হিসাববিজ্ঞান ১ম অধ্যায় : বাক্তি, প্রতিষ্ঠান তথা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অর্থ সম্পর্কিত ঘটনা পরিলক্ষিত হয়। এ সকল ঘটনার সংখ্যা অগণিত ও বৈচিত্রযময়। নির্দিষ্ট পদ্ধতি ও কৌশল ব্যতীত এ সকল আর্থিক ঘটনার সামগ্রিক ফলাফল ও প্রভাব জানা কঠিন। হিসাববিজ্ঞান হচ্ছে একটি প্রক্রিয়া, যেখানে সংঘটিত আর্থিক ঘাটনাসমুহের সামগ্রিক প্রভাব এবং ফলাফল নির্ণয়ের পদ্ধতি ও কৌশল আলোচনা করা হয়।
প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিভিন্ন পক্ষ হিসাব তথ্য জানতে সর্বদা আগ্রহী। তাই হিসাববিজ্ঞান আর্থিক লেনদেলসমূহের সংরক্ষণ ও পর্যালোচনার মাধ্যমে এদের প্রভাব ও ফলাফল নির্ণয় করে বিভিন্ন পক্ষকে প্রতিবেদন আকারে অবহিত করে।
হিসাববিজ্ঞান ১ম অধ্যায়
হিসাববিজ্ঞান এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় আর্থিক কার্যাবলি হিসাবের বইতে সুষ্ঠুভাবে লিপিবদ্ধ করা যায় এবং নির্দিষ্ট সময় শেষে আর্থিক কার্যাবলির ফলাফল জানা যায়। অর্থাৎ হিসাববিজ্ঞানের জ্ঞান ব্যবহার করে হিসাবের বিভিন্ন বিবরণী ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়, যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা জানা যায়। এ কারণেই হিসাববিজ্ঞানকে ‘ব্যবসায়ের ভাষা’ বলা হয়।
হিসাববিজ্ঞানের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা
যথাযথ হিসাব না রাখলে প্রতিষ্ঠানের ভালো ও খারাপ দিকগুলো জানা যাবে না। সঠিকভাবে হিসাব সংরক্ষণের মাধ্যমে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে অপচয়রোধ এবং আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করা সম্ভব। অর্থাৎ সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও মিতব্যয়ী জীবন গঠনের জন্য হিসাববিজ্ঞানের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব অপরিসীম। হিসাববিজ্ঞানের সর্বপ্রথম উদ্দেশ্য লেনদেনসমূহকে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করা। আর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো আর্থিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা নিরূপণ করা। লাভ-ক্ষতি নির্ণয়ের মাধ্যমে ব্যবসায়ের গতি প্রকৃতিসহ প্রতিষ্ঠানের সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্বের পরিমাণ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যায়।
হিসাববিজ্ঞান ব্যবসায়ের যাবতীয় ব্যয় সঠিকভাবে লিপিবদ্ধকরণের মাধ্যমে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। হিসাববিজ্ঞানের মাধ্যমে সঠিক হিসাবরক্ষণের সাহায্যে প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা ও জালিয়াতি রোধ করা যায়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের একাধিক বছরের আর্থিক বিবরণীর তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে উন্নতি ও অবনতির বিভিন্ন দিক চিিহ্নতপূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হিসাববিজ্ঞান সহায়তা করে থাকে। দেশের সরকারকেও তার রাজস্ব আদায়ের এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাতে ব্যয়ের সুষ্ঠু হিসাব সংরক্ষণে হিসাববিজ্ঞান সহায়তা করে থাকে।
হিসাববিজ্ঞানের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ
সভ্যতার শুরু হতে মানুষ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা হিসাব গাছের গায়ে, পাহাড়ের গুহায় বা পাথরে চিহ্ন দিয়ে রাখত। এক সময় মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস শুরু করে কৃষিকাজ আরম্ভ করল। তারা তাদের ঘরের দরজায় দাগ কেটে ও রশিতে গিট দিয়ে কৃষি পণ্য বা ফসল ও মজুদের হিসাব রাখা শিখল। আস্তে আস্তে যখন তাদের সমাজ বিস্তার লাভ করে তখন তাদের মধ্যে বিনিময় প্রথা, মুদ্রার প্রচলন এবং ব্যবসায় বাণিজ্যের প্রচলন শুরু হয়।
ক্রয়-বিক্রয়, জমা-খরচ, দেনা-পাওনা এবং অন্যান্য লেনদেন হিসাবের বইতে অঙ্কের মাধ্যমে হাতে লেখা শুরু হয়। ১৪৯৪ সালে লুকা প্যাসিওলি নামক একজন ইতালীয় গণিতবিদ ‘সুম্মা ডি এরিথমেটিকা জিওমেট্রিয়া প্রপোরশনিয়েট প্রপোরশনালিটা’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। এই বইতে তিনি হিসাবরক্ষণের মূলনীতি ‘দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি’ ব্যাখ্যা করেন। বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে হিসাব বইসমূহ হাতে লেখার পরিবর্তে কম্পিউটারের মাধ্যমে করা হচ্ছে।
►► আরো দেখো: হিসাববিজ্ঞান বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর
উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে ৯ম ও ১০ম শ্রেণির হিসাববিজ্ঞান ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post