সাধারণত প্রতি ২৮ থেকে ৩৫ দিন অন্তর একজন সুস্থ্য ও স্বাভাবিত নারীর পিরিয়ড বা মাসিক হয়ে থাকে। ১২ বছর থেকে ৫৫ বছর বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে এমনটিই হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক একজন নারীর নিয়মিত ও সময়মতো মাসিক হওয়াটা সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। তবে তা যদি অনিয়মিত হয়ে পড়ে, তার মানে হয়তো শারীরিক কোনো সমস্যা আছে।
এ ক্ষেত্রে শরীরে কোনো অসুস্থতা সৃষ্টি হয়েছে কিনা বা জীবন-যাপনে কোনো ক্ষতিকর অভ্যাস যুক্ত হয়েছে কিনা, তার দিকে নজর দেয়া উচিত। পিরিয়ড দেরি হওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। ঠিক কি কি কারণে একজন নারীর অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে, আজ সেই সম্পর্কেই আলোচনা করবো।
মাসিক কতটা দেরি হলে তাকে অনিয়মিত বলবেন?
বেশিরভাগ নারীর মাসিকের চক্র প্রায় একই থাকে। তবে আপনার ক্ষেত্র যদি এক সপ্তাহ এদিক ওদিক হয়, তাহলে এটা অস্বাভাবিক কিছুই না। যেমন, একজন নারীর মাসিক হয় ২৫ দিন পর পর। কোনো এক মাসে ৩০ দিন বা ৩১ দিন পরও তার মাসিক হতে পারে। সেক্ষেত্রে এটা স্বাভাবিক একটি চক্র। কিন্তু আট দিন বা তার বেশি দিন দেরী হলে আপনি তাকে অনিয়মিত মাসিক বলে গণ্য করতে পারেন।
মাসিক দেরিতে হওয়ার কারণ কি?
বেশ কিছু কারণে পিরিয়ড দেরিতে হতে পারে বা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকতে পারে বা। নিচে সেই কারণগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
১। গর্ভাবস্থা: পিরিয়ড দেরিতে হলে প্রথমেই নিশ্চিত হোন আপনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন কিনা। অন্তঃসত্ত্বা হলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাবে।
২। বয়স: টিনেজ বয়সী (১৩-১৯ বছর) ও মধ্যবয়সী নারীদের মধ্যে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর পেছনের কারণটি হল শারীরিক হরমোন।
৩। স্ট্রেস: লম্বা সময় স্ট্রেসে (দুশ্চিন্তা) থাকলে অনেকেরই মাসিক দেরিতে হতে পারে।
৪। অকাল গর্ভপাত: আপনি গর্ভবতী হলেন, কিন্তু তা জানতেন না। এর পর নিজে থেকেই আপনার মিসক্যারিজ বা গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। এ ঘটনায় সাধারণ পিরিয়ডের তুলনায় কিছু দিন পর ভারী রক্তপাত হতে পারে, যাকে অনেকেই দেরিতে মাসিক হওয়া বলে ধরে নেন।
৫। কম ওজন: ওজন কম হলে সময়মতো পিরিয়ড নাও হতে পারে। এমনকি কিছু দিন বন্ধও থাকতে পারে।
৬। ফাইব্রয়েডস: জরায়ুতে টিউমারের মত এক ধরনের মাংস বৃদ্ধি হল ফাইব্রয়েডস। এগুলো পিরিয়ডের স্বাভাবিক চক্রকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে।
৭। হরমন জনিত জন্মনিয়ন্ত্রণ: জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে পিরিয়ড লেট হওয়া বা পরিবর্তন হওয়াটা স্বাভাবিক।
৮। স্বাস্থ্য সমস্যা: মনোনিউক্লিওসিস, ঠাণ্ডা, সর্দি, গলার ইনফেকশন- এ ধরনের সমস্যায় পিরিয়ড দেরিতে হতে পারে। তবে বড় কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন থাইরয়েডের সমস্যা বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের কারণেও পিরিয়ড লেট হতে দেখা যায়।
►► আরো দেখুন: মাসিক দেরিতে হচ্ছে? কারণ কি জানুন
►► আরো দেখুন: মাসিকের সময় যে ব্যায়াম না করলে মারাত্মক বিপদ
►► আরো দেখুন: রূপচর্চার বই Free Download করুন
মাসিক দেরিতে হলে করণীয় কি?
মাসিক দেরিতে হলে জীবন যাপন ও দৈনন্দিন খাদ্যাভাসে কিছু পরিবর্তন আনা যেতে পারে। এক্ষেত্রে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। আয়রন জাতীয় খাবার খেতে হবে যাতে শরীরে পরিমিত পরিমাণে রক্ত থাকে। শরীরের ওজন সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সর্বদা মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।
Discussion about this post