কোর্সটিকায় অন্যান্য বছরের মতো এবারও ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিটি বইয়ের সমাধান দেওয়া শুরু হয়েছে। তোমাদের জন্য আজকে ৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন বই ১ম অধ্যায় সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হবে। বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের এই অধ্যায়টি নাম হচ্ছে– খেলার মাঠে বিজ্ঞান। এখানে খেলার মাঠে বিজ্ঞান অধ্যায় আলোচনার পাশাপাশি অধ্যায়ে থাকা কাজগুলো সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে।
আলোচনা শেষে তোমরা খেলার মাঠে বিজ্ঞান অধ্যায় সমস্যা সমাধান PDF পেয়ে যাবে। এই অধ্যায়ে দেওয়া কঠিন বিষয়গুলোকে পিডিএফে সহজভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সেই সাথে এই অধ্যায়ে যেসকল কাজ দেওয়া হয়েছে সেসকল কাজের সমাধানও তোমরা পিডিএফে পেয়ে যাবে। ৯ম শ্রেণি বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের সমাধান এভাবে পড়লে বিজ্ঞান অনুশীলন বইটি তোমাদের কাছে সহজ হতে সহজতর হয়ে উঠবে।
৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন বই ১ম অধ্যায় সমাধান
পানি যেমন আমাদের জীবনধারণে অপরিহার্য একটি উপাদান, বাতাসও কিন্তু তাই। আমরা বাতাসের মধ্যেই বসবাস করি, ক্রমাগত নিঃশ্বাস নেই। দেখতে না পেলেও, বাতাসের প্রবাহ কিন্তু আমরা ঠিকই অনুভব করি। ঝড়ের সময় আমরা টের পাই অদৃশ্য বাতাসের দানবীয় শক্তি। আচ্ছা, বাতাসেরও কি দূষণ হতে পারে? এ থেকেও কি ছড়াতে পারে বিভিন্ন রোগ? চলো, একটু ভেবে দেখি!
✎ বাতাসের মধ্যেই আমাদের বসবাস। সত্যি বলতে বাতাস, আরও স্পষ্ট করে বললে অক্সিজেন ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত টিকতে পারি না। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে আমরা বাতাস থেকে অক্সিজেন নেই। এখন একটু ভেবে দেখো তো সব জায়গায় দম নিতে কি একই রকম স্বস্তি লাগে? তোমার নিজের এলাকাতেই সব জায়গায় দম নিতে কি একই রকম লাগে?
✎ ৫-৬ জনের ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে যাও। এবার একটু দলে বসে আলোচনা করে দেখো, নিজের এলাকায় কার কোথায় শ্বাস নিতে ভালো লাগে।
✎ তোমরা যখন বাসা থেকে স্কুলে আসো, কিংবা স্কুল থেকে বাসায় যাও, আসা-যাওয়ার পথের রাস্তাটার কথা ভেবে দেখো। তোমার আসার পথে কি পড়ে? বাগান বা নার্সারি যদি থাকে সেখানকার বাতাসে শ্বাস নিতে কেমন লাগে? আবার পথে যদি কোনো ডাস্টবিন বা কলকারখানা পড়ে সেখানে শ্বাস-প্রশ্বাসে কোনো সমস্যা হয় কি না।
✎ তোমরা কি তোমাদের এলাকার ম্যাপ আঁকতে পারবে? এলাকা খুব ভালোভাবে না চিনলেও সমস্যা নেই, সেক্ষেত্রে শুধু বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথের আশপাশের জায়গা চিহ্নিত করেও ম্যাপ আঁকতে পারো। এবারে, ম্যাপের বিভিন্ন অংশ রং করে নাও। যেখান নিশ্বাস নিতে আরাম লাগে সেখানে একরকম রং (যেমন সবুজ হতে পারে), আবার যেখান নিশ্বাস নিতে খারাপ লাগে সেখানে আরেকরকম রং (যেমন লাল হতে পারে) দিয়ে চিহ্নিত করতে পারো। তাহলে নিচের ছকে এঁকে নাও তোমাদের এলাকার ‘বাতাসের মানচিত্র’।
✎ দলের অন্যদের আঁকা বাতাসের মানচিত্র দেখো। তোমার মানচিত্র তাদেরকে দেখাও, তোমাদের এলাকায় কোন জায়গার বাতাসের ধরন কেমন কিছুটা কি বুঝতে পারছ? আজকে বাসায় ফেরার পথে নিশ্বাস নেয়ার বিভিন্ন স্থানের নাম লিখে রেখো।
✎ এখন তোমাদের এলাকার একটা ম্যাপ খুঁজে বের করতে হবে । ইন্টারনেটে খুঁজে দেখতে পারো। অনেক সময় পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এলাকার ম্যাপ পাওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে শিক্ষকের সাহায্য নিতে পারো। ম্যাপ পাওয়া গেলে সেটা দেখে নিজের খাতায় একটা অনুলিপি তৈরি করে নাও।
✎ এবার খেয়াল করে দেখো যে সব এলাকায় তোমাদের শ্বাস নিতে আরাম লেগেছে সেখানে বিশেষ কি আছে? আবার যেসব জায়গায় শ্বাস নিতে কষ্ট হয় সেখানে বিশেষ কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে? স্কুল ছুটির পরে তোমাদের যাদের বাসা কাছাকাছি, তারা মিলে দল গঠন করে নিজ নিজ এলাকার বৈশিষ্ট্য খুঁজে বের করতে পারো।
✎ এই সেশনে তোমরা যে যার যার এলাকার বাতাসের মানচিত্র একেছো, তাই না? তোমরা কি জানো এই মানচিত্র আরও বড় এলাকার জন্যও আঁকা যেতে পারে। সত্যি বলতে কি, বাতাস নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন, তাঁরা ইতোমধ্যে এমন মানচিত্র তৈরি করে রেখেছেন । এখানে উত্তর আমেরিকার এমন একটি মানচিত্র দেয়া আছে।
তোমরা কি সবাই মিলে সারা পৃথিবীর এমন মানচিত্র খুঁজে বের করতে পারবে? চাইলে তোমরা পত্রিকা কিংবা বই ইত্যাদির সাহায্য নিতে পারো। তোমাদের স্কুলে বা আশপাশে লাইব্রেরি থাকলে সেখানেও খুঁজে দেখতে পারো। কিংবা শিক্ষকের সহযোগিতাও নিতে পারো।
✎ তোমরা সবাই মিলে সারা পৃথিবীর ‘বাতাসের মানচিত্র’ খুঁজে বের করেছ, তাই না? তোমরা কি বিভিন্ন মহাদেশের কোথায় কোথায় বাতাস পরিষ্কার, আর কোথায় কোথায় দূষিত- এটা চিহ্নিত করতে পেরেছ? তোমরা সবাই মিলে একটু খুঁজে দেখো তো, বিভিন্ন মহাদেশে (এশিয়া, ইউরোপ) পরিষ্কার বাতাসের আশপাশে প্রকৃতিতে কী কী আছে?
আর দূষিত বাতাসের আশপাশেই বা কী কী আছে? কোথায় নগরায়ণ বেশি, বা শিল্প কারখানা বেশি, কিংবা বনের পরিমাণ বেশি একটু লক্ষ করে দেখো। এসব তথ্যের জন্য তোমরা পত্রিকা কিংবা বই ইত্যাদির সাহায্য নিতে পারো। এলাকায় কোনো লাইব্রেরি থাকলে সেখানে খুঁজে দেখতে পারো। প্রয়োজনে শিক্ষকের সহায়তায় ইন্টারনেটের সাহায্য নাও। কী কী তথ্য পেলে লিখে রাখো।
✎ কোনো কিছু সুগন্ধ বা দুর্গন্ধ কীভাবে ছড়ায় তা আজ আমরা খুঁজে দেখব। সেজন্য সেশন এর শুরুতেই একটা এয়ার ফ্রেশনার বা আতর বা পারফিউমের বোতল খুলে শ্রেণিকক্ষের একটা নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দাও।
✎ বাড়ির কাজ নিশ্চয়ই করে নিয়ে এসেছো। এবার বিভিন্ন দলের সাথে তোমাদের করে আনা কাজ দেখিয়ে আলোচনা করো। সবার পাওয়া তথ্য তুলনা করে দেখো পৃথিবীর কোন কোন অঞ্চলে বায়ু দূষণের মাত্রা বেশি কিংবা কম। বিভিন্ন এলাকার কোন কোন বৈশিষ্ট্যের উপরে এই দূষণের মাত্রা নির্ভর করে।
✎ এবার এই বায়ু দূষণের কারণে কি কি সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে তা খুঁজে বের করার পালা। যে অঞ্চলে বাতাস দূষিত সেখানে মানুষের কি কি অসুবিধা হচ্ছে? মানুষ ছাড়াও বিভিন্ন প্রাণীও উদ্ভিদ সেখানে থাকে তাদেরকে কি সমস্যা হচ্ছে সেটাও খুঁজে বের করো। এর পাশাপাশি দূষিত বায়ুর কারণে প্রকৃতির উপর আর কী কী ধরনের প্রভাব পড়ে তাও ভেবে দেখো। এইসব তথ্য জোগাড় জন্য তোমরা যথারীতি পত্রিকা বই কিংবা লাইব্রেরি সাহায্য নিতে পারো। কিংবা ইন্টারনেটেও খুঁজে দেখতে পারো। প্রয়োজনে শিক্ষকের সহযোগিতা নাও।
✎ এবার দেখা যাক বায়ু দূষণকারী পদার্থসমূহ কীভাবে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়ায়। সেশন এর শুরুতেই পারফিউমের বোতল খুলে রেখে দিয়েছিলে, মনে আছে? এই পর্যায়ে খেয়াল করে দেখ তো ঘ্রাণ পাচ্ছ কি না? এই ঘ্রাণ তোমাদের নাকে কীভাবে পোঁছাচ্ছে? ভেবে দেখো খোলা ডাস্টবিনের একটু দুর দিয়ে হাঁটলেও এর দুর্গন্ধ আমাদের নাক পর্যন্ত কীভাবে আসে?
✎ এই প্রক্রিয়াটি ভালোভাবে বোঝার জন্য একটা ছোট্ট পরীক্ষা করে দেখা যাক। এক কাপ গরম পানিতে একটা টি ব্যাগ নিয়ে ভালোভাবে লক্ষ করে দেখো, কীভাবে আস্তে আস্তে চা পাতার রং পুরো পানিতে ছড়িয়ে যায়। তোমাদের পর্যবেক্ষণ লিখে রাখো:
✎ এবার আরেকটা পরীক্ষা করে দেখা যাক। একটা বেলুন ভালোভাবে ফুলিয়ে নাও এবার বেলুনের পৃষ্ঠে যেকোনো জায়গায় পেন্সিল বা আলপিন বা তীক্ষ্ম কিছু দিয়ে সামান্য ফুটো করলে বাতাস কীভাবে ফেটে বের হয়ে যায় দেখো। এবার বেলুনের পৃষ্ঠে একটুকরো স্কচটেপ লাগিয়ে নাও। স্কচটেপের উপরে একইভাবে সামান্য ফুটো করে নাও। এবার কি আগের মতো হঠাৎ করে বেলুন ফেটে যাচ্ছে? নাকি আস্তে আস্তে বাতাস বের হয়ে আসছে? কেন? তোমাদের পর্যবেক্ষণ নিচের ছকে লিখে রাখো।
✎ তোমাদের ব্যাখ্যা অন্যান্য দলকে শোনাও, এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ব্যাখ্যাও শুনে দেখো। শিক্ষকসহ বাকিদের সাথে আলোচনা করো।
✎ এবার তোমাদের অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে রসায়ন অংশের পদার্থের অবস্থা অধ্যায় থেকে কণার গতিতত্ত্ব ব্যাপন ও নিঃসরণ অংশটুকু পড়ে নাও পড়া হয়ে গেলে তোমার পাশের সহপাঠীর সাথে আলোচনা করে দেখো আগের পরীক্ষণ দুইটির সাথে এই দুইটি ঘটনার কোনো সম্পর্ক কি খুঁজে পাচ্ছো?
✎ এবার বলো দেখি বাতাসে সুগন্ধ বা দুর্গন্ধ ছড়ানোর সাথে এই দুইটি ঘটনার কোনটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়? তোমার উত্তর নিচে ফাঁকা জায়গায় লিখে রাখো।
✎ তোমার উত্তর নিয়ে শিক্ষকসহ ক্লাসের বাকিদের সাথে আলোচনা করো।
✎ এবার ভেবে দেখো বাতাস দূষিত হয় কোন প্রক্রিয়ায়? দূষণকারী পদার্থ কীভাবেই বা ছড়ায়? শুধু বাতাস নয়, পানি ও মাটিও তো দূষিত হয়-এই তরল ও কঠিন পদার্থেও কি একইভাবে দূষণ ঘটে?
✎ এই যে কঠিন তরল এবং বায়বীয় পদার্থের কথা বলা হলো, পদার্থের এই এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তন কীভাবে ঘটে? আবার এক অবস্থা থেকে কীভাবে তাদের অন্য অবস্থায় নিয়ে আসা যায়? এই বিষয়গুলো জানার জন্য তোমাদের অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে গলন, স্ফুটন, পাতন, ঊর্ধ্বপাতন এই প্রক্রিয়াগুলো ভালোভাবে পড়ে নাও। সম্ভব হলে তোমাদের স্কুলের ল্যাবরেটরিতে অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ে দেয়া পরীক্ষাগুলো হাতে কলমে করে দেখো।
✎ বাতাসে দূষণকারী পদার্থ কীভাবে ছড়ায় তা নিয়ে না হয় আলোচনা হলো। কিন্তু বাতাস দূষিত হওয়ার কারণগুলো কী কী? কোন কোন পদার্থ বায়ুতে থাকলে বায়ু দুষিত হয়? এই পদার্থগুলো কীভাবে উৎপন্ন হয়?
✎ তোমাদের পাশের ছকে বেশ কিছু পদার্থের নাম লেখা আছে দেখো। গবেষণা বলছে বাংলাদেশের বায়ু দূষণের পেছনে এই পদার্থগুলোর ভূমিকাই প্রধান। এখন ভেবে দেখো যে এই পদার্থগুলো কী করে উৎপন্ন হয়? এদের গঠন আসলে কেমন?
✎ এই আলোচনা করার আগে একদম গোড়ার আলাপ হিসেবে পদার্থের গঠনের উপর একটু আলোকপাত করা যাক। তোমরা ইতোমধ্যেই জানো পদার্থের গঠনের মূল উপাদান ইলেকট্রন প্রোটন ও নিউট্রন। এখন এই কণিকাসমূহ পরমাণুর ভেতরে কীভাবে বিন্যস্ত থাকে তা কি তোমরা জানো?
✎ সত্যি বলতে এই পরমাণুর বিন্যাস নিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক মাথা ঘামিয়েছেন; এবং সময়ের সাথে ধীরে ধীরে পরমাণু বিন্যাস সম্পর্কে মানুষের চিন্তা অনেক স্পষ্ট হয়েছে। তোমাদের অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ে পরমাণুর গঠন অধ্যায়ে পরমাণুর বিন্যাস সম্পর্কে যা বলা আছে তা নিজেরা পড়ে নাও। পরমাণুর দুইটি মডেল-রাদারফোর্ড এবং বোরের মডেল; এই দুইটি সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ে নিয়ে দলে আলোচনা করো। কোনো জায়গায় বুঝতে অসুবিধা হলে শিক্ষকের সাহায্য নাও।
উপরে ৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন বই ১ম অধ্যায় সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হলো। খেলার মাঠে বিজ্ঞান অধ্যায়টি সম্পর্কে তোমরা যাতে সহজে বুঝতে পার তার জন্য এই অধ্যায়টি তোমাদের সামনে সহজভাবে তুলে ধরার পাশাপাশি আমরা দিচ্ছি সমস্যা সমাধান পিডিএফ। এই অধ্যায়ে দেওয়া কঠিন বিষয়গুলো আলোচনার পাশাপাশি বাড়ির কাজের সমাধানগুলো তোমরা সেখানে পেয়ে যাবে।
আমাদের ওয়েবসাইটে তোমার প্রয়োজনীয় সাবজেক্টের প্রশ্নের উত্তর না পেলে কোর্সটিকা ফেসবুক পেজে ইনবক্স করতে পারো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post