কোর্সটিকায়, ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিটি বইয়ের সমাধান এর পাশাপাশি ডিজিটাল প্রযুক্তি বইয়ের সমাধানও দেওয়া শুরু হয়েছে। কোর্সটিকায় আজকে ৯ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি ৩য় অধ্যায় সেশন ২ আলোচনা করা হবে। আলোচনা শেষে তোমাদের একটি ক্লাস দেওয়া হবে। ক্লাসে নাগরিক সেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সেশনে থাকা কাজগুলো সম্পর্কে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য আজকে ডিজিটাল প্রযুক্তি বইয়ের একটি সেশন আলোচনা করা হলো। এখানে, বিস্তর ও সহজভাবে সেশনটি তুলে ধরা হয়েছে। সেই সাথে তোমরা পেয়ে যাচ্ছো একটি ক্লাস। ৯ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি বইয়ের প্রতিটি সেশনের সমাধান এভাবে পড়লে তোমরা তোমাদের পাঠ্যবই সম্পর্কে বিস্তর ধারণা লাভ করতে পারবে।
৯ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি ৩য় অধ্যায় সেশন ২
আগের সেশনে আমরা দেখেছি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিক সেবা কতটা সহজ হয়। সহজ হওয়ার কারণ হলো আমরা জানতে পারছি যে আমরা কীভাবে একটি সেবার জন্য আবেদন করতে পারি, কীভাবে সেবাটি পাব, আবেদন করার পর সেবাটি কোন পর্যায়ে আছে ইত্যাদি। তার মানে সেবা সম্পর্কিত সকল তথ্য ও ‘কাজ আমাদের কাছে খুবই স্বচ্ছ। শুধু তাই নয় সেবা সম্পর্কিত যে কোনো তথ্য আমরা সহজেই জানতে পারছি। সেবা প্রদানকারী সংস্থাও আমাদের জানিয়ে দিচ্ছে কীভাবে আমরা সেবাটি সহজে পেতে পারি। অর্থাৎ ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে নাগরিক সেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হচ্ছে।
স্বচ্ছতা: সাধারণভাবে স্বচ্ছতা বলতে নাগরিকের জন্য কোনো সেবা দিতে বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটা জানার অধিকার বোঝায়। এভাবেও বলা যায় যে স্বচ্ছতা হলো একজন নাগরিক যে সেবা দাবি করছেন বা পাবেন তার সকল তথ্য প্রবাহ অবাধ করা এবং তথ্য জানার অধিকার উন্মুক্ত করা। এই তথ্য প্রবাহ দেশের সকল স্তরের জনগণের কাছে সহজবোধ্য করা এবং বিভিন্ন মাধ্যমে সকলের কাছে পৌছানো নিশ্চিত করার জন্য আইনও রয়েছে। তাই ডিজিটাল মাধ্যমে সকল নাগরিকের কাছে সকল সেবা পৌছানোর জন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে সুযোগ রাখা হয়েছে।
জবাবদিহিতা: সকল প্রতিষ্ঠান নাগরিকের নিকট এবং সার্বিকভাবে জনসাধারণের নিকট তাদের কাজকর্মের জন্য দায়বদ্ধ থাকবে এবং জবাবদিহি করবে। যে প্রতিষ্ঠান যে সেবা দিবে তা সকল নাগরিকের জন্য সমানভাবে দিবে এবং এজন্য এ প্রতিষ্ঠানের সকলে সেবার আবেদনকারীর কাছে দায়বদ্ধ। যিনি সেবা নিতে আসবেন তার সকল ধরনের সেবা দুত কীভাবে নিষ্পত্তি করা যায় সেজন্য ওঁ প্রতিষ্ঠানের সকলে নিয়োজিত। এজন্য সেবা নিতে আসা ব্যক্তির আবেদন কোন অবস্থায় আছে এবং কখন তা সম্পন্ন করে তা বুঝিয়ে দিবে, তার জন্য প্রতিষ্ঠানের দায়িত্প্রাপ্ত ব্যক্তি জবাবদিহি করতে বাধ্য। ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সকল নাগরিকের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এখন আরও সহজ হয়েছে।
দিনিয়াতের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে আগামী মাসেই। যেহেতু এখনো তার বয়স আঠারো হয়নি, তাই তার মাকেই অনলাইনে একাউন্ট খুলে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হচ্ছে। একটি একাউন্ট থেকে একাধিক পাসপোর্টের আবেদন করা যায়, তাই তার বোন আর মায়ের পাসপোর্টের আবেদনও একই সাথে করা হবে।
শুরুতে দিনিয়াতের মা ওয়েবসাইটে দেওয়া নির্দেশনাগুলো ভালোমতো পড়ে নিলেন। ই-পাসপোর্টের জন্য কী কী তথ্য লাগবে তা আগেই জেনে নেওয়ায় অনলাইন আবেদনের আগেই তিনি সকল তথ্য হাতের কাছেই রাখলেন। এজন্য দিনিয়াতের মা ধাপে ধাপে সকল তথ্য পূরণ করে নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন জমা দিলেন। দিনিয়াত খুবই অবাক হলো যে এখন রাতের বেলায়ও তার মা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি জমা দিলেন যেটা পাঁচ বছর আগেও নির্দিষ্ট ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ভিড়ের মধ্যে তার বাবাকে জমা দিতে হয়েছিল। আরও ভালো লাগল যে তার মায়ের মোবাইলে অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়ার সাথে সাথে একটি মেসেজে জানিয়ে দেওয়া হলো যে কোন দিন ও কখন তার ই-পাসপোর্টের ছবি তোলার জন্য যেতে হবে।
অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়ার সকল তথ্য যাচাই-বাছাই করার পর তাদের বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের জন্য অপেক্ষা করতে বলা হলো। তবে একই দিনে অনেক আবেদনকারী বায়োমেট্রিক্স তথ্য দেওয়ার জন্য পাসপোর্ট অফিসে আসায় অনেক ভিড় ছিল এবং নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে তাদের তথ্য দেওয়ার জন্য ডাক পড়ে। এজন্য কাজ শেষে দিনিয়াত কিছুটা ক্লান্তও হয়ে পড়ে। পাসপোর্ট অফিসে সব বায়োমেট্রিক্স তথ্য দেওয়া সম্পন্ন করে বাসায় ফিরে আসতেই ম্যাসেজে জানতে পারল কবে কোথা থেকে তাদের পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে।
নির্দিষ্ট দিনে দিনিয়াতের মা পাসপোর্ট অফিসে আবেদন জমার রশিদ জমা দিলে তাকে একটি সিরিয়ালের টোকেন দেওয়া হলো। নির্দিষ্ট কাউন্টার হতে তার মায়ের সিরিয়াল অনুযায়ী ডাক এলে তিনি দিনিয়াত ও তার বোনকে নিয়ে কাউন্টার হতে পাসপোর্ট সংগ্রহ করলেন। পাসপোর্ট গ্রহণ করতেও দিনিয়াতকে অনেক ভিড় ঠেলে সামনে যেতে হয়েছে, তাই বাসায় এসে সে খুব ক্লান্ত হয়ে যায়।
ই-পাসপোর্ট: বাংলাদেশের সকল নাগরিক এখন ই-পাসপোর্ট পাচ্ছেন। ই-পাসপোর্ট হলো একটি বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট যাতে একটি ইলেকট্রনিক চিপ থাকে। এই ইলেকট্রনিক চিপের মধ্যে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষিত থাকে যেখানে পাসপোর্টধারীর পরিচয় প্রমাণের জন্য ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের ই-পাসপোর্টে ব্যক্তির ছবি, ফিঙারপ্রিন্ট ও চোখের মণির বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের জাতীয় পরিচয়পত্রের সকল তথ্য ও ১৮ বছর বয়সের নিচের ব্যক্তির জন্য জন্ম নিবন্ধনের তথ্য পাসপোর্টে দেওয়া হয়।
উপরের ঘটনায় একটি ই-পাসপোর্ট করতে প্রতিটি ধাপে একজন নাগরিকের সেবা পাওয়ার জন্য যেসব স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে সেগুলো হলো–
- যে কোনো স্থান হতে পাসপোর্ট করার জন্য খুবই কার্যকরী একটি ওয়েবসাইটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে;
- অনলাইনে আবেদন করার নির্দেশনা খুব স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে; ইত্যাদি
আবার যেসব জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে সেগুলো হলো–
- আবেদনকারীর আইডি দিয়ে সাইনইন করে প্রতিটি ধাপের অগ্রগতি জানতে পারেন;
- যে কোনো সহায়তার জন্য যোগাযোগ করা যায়; ইত্যাদি
আমাদের ওয়েবসাইটে তোমার প্রয়োজনীয় সাবজেক্টের প্রশ্নের উত্তর না পেলে কোর্সটিকা ফেসবুক পেজে ইনবক্স করতে পারো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post