শিক্ষার্থীরা, সৃজনশীল পদ্ধতির আদলে অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস ২০২৪ চূড়ান্ত করা হয়েছে। অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার পরমার্জিত প্রশ্নকাঠামো, মানবণ্টন ও মূল্যায়ন নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। প্রতিটি বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের গুরুত্ব ৩০ শতাংশ ও বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নের গুরুত্ব ৭০ শতাংশ রেখে এ নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এনসিটিবি সূত্র এ তথ্য দৈনিক আমাদের বার্তাকে নিশ্চিত করেছে।
অভিজ্ঞতানির্ভর মাধ্যমিক পর্যায়ের নতুন শিক্ষাক্রমের বই থেকে পুরোনো স্টাইলে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা ডিসেম্বরে আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষা প্রাধান্য পাওয়া বইগুলো থেকে ডিসেম্বর নাগাদ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে পুরোনো স্টাইলে বার্ষিক পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।
অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস ২০২৪
নতুন শিক্ষাক্রমের ওই বইগুলোর কোন কোন টপিক থেকে পুরোনো স্টাইলে প্রশ্ন করে পরীক্ষা নেওয়া যায়, সে উপায় খুঁজে বের করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির পুরোনো কাঠামোর প্রশ্ন করার উপযোগী টপিকগুলো খুঁজে বের করা হচ্ছে। সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করে প্রস্তুত করা হচ্ছে বার্ষিক পরীক্ষা সিলেবাস। সে সিলেবাসেই মাধ্যমিক পর্যায়ের এক কোটির বেশি শিক্ষার্থীকে বার্ষিক পরীক্ষায় বসতে হবে।
অভিভাবকদের তীব্র প্রতিবাদে ১ সেপ্টেম্বর নতুন শিক্ষাক্রম বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ২০২৩ সাল থেকে বাস্তবায়ন শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম। ওই বছর তিন শ্রেণিতে বাস্তবায়ন করা হয়। চলতি বছর আরও নতুন চার শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন চলছে। এ শিক্ষাপদ্ধতি বাস্তবায়নে নানা অসংগতি ও অভিভাবকমহলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।
তাই এই শিক্ষাবর্ষের নয় মাসের মাথায় এসে ওই কারিকুলাম বাস্তবায়ন বন্ধ করে ডিসেম্বরে আগের নিয়মে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির এক কোটি শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নযোগ্য না হলেও পাঠ্যবই চলতি বছরের জন্য বহালই থাকবে। ফলে নতুন শিক্ষাক্রমের বই থেকেই কী উপায়ে পুরোনো স্টাইলে বার্ষিক পরীক্ষা হবে, তা বের করতে কাজ করছে এনসিটিবি।
অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস যেমন হবে
এনটিসিবির সূত্রে জানা গেছে, কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষকরা দ্রুত একটি সংক্ষিপ্ত আকারে সিলেবাস তৈরি করতে দিনরাত কাজ করছেন। শুধু মাধ্যমিকের চার শ্রেণির বই থেকে পুরোনো কাঠামোর প্রশ্ন করার উপযোগী টপিকগুলো খুঁজে বের করা, সিলেবাস প্রস্তুত ও মূল্যায়ন কাঠামো সংশোধনের কাজ করছে। এছাড়া অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষার বইয়ের কোন কোন অংশ থেকে প্রচলিত লিখিত পরীক্ষা নেওয়া যাবে, তা খুঁজে বের করে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস প্রস্তুত করছেন বলে জানিয়েছেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান।
রিয়াজুল হাসান একটি গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন যে শিক্ষাক্রমটি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছিল মাধ্যমিক পর্যায়ে, তা ছিল অভিজ্ঞতানির্ভর। তবে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগের শিক্ষাক্রমের আদলের শিক্ষায় ফিরে গিয়ে ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষার বইয়ের কোন কোন অংশ থেকে প্রচলিত লিখিত পরীক্ষা নেওয়া যাবে, তা খুঁজে বের করে আমরা ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস প্রস্তুত করছি।
আর বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নকাঠামো প্রস্তুত করছি। শিক্ষক ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে সেমিনার করে সিলেবাস ও প্রশ্নকাঠামোর খসড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে। সোমবারের মধ্যে সিলেবাস ও পরীক্ষা পদ্ধতি খসড়া প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর চূড়ান্ত সিলেবাস ও প্রশ্নকাঠামো প্রকাশ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেব।
তিনি আরও জানান, বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন হবে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের আদলে। প্রতিটি বিষয়ে ছোট প্রশ্ন, বড় প্রশ্নের সমন্বয়ে প্রশ্নকাঠামো প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া চলছে।
এ বিষয়ে জানাতে চাইলে মাউশির মাধ্যমিকের পরিচালক প্রফেসর জাফর আলী উক্ত গণমাধ্যমকে বলেন, মাধ্যমিক স্তরে এক কোটির বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। সেখানে নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠদান চললেও বছর শেষে পরীক্ষা হবে সৃজন পদ্ধতির আদলে। তবে এ বিষয়ে কোনো সিলেবাস আমরা এখনো হাতে পাইনি। এটা নিয়ে এনটিসিবি কাজ করছে। দ্রুত পেয়ে যাব বলে আশা করছি। আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা এলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেব।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ এমাম হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, কারিকুলাম নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত শোনার পর আমরা শিক্ষার্থীদের নলেজ বেইজড পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছি। এখন পাঠ্যবইয়ের মৌলিক বইয়ের বিষয়গুলো পড়ানো হচ্ছে। যে কোনো নিদের্শনা এলে আমরা যেন খাপ খাইয়ে নিতে পারি।
এরপর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পরিপত্রে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে প্রাক-প্রাথমিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে ধারাবাহিকতা রেখে এরই মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবইগুলোর পাণ্ডুলিপি প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে মুদ্রণ করা হবে। এক্ষেত্রে পাঠদান পদ্ধতি ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে।
যতদূর সম্ভব মূল্যায়ন পদ্ধতি পূর্বের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ এর মতো হবে। পরিপত্রে জানানো হয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে চলমান পাঠ্যবইগুলো ২০২৪ সালের পুরোটা সময় বহাল থাকবে। তাদের এ বছরই বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৫ সালে যথাসম্ভব সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হবে।
আরও দেখো: অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন (উত্তরসহ)
শিক্ষার্থীরা, তোমাদের অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস ২০২৪ পিডিএফ আকারে সংগ্রহ করতে উপরের class-8 syllabus অপশনে ক্লিক করো। এতে বলা হয়, যেসব শিক্ষার্থী ২০২৫ সালে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে, তাদের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ এর আলোকে প্রণীত শাখা ও গুচ্ছভিত্তিক সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তকগুলো (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত) প্রদান করা হবে। এসব শিক্ষার্থী নবম ও দশম শ্রেণি মিলিয়ে দুই শিক্ষাবর্ষে সম্পূর্ণ পাঠ্যসূচি শেষে ২০২৭ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
আমাদের ওয়েবসাইটে তোমার প্রয়োজনীয় সাবজেক্টের প্রশ্নের উত্তর না পেলে কোর্সটিকা ফেসবুক পেজে ইনবক্স করতে পারো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post