ভূগোল ১ম পত্র ২য় অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : বাংলাদেশের টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ভঙ্গিল পর্বতমালা থেকে সৃষ্টি হওয়ার কারণে এটি ভাঁজগ্রস্ত হয়েছে। টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উত্থিত হওয়ার সময় উক্ত ভাঁজ আকৃতির ভূমিরূপ দেখা যায়। আমরা জানি, হিমালয় পর্বত ভঁজের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে। এ পর্বতের নিচের দিকে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলের দিকে এসে ভাঁজের সৃষ্টি করেছে। এ কারণে বাংলাদেশের টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ ভাঁজগ্রস্ত।
ভূগোল ১ম পত্র ২য় অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. প্লাইস্টোসিনকালের সোপান কী? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : আনুমানিক ২৫,০০০ বছর পূর্বের সময়কে প্লাইস্টোসিনকাল বলে।
উত্তর-পশ্চিমাংশের বরেন্দ্রভূমি, মধ্যভাগের মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় এবং কুমিল্লা জেলার লালমাই পাহাড় বা উচ্চভূমি এ অঞ্চলের অন্তর্গত। প্লাইস্টোসিনকালে এসব সোপান গঠিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
২. মোহহাবিযুক্তি রেখা কী?
উত্তর : ভূত্বক ও গুরুমণ্ডল পৃথককারী শিলাস্তর হলো মোহোবিযুক্তি রেখা।
ভূকম্পন তরঙ্গের মাধ্যমে জানা যায় অশ্মমণ্ডল ও গুরুমণ্ডলের মধ্যে একটি পাতলা স্তর আছে যা ১৯০৯ সালে সার্বিয়ার ভূকম্পনবিদ মোহোরোভিসিক প্রথম আবিষ্কার করেন। তাঁর নামানুসারে এ স্তরটিকে মোহোবিযুক্তি রেখা বলা হয়।
৩. মালভূমির গঠন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মালভূমি গঠনের সাথে ভূ-আলোড়ন, ভূপৃষ্ঠের ক্ষয় প্রক্রিয়া এবং লাভা সঞ্চয় প্রক্রিয়া জড়িত।
পর্বত গঠনের সময় ভূআলোড়নের ফলে বিস্তীর্ণ ভূভাগ উঁচু হয়ে মালভূমি সৃষ্টি করে। আবার উঁচু ভূভাগ প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে মালভূমিতে পরিণত হয়। এছাড়াও মহাদেশীয় উঁচু ভূমিতে লাভা সঞ্চিত হয়ে মালভূমি গঠিত হয়ে থাকে।
৪. ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে শিলায় ঢেউয়ের মত ভাঁজ পড়ে যে পর্বত সৃষ্টি হয় তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে।
গিরিজনি আলোড়নের ফলে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়েছে। ভূভাগের স্থান পরিবর্তনের ফলে প্রান্তভাগের অংশবিশেষে ভজের সৃষ্টি হয়ে এ পর্বত গঠিত হয়। ভঙ্গিল পর্বতে সুউচ্চ শৃঙ্গ থাকে, যা অন্যান্য পর্বতে কম দেখা যায়। এ পর্বত স্তরযুক্ত নরম পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। এ পর্বতে জীবাশ্মের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। পৃথিবীর দীর্ঘ ও উচ্চতম পর্বতগুলো এ শ্রেণির । রকি, হিমালয় ভঙ্গিল পর্বতের উদাহরণ।
৫. গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাংলাদেশের উপর দিয়ে গ্রীষ্মকালে উষ্ণ ও আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়।
গ্রীষ্মকালে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক হতে শুষ্ক ও শীতল বায়ু প্রবাহিত হয়। গ্রীষ্মকালে এ দুই বায়ুর সংঘর্ষে বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টি হয়ে থাকে। গ্রীষ্মকালীন গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫১ সেমি।
৬. ভঙ্গিল পর্বত কীভাবে সৃষ্টি হয় ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভঙ্গিল পর্বত প্রধানত পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। তবে, পরিচালন স্রোতের মাধ্যমে বিভিন্ন পাতের চলনই ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির প্রধান কারণ।
দীর্ঘদিন ধরে অগভীর সমুদ্র বা মহাখাত অঞ্চলের তলদেশে পলি সঞ্চিত হয়ে পাললিক শিলার সৃষ্টি হয়। পরে এ পাললিক শিলা বিভিন্ন পার্শ্বচাপ ও প্রাকৃতিক ক্রিয়ায় ফলে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি করে। নেপালের হিমালয় ভঙ্গিল পর্বতের অন্তর্ভুক্ত।
৭. বাংলাদেশের টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ভঁজগ্রস্ত কেন?
উত্তর : বাংলাদেশের টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ভঙ্গিল পর্বতমালা থেকে সৃষ্টি হওয়ার কারণে এটি ভাঁজগ্রস্ত হয়েছে।
টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উত্থিত হওয়ার সময় উক্ত ভাঁজ আকৃতির ভূমিরূপ দেখা যায়। আমরা জানি, হিমালয় পর্বত ভঁজের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে। এ পর্বতের নিচের দিকে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলের দিকে এসে ভাঁজের সৃষ্টি করেছে। এ কারণে বাংলাদেশের টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ ভাঁজগ্রস্ত।
৮. অ্যাসথেনোস্ফিয়ার বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বহিঃগুরুমণ্ডল স্তরের নমনীয় অংশকে অ্যাসথেনোস্ফিয়ার বা নমনীয়মণ্ডল বলে।
গঠন উপাদানের গুরুত্বের তারতম্য অনুসারে গুরুমণ্ডলকে দুটি স্তরে বিভক্ত করা হয়েছে। যথা- বহিঃগুরুমণ্ডল ও অন্তঃগুরুমণ্ডল। বহিঃগুরুমণ্ডলের স্তরটি ১০০ থেকে ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। ক্রোমিয়াম, লোহা, সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম দ্বারা গঠিত বলে একে ক্রোফেসিমা (Cro-Fe-Si-Ma) বলা হয়। এ স্তরেই নমনীয় মণ্ডল (Astheno Sphere) অবস্থিত।
৯. কেন্দ্রমণ্ডলের ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর : পৃথিবীর কেন্দ্রের চারিদিকে প্রায় ৩,৪৮৬ কিমি. ব্যাসার্ধের এক গোলক অবস্থিত। এ গোলকটির নাম কেন্দ্রমণ্ডল। কেন্দ্রম-লটি গুরুম-ল (২৮৮৫ কিমি) থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র (৬,৩৭১ কিমি) পর্যন্ত বিস্তৃত। গুটেনবার্গ বিযুক্তি থেকে এর গভীরতা ৩,৪৮৬ ৪ কিমি। এর মূল উপাদান নিকেল ও লোহা। তবে পারদ ও সিসার মতো ভারী ধাতুও কেন্দ্রমণ্ডলে বিদ্যমান। এর তাপমাত্রা স্থানভেলে ৩,০০০°-৫,০০০° সে. বা তারও বেশি।
১০. স্তূপ পর্বত সৃষ্টির প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভূআলোড়নের ফলে ভূত্বকের স্থানচ্যুতি ঘটে। ভূত্বকের এ স্থানচ্যুতি কোথাও উপরের দিকে হয়, আবার কখনো নিম্নগামী হয়। চ্যুতি বরাবর ঊর্ধ্বগামী শিলাস্তুপকে স্তূপ পর্বত বলে।
এ ধরনের পর্বতের অন্তত একপাশে উঁচু কোণবিশিষ্ট স্বাভাবিক চ্যুতি থাকে। ভূআলোড়নের সময় ভূপৃষ্ঠে যে টানজনিত চাপ পড়ে তাতে ভূত্বকে ফাটলের সৃষ্টি হয়। ব্ল্যাক ফরেস্ট, ভোজ, নীলগিরি ও আন্ন্যামালি এ পর্বতের অন্তর্ভুক্ত।
►► আরো দেখো: ভূগোল ১ম ও ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরের Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ ভূগোল ১ম পত্র ২য় অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post