কোর্সটিকায় অন্যান্য বছরের মতো এবারও ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিটি বইয়ের সমাধান দেওয়া শুরু হয়েছে। তোমাদের জন্য আজকে ৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন বই ৭ম অধ্যায় সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হবে। বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের এই অধ্যায়টি নাম হচ্ছে– কৃষি ও পরিবেশ। এখানে কৃষি ও পরিবেশ অধ্যায় আলোচনার পাশাপাশি অধ্যায়ে থাকা কাজগুলো সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে।
আলোচনা শেষে তোমরা কৃষি ও পরিবেশ অধ্যায় সমাধান PDF পেয়ে যাবে। এই অধ্যায়ে দেওয়া কঠিন বিষয়গুলোকে পিডিএফে সহজভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সেই সাথে এই অধ্যায়ে যেসকল কাজ দেওয়া হয়েছে সেসকল কাজের সমাধানও তোমরা পিডিএফে পেয়ে যাবে। ৯ম শ্রেণি বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের সমাধান এভাবে পড়লে বিজ্ঞান অনুশীলন বইটি তোমাদের কাছে সহজ হতে সহজতর হয়ে উঠবে।
৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন বই ৭ম অধ্যায় সমাধান
আমাদের চারপাশে হাজার জাতের উদ্ভিদ, প্রাণী, অণুজীব। এদের অনেকে প্রাকৃতিক ভাবেই ক্রমে ক্রমে বিবর্তিত হয়ে নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে হাজির হও, আবার আমরা কৃত্রিম নির্বাচনের মাধ্যমে অনেক প্রজাতির বংশধারা টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করি সচেতন বা অসচেতনভাবে। আর এর সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হল কৃষি। এই অভিজ্ঞতায় এই বিষয়গুলোই আলোচ্য।
✎ তোমরা কি হরিপদ কাপালীর নাম শুনেছ? হরিপদ কাপালী ছিলেন ঝিনাইদহ এলাকার একজন সাধারণ চাষি। তিনি তাঁর ক্ষেতে ইরি ধান লাগিয়েছেন, সেই ক্ষেতের ধান পরীক্ষা করতে করতে হঠাৎ করে দেখলেন, কিছু গাছ তুলনামূলকভাবে বড়ো এবং সেখানে ধানের ফলন হয়েছে বেশি। হরিপদ কাপালী বিচক্ষণের পরিচয় দিয়ে সেই ধানগুলো অন্য ধানের সাথে মিশিয়ে না ফেলে আলাদা করে ফেললেন।
তার বীজকে আলাদা করে করে সেগুলো আবার নতুন করে লাগালেন, তিনি দেখতে চাইলেন আসলেও সেগুলো উচ্চ ফলনশীল কি না। দেখা গেলো সেগুলো বেশ বড়ো হলো এবং অনেক বেশি ধানের ফলন হলো। এর পর হরিপদ কাপালী তাঁর ধানের বীজ অন্যদের বপন করতে দিলেন এবং দেখতে দেখতে সেই এলাকার সকল চাষি উচ্চ ফলনশীল ধান পেতে লাগল!
✎ বিজ্ঞানী হরিপদ কাপালীর এই আবিষ্কারের কথা লোকমুখে অন্যরা জেনে যাওয়ার পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সেগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করে, তাঁর আবিষ্কৃত এই ধানের নাম দেওয়া হয় হরি ধান।
✎ হরিপদ কাপালীর এই ঘটনাটি কৃত্রিম নির্বাচনের একটি ভালো উদাহরণ। কখনও ভেবে দেখেছ, কৃষি কাজের ক্ষেত্রে নতুন নতুন জাত কীভাবে তৈরি হয় কিনা কোন ধরনের ফসলের জাত বেশি টিকে থাকবে তা কীভাবে নির্ধারিত হয়? একটু ভেবে তোমার উত্তর লেখো।
✎ এবার একটু ইতিহাসের দিকে তাকানোর পালা । তোমরা অনেকেই হয়তো জানো মানুষ একসময় যাযাবর ছিল এবং শিকার করে এবং খাবার সংগ্রহ করে জীবন যাপন করতো। এক সময় সেখান থেকে তারা এক জায়গায় থিতু হয়ে খাদ্য উৎপাদন শুরু করে এবং তা কৃষি কাজের মাধ্যমে। কৃষি কাজের ক্ষেত্রেও যেই ধরনের শস্যের ফলন বেশি সেগুলো বাছাই করে এনে তারা তাদের একটা নির্দিষ্ট ভূমিতে রোপন করতো এবং আস্তে আস্তে সেখান থেকে যেগুলো উচ্চ ফলনশীল সেগুলাকে বাছাই করে আরো উচ্চ ফলনশীল জাতের সৃষ্টি হলো। ‘
✎ হরিধান উৎপাদনের ঘটনার সাথে মানুষের সভ্যতার শুরুর দিকের কৃষিকাজের উদ্ভাবনের কোন মিল দেখতে পাচ্ছ কি?
✎ তোমাদের ক্লাসে এমন কোন শিক্ষার্থী আছে কি যার বাবা কোনো না কোনোভাবে কৃষি কাজের সাথে যুক্ত? তাহলে তার কাছ থেকে তার কৃষিকাজের অভিজ্ঞতা শুনে নিতে পারো কীভাবে বীজ বাছাই হয় কীভাবে দুর্বল বা অসুস্থ উদ্ভিদকে সরিয়ে ফেলা হয় এবং সুস্থ উদ্ভিদকে বাঁচিয়ে রাখা হয় সে অভিজ্ঞতা তিনি তোমাদের বর্ণনা করতে পারেন।
✎ এখন একটা অন্য প্রশ্ন। কৃষিকাজের ক্ষেত্রে মানুষ নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে জাত বাছাই করে সুবিধাজনক ফসলের চাষ করছে। এখন যদি মানুষ এরকম বাছাই না করে, কোনোরকম সিদ্ধান্ত না নেয় তাহলে কোনো একটা প্রাকৃতিক সিস্টেমে কোন উদ্ভিদ টিকে থাকবে আর কোন উদ্ভিদ টিকে থাকবে না সেটা কীভাবে নির্ধারিত হবে? ভেবে দেখো।
✎ আগের দিনের আলোচনা মনে আছে? প্রশ্ন ছিল, কোনো একটা নির্দিষ্ট এলাকায় কোনো নির্দিষ্ট জীবের সংখ্যা কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে?
✎ অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের বাস্তুতন্ত্র অধ্যায় থেকে বিভিন্ন জীবের নিবিড় সহাবস্থান অংশটুকু পড়ে নাও। দলে আলোচনা করো। এবার ভেবে দেখো, সিম্বিওসিস প্রক্রিয়ার যে তিনটি ধরন বলা হয়েছে তার কোনো উদাহরণ সে তার প্রকৃতিতে দেখতে পায় কি না। দলে আলোচনা করে উত্তর লেখো।
✎ তোমার উত্তর অন্যদের জানাও, অন্যদের উত্তর শুনে নিজেও মতামত দাও।
✎ প্রাকৃতিক কোন সিস্টেমে সজীব উপাদান যেমন থাকে তেমনি বেশকিছু অজীব উপাদানও থাকে। এই সব ধরনের উপাদানের মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে একটা সিস্টেম টিকে থাকে পরিবেশের জৈব এবং অজৈব কী কী উপাদান থাকতে পারে? জৈব উপাদান যেমন স্পষ্টতই বোঝা যায়, অজীব এবং ভৌত উপাদানের ক্ষেত্রে কী কী আসতে পারে? এই বিভিন্ন সজীব এবং অজীব উপাদানদের মধ্যকার সম্পর্কটা কেমন?
✎ একটি প্রাকৃতিক সিস্টেমে সজীব উপাদানের পপুলেশন বা জনসংখ্যা কীভাবে নির্ধারিত হয়? কৃষি কাজের ক্ষেত্রে যেমন আমরা বাছাই করা সজীব উপাদান বা উচ্চ ফলনশীল উদ্ভিদকে বাঁচিয়ে রাখি এবং সংখ্যার বৃদ্ধি করি প্রাকৃতিক সিস্টেমে এই সংখ্যাটা কীভাবে নির্ধারিত হয়? কোন প্রাকৃতিক সিস্টেমে বিভিন্ন সজীব উপাদানের বন্টন কিরকম হয়? এই সেশনে চলো এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা যাক।
✎ দলে বসে অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে পপুলেশন ইকোলজি অংশটুকু পড়ে নাও। দলের সদস্যদের সাথে আলোচনা করে প্রশ্নগুলোর উত্তর নিচে লিখে রাখো। একটি প্রাকৃতিক সিস্টেমে সজীব উপাদানের পপুলেশন বা জনসংখ্যা কীভাবে নির্ধারিত হয়?
✎ কোন প্রাকৃতিক সিস্টেমে বিভিন্ন সজীব উপাদানের বন্টন কীরকম হয়?
✎ ক্লাসের অন্যদের আলোচনা শোনো, শিক্ষকসহ সবার সাথে আলোচনার মাধ্যমে তোমার নিজের বক্তব্যটা মিলিয়ে নাও।
✎ সেশন শেষ করার আগে আরেকটা প্রশ্ন থাকলো, তা হলো প্রাকৃতিক সিস্টেমে মানুষ নামক সজীব উপাদানের ক্যারিং ক্যাপাসিটি কোন কোন ফ্যাক্টর দিয়ে নির্ধারিত হয়?
✎ আগের দিনের প্রশ্নটি দিয়েই আজকের সেশন শুরু করা যাক।
✎ বাস্তুতন্ত্রের খাদ্যচক্র বা খাদ্য শৃঙ্খল সম্পর্কে কি তোমাদের ধারণা আছে? অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে এই বিষয়গুলো জেনে নাও। এবার ভেবে দেখো, তোমাদের এলাকায় কী কী ধরনের জীব রয়েছে এবং এই এলাকায় খাদ্যজালের ডায়াগ্রাম টা কেমন হবে? দলে আলোচনা করে নিচের ফাঁকা জায়গায় ডায়াগ্রামটা এঁকে রাখো।
✎ তোমার বাস্তুতন্ত্রের ডায়াগ্রাম অন্যদের দেখাও। শিক্ষকসহ সবার মতামত নাও।
✎ এবার আসা যাক বাস্তুতন্ত্রের পুষ্টি ও শক্তির প্রবাহ বিষয়। অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে বাস্তুতন্ত্রের প্রাকৃতিক শক্তির প্রবাহ কীভাবে চলতে থাকে তা পড়ে নাও, এই সূত্র ধরে শক্তি পিরামিডের ধারণা কি ব্যাখ্যা করতে পারবে?
✎ ক্লাসের সবার সাথে আলোচনা করো, প্রয়োজনে শিক্ষকের সহায়তা নাও।
✎ বাস্তুতন্ত্রের সজীব উপাদান গুলোর পপুলেশন কীভাবে নির্ধারিত হয় তা নিয়ে তো আলোচনা হলো এবার প্রশ্ন হলো, বাস্তুতন্ত্রের অজীব উপাদানগুলো কীভাবে ভারসাম্যের মধ্যে থাকে?
✎ অজীব উপাদানের মধ্যে মূল উপাদান কী কী থাকতে পারে? তোমরা অনেকেই জানো, আমাদের পরিবেশের মূল উপাদানের মধ্যে পানি, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ইত্যাদি অন্যতম। পানি, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন এই উপাদানগুলো কীভাবে চক্রাকারভাবে পরিবেশে আবর্তিত হয় এবং এদের মোট পরিমাণ একটা ভারসাম্যের মধ্যে থাকে তা অনুসন্ধানী বই থেকে জেনে নাও।
✎ পড়া হয়ে গেলে প্রতিটি দলের কাজ হলো ডায়াগ্রাম এর মাধ্যমে এই চক্রগুলো দেখিয়ে ব্যাখ্যা করা। সব দলকেই এক্ষেত্রে তিনটা উপাদান নিয়েই কাজ করতে হবে তবে প্রত্যেক দল লটারির মাধ্যমে যে কোনো একটা উপাদানের চক্র এবং এর সক্রিয় প্রক্রিয়াগুলো উপস্থাপন করবে।
✎ প্রাকৃতিক সিস্টেমে পপুলেশন ইকোলজি, বাস্তুতন্ত্র, খাদ্য শৃঙ্খল, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তো অনেক আলোচনা হলো। এখন একটু ভেবে দেখো, এই খাদ্যজালে মানুষের অবস্থান কোথায়? মানুষ কীভাবে এই বেশিরভাগ জীবের থেকে আলাদা?
✎ তোমার উত্তর লিখে রাখো।
✎ মানুষ তার নিজস্ব প্রয়োজনে বিভিন্ন জীবের প্রজাতিকে বাঁচিয়ে রাখে এমনকি জিন তত্ত্বের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন জীবের প্রজাতির উদ্ভাবন ঘটায়। প্রকৃতির উপরে তার প্রভাব কেমন হতে পারে?
✎ একথা অনস্বীকার্য যে মানুষ এই মুহূর্তে পৃথিবী নামক গ্রহের সবচেয়ে ক্ষমতাবান প্রাণী। এই কারণে মানুষকে তার নিজের প্রজাতি টিকিয়ে রাখার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা যেমন নিশ্চিত করতে হয়, একইভাবে পরিবেশের অন্যান্য সজীব এবং অজীব উপাদানের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব ও তার উপরেই বর্তায়।
আমরা নিজেদের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য যখন কোনো নির্দিষ্ট শস্যকে আবাদ করি তখন পরিবেশের অন্যান্য উপাদানের ওপরে দীর্ঘ মেয়াদে এই কৃষি প্রক্রিয়ার কী ধরনের প্রভাব পড়বে তা বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত । কী কী পদক্ষেপ নিলে বা মানুষের ভূমিকা কেমন হলে পরিবেশের প্রতি এই দায়িত্ব মানুষ সর্বতোভাবে পালন করতে পারবে?
✎ দলে আলোচনা করো এবং কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিচের ফাঁকা জায়গায় লিখে রাখো।
✎ শিক্ষকসহ ক্লাসের সবার সাথে আলোচনা করো। তোমাদের পরামর্শগুলো স্কুলের সবার কাছে পৌঁছে দেবার জন্য কী ব্যবস্থা নেয়া যায়?
উপরে ৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন বই ৭ম অধ্যায় সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হলো। কৃষি ও পরিবেশ অধ্যায়টি সম্পর্কে তোমরা যাতে সহজে বুঝতে পার তার জন্য এই অধ্যায়টি তোমাদের সামনে সহজভাবে তুলে ধরার পাশাপাশি আমরা দিচ্ছি সমস্যা সমাধান পিডিএফ। এই অধ্যায়ে দেওয়া কঠিন বিষয়গুলো আলোচনার পাশাপাশি বাড়ির কাজের সমাধানগুলো তোমরা সেখানে পেয়ে যাবে।
আমাদের ওয়েবসাইটে তোমার প্রয়োজনীয় সাবজেক্টের প্রশ্নের উত্তর না পেলে কোর্সটিকা ফেসবুক পেজে ইনবক্স করতে পারো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post