যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : সহানুমান সঠিকভাবে গঠন করার ক্ষেত্রে বেশকিছু নিয়ম রয়েছে। এই নিয়মগুলো পূরণ করা না হলে সহানুমান অবৈধ হয় এবং অনুপত্তির উদ্ভব ঘটে। যেমন— সহানুমানের প্রথম নিয়ম অনুযায়ী সহানুমানে তিনটি পদ থাকতে হবে। কিন্তু এই নিয়ম লঙ্ঘন করে যদি চারটি পদ অন্তর্ভুক্ত করা হয় সেক্ষেত্রে সহানুমানে চতুষ্পদী অনুপত্তির সৃষ্টি হবে।
যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. চতুষ্পদী অনুপপত্তি বলতে কী বোঝ?
উত্তর : সহানুমানে চারটি পদের ব্যবহারজনিত সমস্যাকে চতুষ্পদী অনুপপত্তি (Fallacy of Four Terms) বলে ।
একটি সহানুমানে তিনটি পদ থাকে এবং প্রতিটি পদ দুই বার করে ব্যবহৃত হয়। সহানুমানে কোনোভাবেই তিনটির অধিক পদ ব্যবহার করা যায় না। যদি কোনো কারণে সহানুমানে তিনটির অধিক পদ ব্যবহার করা হয় তাহলে সিদ্ধান্ত ত্রুটিপূর্ণ হয়। সহানুমানের সিদ্ধান্তের এই ত্রুটিকে চতুষ্পদী অনুপপত্তি বলে।
২. A যুক্তিবাক্যের সরল আবর্তন কি সম্ভব?
উত্তর : সাধারণত অ যুক্তিবাক্যের সরল আবর্তন করা যায় না।
কেননা A যুক্তিবাক্যের সরল আবর্তন করতে গেলে এর অব্যাপ্য বিধেয় পদ উদ্দেশ্য পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং ব্যাপ্য হয়ে যায়। যা আবর্তনের নিয়ম বিরোধী। তাই এ যুক্তিবাক্যের সরল আবর্তন সাধারণভাবে আবর্তনের নিয়ম অনুযায়ী সম্ভব নয়। কিন্তু বিশেষ এক প্রকার অ যুক্তিবাক্য আছে যার সরল আবর্তন সম্ভব। যেমন-
A- বাংলাদেশের রাজধানী হয় ঢাকা- (আবর্তনীয়)
অতএব, ঢাকা হয় বাংলাদেশের রাজধানী- (আবর্তিত)
উপরের উদাহরণের অ যুক্তিবাক্যটির উদ্দেশ্য ও বিধেয় একই ব্যক্ত্যর্থকে নির্দেশ করে। এই জাতীয় অ বাক্যের সরল আবর্তন সম্ভব।
৩. ‘T’ যুক্তিবাক্যের প্রতি-আবর্তন সম্ভব নয় কেন?
উত্তর : বাক্যের প্রতি আবর্তন হয় O বাক্যে। কিন্তু ঙ বাক্যের আবর্তন সম্ভব নয়। তাই বাক্যের প্রতি আবর্তনও সম্ভব নয়।
‘T’ বাক্য একটি বিশেষ সদর্থক যুক্তিবাক্য। আবর্তিত করার ক্ষেত্রে ও বাক্যকে নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে প্রতিবর্তন করলে পাওয়া যাবে একটি বিশেষ নঞর্থক যুক্তিবাক্য, অর্থাৎ O বাক্য। কিন্তু আবর্তনের চতুর্থ নিয়ম অনুযায়ী ব্যাপ্যতা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে O বাক্যকে আবর্তন করা যায় না। এ পরিপ্রেক্ষিতেই I-বাক্যের প্রতি আবর্তন করা সম্ভব হয় না।
৪. সহানুমান অবৈধ হয় কেন?
উত্তর : সহানুমানের নিয়ম লঙ্ঘন করা হলে তা অবৈধ হয়।
সহানুমান সঠিকভাবে গঠন করার ক্ষেত্রে বেশকিছু নিয়ম রয়েছে। এই নিয়মগুলো পূরণ করা না হলে সহানুমান অবৈধ হয় এবং অনুপত্তির উদ্ভব ঘটে। যেমন— সহানুমানের প্রথম নিয়ম অনুযায়ী সহানুমানে তিনটি পদ থাকতে হবে। কিন্তু এই নিয়ম লঙ্ঘন করে যদি চারটি পদ অন্তর্ভুক্ত করা হয় সেক্ষেত্রে সহানুমানে চতুষ্পদী অনুপত্তির সৃষ্টি হবে।
৫. আবর্তনে কি সব সময় উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের স্থান পরিবর্তন হয়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : হ্যাঁ, আবর্তনে সব সময় উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের স্থান পরিবর্তন হয়।
আবর্তনের নিয়ম হলো আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য পদ সিদ্ধান্তে এসে বিধেয় পদ হবে। আবার আশ্রয়বাক্যের বিধেয় পদ সিদ্ধান্তে এসে উদ্দেশ্য হবে। কিন্তু তাদের গুণের কোনো পরিবর্তন হবে না। সুতরাং চূড়ান্ত বিচারে দেখা যায় আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় সিদ্ধান্তে এসে সব সময় স্থান পরিবর্তন করে।
৬. আবর্তনে ‘শুধুমাত্র একটি আশ্রয়বাক্য থাকে কি না বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর : আবর্তন অমাধ্যম অনুমান বিধায় এতে— ‘শুধুমাত্র একটি আশ্রয়বাক্য থাকে।
যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে গুণের পরিবর্তন না করে আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় ‘পদকে ন্যায়সংগতভাবে স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয়, তাকে আবর্তন বলে। যেমন-
A- সকল মানুষ হয় মরণশীল
I- কিছু মরণশীল জীব হয় মানুষ ।
উপর্যুক্ত যুক্তিটিতে ব্যবহৃত আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয়পদকে ন্যায় সংগতভাবে স্থানান্তর করে, গুণ অপরিবর্তিত রেখে সিদ্ধান্ত অনুমান করা হয়েছে। আর যুক্তিটিতে একটি আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত অনুমিত হয়েছে। যা অমাধ্যম অনুমান হিসেবে আবর্তনকে নির্দেশ করে।
৭. অব্যাপ্য মধ্যপদের অনুপপত্তি কীভাবে ঘটে?
উত্তর : সহানুমানে মধ্যপদ অন্তত একবার ব্যাপ্য না হলে অব্যাপ্য মধ্যপদের অনুপপত্তি ঘটে। সহানুমানের নিয়ম অনুসারে, মধ্যপদকে অন্তত একবার ব্যাপ্ত হতে হবে। ঐ নিয়ম লঙ্ঘন করলে অব্যাপ্য মধ্যপদজনিত অনুপপত্তি ঘটে যেমন-
সকল বিড়াল হয় প্রাণী
সকল বাঘ হয় প্রাণী
অতএব, সকল বাঘ হয় বিড়াল।
যুক্তিবিদ্যাতে ‘প্রাণী মধ্যপদটি উভয় আশ্রয়বাক্যেই অব্যাপ্য যা অব্যাপ্য মধ্যপদজনিত অনুপপত্তি নির্দেশ করে।
৮. E বাক্যের প্রতিবর্তন কেন অ বাক্যে করা হয়?
উত্তর : ‘E’ বাক্য সার্বিক নঞর্থক যুক্তি বাক্যের প্রতিবর্তন হবে ‘A’ বাক্যে বা সার্বিক সদর্থক যুক্তিবাক্যে।
পরিমাণ ঠিক রাখার জন্য উভয় বাক্যই হবে সার্বিক বাক্য। আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণের ভিন্নতার জন্য সিদ্ধান্ত হবে সদর্থক বাক্য। ফলে ‘E’ বাক্যের প্রতিবর্তন হবে ‘A’ বাক্যে। আর এই ‘A’ বাক্যের বিধেয় হবে ‘E’ বাক্যের বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদ।
৯. প্রতিবর্তনের সিদ্ধান্তে বিধেয় পদটি কী রূপ হয়ে থাকে? উদাহরণ দাও।
উত্তর : প্রতিবর্তনের সিদ্ধান্তে বিধেয় পদটি বিরুদ্ধ বিধেয় পদ রূপে থাকে।
যে অমাধ্যম অবরোহ অনুমানে একটি প্রদত্ত বাক্যের অর্থের কোন পরিবর্তন না ঘটিয়ে এর বিধেয়ের বিরুদ্ধপদকে সিদ্ধান্তের বিধেয় হিসেবে ব্যবহার করে, গুণ পরিবর্তন করে এবং উদ্দেশ্য পদের পরিমাণ অভিন্ন রেখে সিদ্ধান্ত গঠন করা হয়, তাকে প্রতিবর্তন বলে। যেমন-
কোন মানুষ নয় জ— (প্রতিবর্তনীয়)
অতএব, সকল মানুষ হয় অজ— (প্রতিবর্তিত)
►► আরো দেখো: যুক্তিবিদ্যা ১ম ও ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরের Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post