ঢাকায় থাকে। তার বাসার পাশে কয়েকটি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানা থেকে সব সময় কালো ধোঁয়া, বিষাক্ত গ্যাস, দূষিত বর্জ্য ও আশপাশের পরিবেশে সমস্যার সৃষ্টি করছে। তাই এসব বিষয়ে সে এলাকার লোকজনের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করছে।
ক. অক্সিজেনের উৎস কোনটি?
খ. কেন জলজ জীববৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে?
গ. উদ্দীপকে তুষারের এলাকার কারখানাগুলো পরিবেশের কোন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত সমস্যা সমাধানে তুমি কীভাবে অবদান রাখবে? তোমার পাঠ্যবইয়ের আলোকে মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : শাম্মীদের স্কুলে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক সচেতনতামূলক ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়। এতে গাছ কাটা; যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করা; যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা; রাস্তাঘাটে থুথু ফেলা প্রভৃতি বিষয়ের ক্ষতিকর দিকগুলো দেখানো হয়। ভিডিও চিত্র দেখে শাম্মী ও তার বান্ধবীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা এখন থেকে আর এ কাজগুলো করবে না এবং অন্যরা যাতে এ কাজগুলো না করে সেজন্য উৎসাহিত করবে।
ক. বন-জঙ্গল ধ্বংস করার ফলে কোনটি অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে?
খ. মানুষ কীভাবে পরিবেশগত উদ্বাস্তু হয়ে পড়ছে?
গ. ভিডিও চিত্রটি দ্বারা কোন বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত সচেতনতামূলক কাজ ছাড়াও তারা আরও কাজ করতে পারে বলে কি তুমি মনে কর? উত্তরের সপক্ষে তোমার মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : লিটুদের বাড়ির পেছনের পুকুরটি ভরাট করে ছোট চাচার বাড়ি করা হয়েছে। মাছ ধরা, সাঁতার কাটা বন্ধ হয়ে যাবে বলে লিটুর মন খুব খারাপ। বিদ্যুৎ সংযোগে অসুবিধা হচ্ছিল বলে দুটি আম গাছও কাটা পড়ছে।
ক. বাতাসের উষ্ণতা বৃদ্ধিকারী একটি গ্যাসের নাম লেখ।
খ. বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে কী হয়?
গ. নিজের খাবার, পোশাক নির্বাচনে ও ব্যবহারে পরিবেশের কথা বিবেচনা করব ব্যাখ্যা কর।
ঘ. পরিবেশগত সমস্যা প্রতিরোধে ও নিয়ন্ত্রণে শিশুরা কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে? তোমার মতামত উপস্থাপন কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক সচেতনতামূলক ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয় সাদিয়ার স্কুলে। এতে গাছ কাটা; যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করা বা ময়লা ফেলা; রাস্তাঘাটে থুথু ফেলা প্রভৃতি বিষয়ের ক্ষতিকর দিকগুলো দেখানো হয়। ভিডিও চিত্র দেখে সাদিয়া ও তার বান্ধবীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা এখন থেকে আর এ কাজগুলো করবে না।
ক. প্রকৃতির মূল উপাদান কয়টি?
খ. মানুষ কীভাবে পরিবেশগত উদ্বাস্তু হয়ে পড়ছে?
গ. ভিডিও চিত্রটি দ্বারা কোন বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর, উক্ত সচেতনতামূলক কাজ ছাড়া তারা আরও কাজ করতে পারে? মতামত দাও।
উপরে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post