মাটির নিচে যে শহর প্রশ্ন উত্তর : সোনারগাঁ অবস্থান ঢাকা থেকে সাতাশ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে নারায়ণগঞ্জ জেলায়। এটি মুঘল আমলের প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র ছিল। এখানে প্রাপ্ত নিদর্শনগুলোর মধ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত কেল্লা, মসজিদ, পানাম নগরের ধ্বংসাবশেষ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
মাটির নিচে যে শহর প্রশ্ন উত্তর
১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
প্রত্নতাত্ত্বিক – ‘প্রত্ন’ শব্দের অর্থ অতি পুরাতন বা প্রাচীন। এই সম্পর্কিত যে তত্ত্ব তাকে বলা হয় প্রত্নতত্ত্ব। তবে, প্রাচীনকালের জিনিসপত্র, মুদ্রা, অট্টালিকা ইত্যাদি বিচার করে এবং ইতিহাস খুঁজে যা বের করা হয় বা যেভাবে বের করা হয় তাকে বলে প্রত্নতাত্ত্বিক।
উপত্যকা – দুই উঁচু স্থান, পাহাড় বা পর্বতের মাঝখানের সমতল ভূমি বা নিচু ভূমি অথবা পাহাড়-পর্বতের পাশের ভূমি।
জনপদ – যেখানে অনেক জন-মানুষ এক সাথে বসবাস করেন, লোকালয়, শহর।
প্রাচীনতম – প্রাচীন হলো পুরাতন বা বহুকাল আগের কিছু। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন হলে ‘তম’ যোগ করা হয়।
অভিভূত – ভাবাবিষ্ট বা আচ্ছন্ন হয়ে পড়া।
নিদর্শন – প্রমাণ, চিহ্ন বা উদাহরণ।
খ্রিষ্টপূর্ব – যিশুখ্রিষ্টের জন্মের পূর্বের বছর বোঝাতে বলা হয় খ্রিষ্টপূর্ব, আর তাঁর জন্মের পরের বছরগুলোকে বলা হয় খ্রিষ্টাব্দ।
ঐতিহাসিক – যাঁরা ইতিহাস লেখেন বা ভালো জানেন। ইতিহাসে স্থান লাভের যোগ্য বা ইতিহাসভিত্তিক হলেও তাকে ঐতিহাসিক বলা হয়।
২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
ক. পাহাড়পুর আমাদের দেশে অতি — একটি বিহার।
খ. ক্রমে ক্রমে অনেক আশ্চর্য — পাওয়া যাচ্ছে উয়ারী-বটেশ্বরে।
গ. উয়ারী-বটেশ্বর বাংলাদেশের — নিদর্শন।
ঘ. পাহাড় ও পর্বতের মাঝে সমতল ভূমিকে বলে —।
ঙ. আমি জাদুঘর দেখে — হয়ে গেলাম।
উত্তর : ক) প্রাচীনতম; খ) নিদর্শন; গ) ঐতিহাসিক; ঘ) উপত্যকা; ঙ) অভিভূত।
৩. প্রশ্নগুলোর উত্তর মুখে বলি ও লিখি।
ক) প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বলতে কী বোঝ? বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি সম্পর্কে যা জান লেখ।
উত্তর : প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বলতে আমরা বুঝি এমন একটি ঐতিহাসিক স্থানকে যেখান থেকে অনেক পুরাতন জিনিসপত্র পাওয়া গিয়েছে।
বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সোনারগাঁ, পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়, ময়নামতি ইত্যাদি।
সোনারগাঁ : সোনারগাঁ অবস্থান ঢাকা থেকে সাতাশ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে নারায়ণগঞ্জ জেলায়। এটি মুঘল আমলের প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র ছিল। এখানে প্রাপ্ত নিদর্শনগুলোর মধ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত কেল্লা, মসজিদ, পানাম নগরের ধ্বংসাবশেষ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
পাহাড়পুর : রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলায় অবস্থিত। এখানে পাল বংশের রাজাদের সময়ের প্রতœস্থলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এখানকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুরাকীর্তিটি সোমপুর মহাবিহার নামে পরিচিত।
মহাস্থানগড় : এটি খ্রিষ্টপূর্ব চার শতক থেকে পরবর্তী পনেরো শত বছরের বেশি সময়কালের বাংলার ইতিহাসের চিহ্ন বহন করে। এখানে প্রাচীন ‘পুণ্ড্রনগর’-এর ধ্বংসাবশেষ আছে। এটি বগুড়া শহর থেকে তেরো কি.মি. উত্তরে করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। এখানকার মাটি খুঁড়ে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন উদ্ধার করা হয়েছে।
ময়নামতি : কুমিল্লা শহর থেকে আট কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এর অবস্থান। এখানে অনেকগুলো প্রতœস্থলের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ স্থানগুলোতে মিলেছে বৌদ্ধ সভ্যতার অনেক নিদর্শন। হিন্দু ও জৈন ধর্মের অনেক দেব-দেবীর মূর্তিও পাওয়া গেছে।
খ) উয়ারী-বটেশ্বরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন কীভাবে মানুষের নজরে এলো?
উত্তর : ১৯৩৩ সালে উয়ারী গ্রামে শ্রমিকরা মাটি খনন করার সময় কিছু মুদ্রার সন্ধান পায়। স্থানীয় স্কুল শিক্ষক হানিফ পাঠান সেখান থেকে ২০-৩০টি মুদ্রা সংগ্রহ করেন।
পরবর্তীতে তাঁর ছেলে হাবিবুল্লাহ পাঠান এখান থেকে ত্রিকোণাকার ও একমুখ চোখা দুটি লৌহপিণ্ড, রৌপ্যমুদ্রা ইত্যাদি সংগ্রহ করেন। ১৯৭৪-৭৫ সালের পর থেকে উয়ারী-বটেশ্বরের প্রচুর নিদর্শন সংগ্রহ করে জাদুঘরে জমা দেন।
২০০০ সালে অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এ প্রতœতাত্ত্বিক স্থানে খননকাজ শুরু হয়। এ সময় নানা রকম মূল্যবান প্রতœসম্পদের সন্ধান পাওয়া যায় এবং স্থানটি বিশেষভাবে পরিচিতি লাভ করে।
গ) উয়ারী-বটেশ্বর এলাকটি বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে অবস্থিত? এই এলাকাটির প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চলে পরিণত হওয়ার পিছনে কী কারণ তা লেখ।
উত্তর : উয়ারী-বটেশ্বর এলাকাটি নরসিংদী জেলার বেলাব ও শিবপুর উপজেলায় অবস্থিত। এ এলাকাটি মধুপুর গড় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।
ভূমিকম্প, বন্যা-প্লাবন, নদীভাঙন ইত্যাদি নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে একটি অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতিতে সময়ের সাথে সাথে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। উয়ারী-বটেশ্বর এলাকাটিতেও একইভাবে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ফলে সুসভ্য এই নগর-জনপদটি কালের বিবর্তনে মাটিচাপা পড়ে হারিয়ে যায়। এভাবেই এটি প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনে পরিণত হয়েছে।
ঘ) ব্রহ্মপুত্র নদ আগে কোথা দিয়ে প্রবাহিত হতো আর এখন কোথায়?
উত্তর : ব্রহ্মপুত্র নদটি ১৭৭০ সাল পর্যন্ত প্রাচীন সোনারগাঁ নগরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হতো। পরবর্তীতে এর গতিপথ পরিবর্তিত হয়। বর্তমানে এটি নরসিংদী দিয়ে বয়ে চলেছে।
ঙ) কোন কোন নিদর্শন থেকে উয়ারী-বটেশ্বরের সময়কাল জানা যায়?
উত্তর : ১৯৩৩ সালে উয়ারী গ্রামে শ্রমিকরা মাটি খননের সময় কিছু মুদ্রার সন্ধান পান। এ মুদ্রাগুলো ছিল বঙ্গদেশের ও ভারতের প্রাচীনতম রৌপ্যমুদ্রা।
পরবর্তী সময়ে ২০০০ সালে উয়ারী-বটেশ্বরে খননকাজ শুরু হয়। এ সময় এখান থেকে প্রাপ্ত নিদর্শনগুলোকে গবেষণা করে বিশেষজ্ঞদের ধারণা হয় যে মাটির নিচে থাকা এ স্থানটি প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো।
চ) উয়ারী-বটেশ্বর এলাকাটি সম্পর্কে ঐতিহাসিকগণ যা ধারণা করেছেন তা বর্ণনা কর।
উত্তর : ঐতিহাসিকগণের ধারণা, উয়ারী-বটেশ্বরের মাটির নিচে থাকা স্থানটি প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো। ব্রহ্মপুত্র নদ হয়ে বঙ্গোপসাগরের মধ্য দিয়ে এই জনপদের ব্যবসায় বাণিজ্য চলত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে সুদূর রোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত ‘উয়ারী-বটেশ্বর’ রাজ্যের যোগাযোগ ছিল।
অতিরিক্ত প্রশ্নের উত্তর
০১। ময়নামতি, মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর এগুলো দূর থেকে সহজেই দেখা যায় কেন?
উত্তর : ময়নামতি, মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর এগুলো মাটির ওপর ঢিবির আকারে অবস্থিত। তাই এগুলোকে দূর থেকেও সহজে দেখা যায়।
০২। মহাস্থানগড় ও মধুপুর গড়ের মাটি দেখে মৃত্তিকা বৈজ্ঞানিকগণ কী বলেন?
উত্তর : মহাস্থানগড় ও মধুপুর গড়ের মাটি দেখে মৃত্তিকা বৈজ্ঞানিকগণ বলেন, এ অঞ্চলের মাটি হাজার হাজার বছরের পুরনো।
০৩। উয়ারী-বটেশ্বর স্থানটি নরসিংদীর কোন কোন উপজেলায় অবস্থিত?
উত্তর : উয়ারী-বটেশ্বর স্থানটি নরসিংদীর বেলাব ও শিবপুর উপজেলায় অবস্থিত।
০৪। উয়ারী-বটেশ্বর রাজ্যের সাথে কাদের যোগাযোগ ছিল বলে ধারণা করা হয়?
উত্তর : উয়ারী-বটেশ্বর রাজ্যের সাথে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে শুরু করে রোমান সাম্রাজ্যের যোগাযোগ ছিল বলে ধারণা করা হয়।
০৫। উয়ারী-বটেশ্বর সম্পর্কে অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমানের মতামত কী?
উত্তর : উয়ারী-বটেশ্বর সম্পর্কে অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান মত প্রকাশ করেন, অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী এবং সঠিক পরিকল্পনায় গড়া এই সভ্যতাটি প্রাচীন কালে ‘সোনাগড়া’ নামে পরিচিত ছিল।
০৬। উয়ারী-বটেশ্বর থেকে কত দূরে কোথায় বৌদ্ধ পদ্মমন্দির আবিষ্কৃত হয়েছে?
উত্তর : উয়ারী-বটেশ্বর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে শিবপুর উপজেলার মন্দির ভিটায় একটি বৌদ্ধ পদ্মমন্দির আবিষ্কৃত হয়েছে।
০৭। উয়ারী-বটেশ্বর বলে যা শোনা যায় তা আসলে কী?
উত্তর : উয়ারী আর বটেশ্বর আসলে পাশাপাশি দুটি গ্রাম। এ স্থানসমূহের মাটি খুঁড়ে সুপ্রাচীন এক নগর-জনপদের সন্ধান পাওয়া গেছে। বর্তমানে উয়ারী-বটেশ্বর বলতে বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানকে নির্দেশ করা হয়।
০৮। উয়ারী-বটেশ্বর ঢাকা থেকে কত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত?
উত্তর : উয়ারী-বটেশ্বর ঢাকা থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
০৯। উয়ারী-বটেশ্বর কোন জেলায় অবস্থিত? সুফি মোস্তাফিজুর রহমানের পরিচয় লেখ।
উত্তর : উয়ারী-বটেশ্বর নরসিংদী জেলায় অবস্থিত।
সুফি মোস্তাফিজুর রহমান হলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক। তাঁর নেতৃত্বে ২০০০ সালে উয়ারী-বটেশ্বরের খনন কাজ শুরু হয়।
১০। উয়ারী-বটেশ্বরের মাটি খনন করে কী কী নিদর্শন পাওয়া গেছে?
উত্তর : উয়ারী-বটেশ্বরের মাটি খনন করে মহামূল্যবান সব প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন দুর্গ-নগর, ইটের স্থাপত্য, বন্দর, রাস্তা, গলি, পোড়ামাটির ফলক, মূল্যবান পাথর, পাথরের বাটখারা, কাচের পুঁতি, মুদ্রাভান্ডার ইত্যাদি।
১১। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বলতে কী বোঝ? বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি সম্পর্কে যা জান লেখ।
উত্তর : প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বলতে আমরা বুঝি এমন একটি ঐতিহাসিক স্থানকে যেখান থেকে অনেক পুরাতন জিনিসপত্র পাওয়া গিয়েছে।
বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: সোনারগাঁ, পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়, ময়নামতি ইত্যাদি।
সোনারগাঁ : সোনারগাঁ অবস্থান ঢাকা থেকে সাতাশ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে নারায়ণগঞ্জ জেলায়। এটি মুঘল আমলের প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র ছিল। এখানে প্রাপ্ত নিদর্শনগুলোর মধ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত কেল্লা, মসজিদ, পানাম নগরের ধ্বংসাবশেষ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
পাহাড়পুর : রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলায় অবস্থিত। এখানে পাল বংশের রাজাদের সময়ের প্রত্নস্থলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এখানকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুরাকীর্তিটি সোমপুর মহাবিহার নামে পরিচিত।
মহাস্থানগড় : এটি খ্রিষ্টপূর্ব চার শতক থেকে পরবর্তী পনেরো শত বছরের বেশি সময়কালের বাংলার ইতিহাসের চিহ্ন বহন করে। এখানে প্রাচীন ‘পুন্ড্রনগর’-এর ধ্বংসাবশেষ আছে। এটি বগুড়া শহর থেকে তেরো কি.মি. উত্তরে করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। এখানকার মাটি খুঁড়ে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন উদ্ধার করা হয়েছে।
ময়নামতি : কুমিল্লা শহর থেকে আট কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এর অবস্থান। এখানে অনেকগুলো প্রতœস্থলের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ স্থানগুলোতে মিলেছে বৌদ্ধ সভ্যতার অনেক নিদর্শন। হিন্দু ও জৈন ধর্মের অনেক দেব-দেবীর মূর্তিও পাওয়া গেছে।
১২। উয়ারী-বটেশ্বরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন কীভাবে মানুষের নজরে এলো?
উত্তর : ১৯৩৩ সালে উয়ারী গ্রামে শ্রমিকরা মাটি খনন করার সময় কিছু মুদ্রার সন্ধান পায়। স্থানীয় স্কুল শিক্ষক হানিফ পাঠান সেখান থেকে ২০-৩০টি মুদ্রা সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে তাঁর ছেলে হাবিবুল্লাহ পাঠান এখান থেকে ত্রিকোণাকার ও একমুখ চোখা দুটি লৌহপিন্ড, রৌপ্যমুদ্রা ইত্যাদি সংগ্রহ করেন। ১৯৭৪-৭৫ সালের পর থেকে উয়ারী-বটেশ্বরের প্রচুর নিদর্শন সংগ্রহ করে জাদুঘরে জমা দেন।
২০০০ সালে অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে খননকাজ শুরু হয়। এ সময় নানা রকম মূল্যবান প্রতœসম্পদের সন্ধান পাওয়া যায় এবং স্থানটি বিশেষভাবে পরিচিতি লাভ করে।
১৩। উয়ারী-বটেশ্বর এলাকটি বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে অবস্থিত? এই এলাকাটির প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চলে পরিণত হওয়ার পিছনে কী কারণ তা লেখ।
উত্তর : উয়ারী-বটেশ্বর এলাকাটি নরসিংদী জেলার বেলাব ও শিবপুর উপজেলায় অবস্থিত। এ এলাকাটি মধুপুর গড় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।
ভূমিকম্প, বন্যা-প্লাবন, নদীভাঙন ইত্যাদি নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে একটি অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতিতে সময়ের সাথে সাথে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। উয়ারী-বটেশ্বর এলাকাটিতেও একইভাবে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ফলে সুসভ্য এই নগর-জনপদটি কালের বিবর্তনে মাটিচাপা পড়ে হারিয়ে যায়। এভাবেই এটি প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনে পরিণত হয়েছে।
১৪। ব্রহ্মপুত্র নদ আগে কোথা দিয়ে প্রবাহিত হতো আর এখন কোথায়?
উত্তর : ব্রহ্মপুত্র নদটি ১৭৭০ সাল পর্যন্ত প্রাচীন সোনারগাঁ নগরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হতো। পরবর্তীতে এর গতিপথ পরিবর্তিত হয়। বর্তমানে এটি নরসিংদী দিয়ে বয়ে চলেছে।
১৫। কোন কোন নিদর্শন থেকে উয়ারী-বটেশ্বরের সময়কাল জানা যায়?
উত্তর : ১৯৩৩ সালে উয়ারী গ্রামে শ্রমিকরা মাটি খননের সময় কিছু মুদ্রার সন্ধান পান। এ মুদ্রাগুলো ছিল বঙ্গদেশের ও ভারতের প্রাচীনতম রৌপ্যমুদ্রা।
পরবর্তী সময়ে ২০০০ সালে উয়ারী-বটেশ্বরে খননকাজ শুরু হয়। এ সময় এখান থেকে প্রাপ্ত নিদর্শনগুলোকে গবেষণা করে বিশেষজ্ঞদের ধারণা হয় যে মাটির নিচে থাকা এ স্থানটি প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো।
১৬। উয়ারী-বটেশ্বর এলাকাটি সম্পর্কে ঐতিহাসিকগণ যা ধারণা করেছেন তা বর্ণনা কর।
উত্তর : ঐতিহাসিকগণের ধারণা, উয়ারী-বটেশ্বরের মাটির নিচে থাকা স্থানটি প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো। ব্রহ্মপুত্র নদ হয়ে বঙ্গোপসাগরের মধ্য দিয়ে এই জনপদের ব্যবসায় বাণিজ্য চলত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে সুদূর রোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত ‘উয়ারী-বটেশ্বর’ রাজ্যের যোগাযোগ ছিল।
১৭। ১৯৩৩ সালে উয়ারী গ্রামে শ্রমিকরা মাটি খননকালে কী পায়?
উত্তর : ১৯৩৩ সালে উয়ারী গ্রামে শ্রমিকরা মাটি খননকালে একটি পাত্রে জমানো কিছু রৌপ্যমুদ্রা পায়।
১৮। উয়ারী-বটেশ্বরের নিদর্শন সংগ্রহে মোহাম্মদ হানিফ পাঠানের ভূমিকা সম্পর্কে দুটি বাক্য লেখ
উত্তর : ১। মোহাম্মদ হানিফ পাঠান ১৯৩৩ সালে উয়ারী-বটেশ্বর থেকে প্রাপ্ত রৌপ্যমুদ্রা সংরক্ষণ করেন।
২। এখানকার নির্দশন সংগ্রহের ব্যাপারে তাঁর ছেলে হাবিবুল্লাহ পাঠানকে সচেতন করে তোলেন।
১৯। হাবিবুল্লাহ পাঠান তাঁর সংগ্রহ করা প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন জাদুঘরে জমা দেন কেন?
উত্তর : হাবিবুল্লাহ পাঠানের সংগ্রহ করা প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো বাংলার প্রাচীন সভ্যতার পরিচয় বহন করে। জাদুঘরে সেগুলো রাখা হলে তা থেকে মানুষ অনেক কিছু জানতে পারবে। এই বিষয়টি বুঝেছিলেন হাবিবুল্লাহ পাঠান। তাই তিনি নিদর্শনগুলো জাদুঘরে জমা দেন।
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, কোর্সটিকায় তোমরা পঞ্চম শ্রেণির বাংলা সবগুলো গল্প ও কবিতার উত্তর ডাউনলোড করতে পারবে। এই পোস্টে আলোচিত মাটির নিচে যে শহর প্রশ্ন উত্তর pdf সংগ্রহ করার জন্য ওপরে দেওয়া Answer Sheet বাটনে ক্লিক করো।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। সকল বিষয়ের ওপর অনলাইন ক্লাস পেতে আজই আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করে নাও।
Discussion about this post