কোর্সটিকায় অন্যান্য বছরের মতো এবারও ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিটি বইয়ের সমাধান দেওয়া শুরু হয়েছে। তোমাদের জন্য আজকে ৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন বই ৩য় অধ্যায় সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হবে। বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের এই অধ্যায়টি নাম হচ্ছে– আমার বংশলতিকা। এখানে আমার বংশলতিকা অধ্যায় আলোচনার পাশাপাশি অধ্যায়ে থাকা কাজগুলো সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে।
আলোচনা শেষে তোমরা আমার বংশলতিকা অধ্যায় সমাধান PDF পেয়ে যাবে। এই অধ্যায়ে দেওয়া কঠিন বিষয়গুলোকে পিডিএফে সহজভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সেই সাথে এই অধ্যায়ে যেসকল কাজ দেওয়া হয়েছে সেসকল কাজের সমাধানও তোমরা পিডিএফে পেয়ে যাবে। ৯ম শ্রেণি বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের সমাধান এভাবে পড়লে বিজ্ঞান অনুশীলন বইটি তোমাদের কাছে সহজ হতে সহজতর হয়ে উঠবে।
৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন বই ৩য় অধ্যায় সমাধান
পরিবারের সকল সদস্যের সাথে আমাদের মিল হয় না, আবার অনেকের সাথে কী অদ্ভুত মিল! এই যে আমাদের কারো চেহারার কোনো বৈশিষ্ট্য, কিংবা হাঁটা চলা, বাবা-মা-নানা কারো না কারো সাথে মিলে যায়; এর রহস্য কী? তা উদ্ঘাটনই এবারের কাজ।
✎ তোমার পারবারে সদস্য কতজন? কে কে আছে তোমাদের পারবারে?
✎ এই শিখন অভিজ্ঞতার শুরুতেই একটা মজার কাজ করা যাক, সেটা হলো সবাই শুরুতে নিজ নিজ ফ্যামিলি ট্রি তৈরি করবে। ফ্যামিলি ট্রি বা বংশলতিকা কী তা কি তোমরা জানো? না জেনে থাকলে শিক্ষক বা অন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জেনে নাও।
✎ এবার নিজের বংশলতিকা ফ্যামিলি ট্রি আকারে বানাও। ফ্যামিলি ট্রিতে তোমার নানা-নানি, দাদা- দাদি থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী পর্যন্ত অন্তত তিন প্রজন্মের বর্ণনা থাকলে ভালো।
✎ ক্লাসের অন্যদের ফ্যামিলি ট্রি ঘুরে ঘুরে দেখো, তোমার নিজের ফ্যামিলি ট্রি সবাইকে দেখাও।
✎ এবার একটু ভেবে দেখ, এই তিন প্রজন্মের পরিবারের সদস্যদের চেহারার বৈশিষ্ট্য কার কেমন? নিচের ছকের মতো করে দাদা-দাদি, নানা-নানি থেকে শুরু করে তোমার নিজের এবং তোমার ভাই-বোন পর্যন্ত পরিবারের সকল সদস্যদের বিভিন্ন অঙ্গের বৈশিষ্ট্যের একটি চার্ট তৈরি কর।
ছকে পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন শারীরিক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতে পারো; উদাহরণ হিসেবে বলা যায়: চোখের আকৃতি, চোখের বর্ণ, নাকের গড়ন, গলার স্বর, পায়ের আকার, চুলের আকার ও ধরন, চুলের বর্ণ, ইত্যাদি। নিচের চার্টটি নমুনা মাত্র,তোমরা চাইলে অন্য কোনোভাবেও চার্টটি তৈরি করতে পার।
✎ শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে যেসব তথ্য পেয়েছে, সেগুলো পাশের সহপাঠীর সঙ্গে আলাপ করতে বলুন। শিক্ষার্থী নিজের কোন কোন অঙ্গের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের একই অঙ্গের বৈশিষ্ট্যের মিল খুঁজে পেয়েছে, তা পাশের সহপাঠীকে জানাতে বলুন।
✎ তোমার পরিবারের যেসকল সদস্যের একটি নির্দিষ্ট অঙ্গের বৈশিষ্ট্য একইরকম, প্রথম সেশনে তৈরি করা বিভিন্ন অঙ্গের বৈশিষ্ট্যের চার্ট থেকে তাদের পৃথক করে আলাদা একটি চার্ট তৈরি কর।
✎ এরকম বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের জন্য একটি করে পৃথক চার্ট তৈরি করা যেতে পারে চার্ট হয়ে গেলে ক্লাসের বাকিদের দেখাও অন্যদের চার্ট দেখে তোমার মতামত দাও।
✎ এবার একটু ভেবে দেখো, পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের কোনো একটি নির্দিষ্ট অঙ্গের বৈশিষ্ট্য একইরকম কেন হয়? আবার কেন আমরা কেউই আমাদের বাবা বা মা-একেবারে হুবহু কারো মতই হই না?
✎ ছোট দলে বসে জীবের বৈশিষ্ট্য কীভাবে এক প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মে প্রবাহিত হয় তা জানার জন্য অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের জিনতত্ত্ব ও বংশগতিবিদ্যা অধ্যায় থেকে মেন্ডেলের গবেষণা ও জীবের বৈশিষ্ট্য নির্বাচন অংশ পড়ে নাও। পড়ার পর দলের বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা কর। শিক্ষকসহ ক্লাসের বাকিদের সাথেও আলোচনা কর।
✎পরিবারের একাধিক সদস্যদের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট অঙ্গের বৈশিষ্ট্য একইরকম হয় কিন্তু আরও অনেক অঙ্গ আছে যেগুলোর বৈশিষ্ট্য একইরকম হয় না কেন? এটা বোঝার জন্য অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের জিনতত্ত্ব ও বংশগতিবিদ্যা অধ্যায় থেকে জীবে প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ এবং মেন্ডেল-এর মতবাদ (মেন্ডেল-এর দুটি সূত্র) অংশ পড়ে নাও। পড়ার পর দলের বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা কর।
✎ মেন্ডেলের সূত্র দুইটি কি তুমি কি ছবির সাহায্যে তোমার বন্ধুদের কাছে ব্যাখ্যা করতে পারবে? তোমাদের দলের পক্ষ থেকে একটা বড় কাগজ বা পোস্টারে ধারাবাহিক ছবির মাধ্যমে পুরো বিষয়টি তুলে ধরো। শর্ত হল, যে ছবিটি দেখবে সে যেন কোনো মৌখিক ব্যাখ্যা ছাড়াই বিষয়টি বুঝতে পারে।
✎ সব দল তাদের করা কাজ ক্লাসরুমের বিভিন্ন দেয়ালে ঝুলিয়ে দাও৷ ঘুরে ঘুরে দেখো এবং মতামত দাও, অন্য দলের পোস্টার দেখে বিষয়টি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে কিনা।
✎ মেন্ডেল মটরশুটির ওপর তার পরীক্ষাটি করেছিলেন। মটরশুঁটি বেছে নেয়ার কারণ তোমরা ইতোমধ্যেই জেনেছ। এখন ভেবে দেখো, বাংলাদেশে কোনো বিজ্ঞানী যদি একই পরীক্ষা করতে চাইতেন, মটরশুঁটি ছাড়া আর কোন উদ্ভিদ দিয়ে পরীক্ষণটি করতে সুবিধা হতো?
✎ আগের সেশনগুলোতে তোমরা জিনতত্ত্ব ও বংশগতিবিদ্যা সম্পর্কে জেনেছ। এখন বল দেখি, তোমার শারীরিক যে বৈশিষ্ট্যসমূহ তোমার দাদা, মা, বা নানির কাছ থেকে এসেছে, সেই বৈশিষ্ট্যসমূহ কীভাবে এক প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মে আসে? জীবের এই বৈশিষ্ট্যগুলো কোন ধরনের পদার্থের মধ্য দিয়ে বাহিত হয়? কোন কোন জৈব রাসায়নিক পদার্থ জীবের মধ্যে জীবনের বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলে, আবার বংশপরম্পরায় এসব বৈশিষ্ট্য বহন করে?
✎ অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের জৈব অণু অধ্যায়টির বিভিন্ন অংশ একে একে পড়ে নাও । পড়ার পর দলে আলোচনা করো। কোনো জায়গায় বুঝতে অসুবিধা হলে শিক্ষকের সহায়তা নাও।
✎ বিভিন্ন ধরনের জৈব অণু, এদের গঠন ও ভূমিকা, প্রোটিন সংশ্লেষ প্রক্রিয়া, জৈব অণুসমূহের পারস্পরিক সম্পর্ক ইত্যাদি সম্পর্কে তো জানলে। ইতোমধ্যে তোমরা উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষ সম্পর্কেও জেনেছ। নিচের ফাঁকা জায়গায় উদ্ভিদ অথবা প্রাণী কোষের চিত্র অঙ্কন করে জৈব অণুসমূহের সম্ভাব্য স্থান চিহ্নিত করো। কোষের ছবি আঁকার জন্য চাইলে তোমাদের ছোট ভাইবোনের বিজ্ঞান বই দেখে নিতে পারো।
✎ এই বিভিন্ন জৈব অণু সম্পর্কে জানতে গিয়ে তোমরা কি এদের গঠনে কার্বনের ভূমিকা খেয়াল করেছ? কার্বন যে পৃথিবীতে জীবনের ভিত্তি তা কি বুঝতে পেরেছ?
✎ এবার একটু ভেবে দেখো তো, কার্বন নেই এমন কোনো গ্রহে জীবনের উৎপত্তি হলে অন্য কোন মৌল জীবনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করতে পারত? তোমার দলের অন্য সদস্যদের সাথে এই প্রশ্নটি নিয়ে আলোচনা করে দেখো এখানে মাথায় রেখো, কার্বন কোন ধরনের রাসায়নিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়। প্রয়োজনে পর্যায় সারণি ও রাসায়নিক বন্ধনের অধ্যায় আরেকবার দেখে নাও।
✎ তোমরা বিভিন্ন ধরনের জৈব অণু সম্পর্কে জেনেছ। এই সবগুলোই জীবের বিভিন্ন ধরনের শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রমে অংশ নেয় ও শরীরকে টিকিয়ে রাখে ৷ কিন্তু আমাদের বৈশিষ্ট্যসমূহ সুনির্দিষ্টভাবে যে জৈব অণুর মাধ্যমে বংশপরম্পরায় প্রবাহিত হয় সেটি হলো নিউক্লিয়িক অ্যাসিড, আরো নির্দিষ্ট করে বললে ডিএনএ বা ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিয়িক অ্যাসিড।
ডিএনএ বা ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিয়িক অ্যাসিড কোষের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য স্থায়ী রাসায়নিক অণু। এটি কোষের বা সামগ্রিকভাবে জীবের সমস্ত জৈবিক কাজ ও বংশগত বৈশিষ্ট্য ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করে। কয়েক ধরনের ভাইরাস ছাড়া সব রকমের সজীব কোষেই ডিএনএ থাকে।
✎ দলে বসে ডিএনএর গঠন সম্পর্কে আরেকটু ভালভাবে জেনে নাও।
✎ তোমরা ভাবতে পারো, সত্যিকারের ডিএনএ দেখতে চাইলে বা পরীক্ষা করতে চাইলে অনেক উঁচুমানের গবেষণাগার দরকার সত্যি বলতে কি, তোমরা যারা বড় হয়ে জীববিজ্ঞানের বড় বড় গবেষণা করবে তাদের ক্ষেত্রে কথাটা সত্যি । তবে তুমি জানো কি, একেবারে হাতের কাছে পাওয়া যায়, এমন উপকরণ দিয়েই তুমি সত্যি সত্যি ডিএনএ সংশ্লেষণ করে দেখতে পারো, এমনকি অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়াই!
নিচে তার একটা বর্ণনা দেয়া হলো:
DNA-সংশ্লেষণ
ই পরীক্ষায় আমরা একটা কলার ডিএনএ বের করে দেখার চেষ্টা করব। (মানুষ বা বড় বড় জীবজন্তুর বদলে কলার ডিএনএ দেখবে শুনে আবার হতাশ হয়ে যেওনা! তুমি কি জানো, কলার ডিএনএর প্রায় ৬০% হুবহু মানুষের মতই?
যা যা লাগবে:
☑ দুইটি স্বচ্ছ কাচের গ্লাস
☑ মুখ আটকানো প্লাস্টিকের ব্যাগ বা বড় কোনো পাত্র
☑ কলা
☑ ছুরি ও চামচ
☑ ছাঁকনি, পাতলা সুতি কাপড়
☑ প্রচলিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা যেকোনো অ্যালকোহল
☑ ৪ চা চামচ লবণ
☑ ২ চা চামচ তরল ডিশওয়াশিং সাবান
☑ কুসুম গরম পানি
☑ কাঠি
কাজের বর্ণনা:
☑ প্রথমেই কলা পিষে একেবারে মিহি করে পেস্ট করে নাও।
☑ আধা গ্লাস কুসুম গরম পানিতে লবণ নিয়ে ভালভাবে গুলিয়ে নাও।
☑ একই পানিতে তরল ডিশওয়াশিং সাবান গুলিয়ে মিশিয়ে নাও।
☑ প্লাস্টিক ব্যাগ বা বড় পাত্রে কলার পেস্টের সাথে এই পানির মিশ্রণ ভালভাবে মিশিয়ে নাও।
☑ পাতলা সুতি কাপড়ে এই মিশ্রণ ভালভাবে ছেঁকে নাও ৷ ভারী মিশ্রণ হওয়ায় এখান থেকে তরল অংশটা ফিল্টার হয়ে বের হতে সময় লাগবে, সেজন্য এটা একভাবে কিছুক্ষণ রেখে দাও।
☑ ছেঁকে নেয়া তরল একটা গ্লাসে ঢেলে নাও ভালো হয় যদি কালো কোনো ব্যাকগ্রাউন্ডের সামনে (যেমন- চকবোর্ড) গ্লাসটাকে রেখে দিতে পারো, তাহলে পর্যবেক্ষণ করতে সুবিধা হবে।
☑ গ্লাসের এক কিনার দিয়ে ধীরে ধীরে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ঢেলে দাও। গ্লাসের ভেতরে কোনো পরিবর্তন লক্ষ করছ? সাদা সুতার মত কিছু কি চোখে পড়ছে? একটা কাঠি দিয়ে খুব সাবধানে ডিএনএ টা তুলে আনার চেষ্টা করো তো।
☑ হ্যাঁ, এই সুতার মত বস্তুটিই কলার ডিএনএ! আর এই সুক্ষ্ম বস্তুটির মধ্যেই কলাটার বৈশিষ্ট্য কেমন হবে তার সকল সূত্র লুকিয়ে আছে!
✎ ডিএনএ সংশ্লেষণ তো হল। এবার ডিএনএর একটা মডেল তৈরি করলে কেমন হয়?
উপরে ৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন বই ৩য় অধ্যায় সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হলো। আমার বংশলতিকা অধ্যায়টি সম্পর্কে তোমরা যাতে সহজে বুঝতে পার তার জন্য এই অধ্যায়টি তোমাদের সামনে সহজভাবে তুলে ধরার পাশাপাশি আমরা দিচ্ছি সমস্যা সমাধান পিডিএফ। এই অধ্যায়ে দেওয়া কঠিন বিষয়গুলো আলোচনার পাশাপাশি বাড়ির কাজের সমাধানগুলো তোমরা সেখানে পেয়ে যাবে।
আমাদের ওয়েবসাইটে তোমার প্রয়োজনীয় সাবজেক্টের প্রশ্নের উত্তর না পেলে কোর্সটিকা ফেসবুক পেজে ইনবক্স করতে পারো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post