অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান ১ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর : শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা বলতে জীববিজ্ঞানের সেই স্বতন্ত্র শাখাকে বোঝায় যেখানে জীবজগৎকে ধাপে ধাপে বিন্যাস করার পদ্ধতি আলোচিত হয়।
বিপুল সংখ্যক প্রাণীর গঠন ও প্রকৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জনের সহজ উপায় হলো শ্রেণিবিন্যাস। প্রাণিদেহে বিদ্যমান বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে মিল, অমিল ও পরস্পরের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তার উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। এদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিভিন্ন স্তর বা ধাপে সাজানো হয়। এরই নাম শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা।
অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান ১ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১. বৈজ্ঞানিক নাম বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: উদ্ভিদ বা প্রাণীর জেনাস বা গণ নামের পরে একটি প্রজাতিক পদ যুক্ত করে সর্বমোট দুটি পদ সহযোগে যে নামকরণ করা হয় তাকে বৈজ্ঞানিক নামকরণ বা দ্বিপদ নামকরণ বলা হয়। মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম Homo sapiens। এখানে Homo হলো গণ নাম আর sapiens হলো প্রজাতিক পদ।
২. মানবদেহে নটোকর্ডের অবস্থান ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: মানবদেহে নটোকর্ডের অবস্থান পৃষ্ঠদেশের ঠিক মাঝ বরাবর।
মানুষ কর্ডাটা পর্বের প্রাণী। এ পর্বের প্রাণীদের সারাজীবন অথবা ভ্রূণ অবস্থায় পৃষ্ঠীয়দেশ বরাবর নটোকর্ড অবস্থান করে। নটোকর্ড হলো একটি নরম, নমনীয়, দণ্ডাকার ও দৃঢ় অখণ্ডায়িত অঙ্গ। মানবদেহে নটোকর্ড শুধু ভ্রূণীয় অবস্থায় থাকে। পরে এটি মেরুদণ্ডে পরিণত হয়।
৩. পাখি সহজে উড়তে পারে কেন?
উত্তর: পাখিদের ফুসফুসের সাথে বায়ুথলি থাকার কারণে পাখিরা সহজে উড়তে পারে।
পাখিরা কর্ডাটা (Chordata) পর্বভুক্ত এভিস (Aves) শ্রেণির প্রাণী। এদের দেহ পালকে আবৃত। এদের দুটি ডানা আছে। এরা উষ্ণ রক্তের প্রাণী। এদের হাড় শক্ত, হালকা ও ফাঁপা। তাছাড়া এদের ফুসফুসের সাথে বায়ুথলি আছে। তাই পাখিরা সহজে উড়তে পারে।
৪. উভচর ও সরীসৃপের দুটি প্রধান পার্থক্য উল্লেখ কর।
উত্তর: উভচর ও সরীসৃপের দুটি প্রধান পার্থক্য নিম্নরূপ:
i. উভচর-এর ত্বক ভেজা ও গ্রন্থিযুক্ত কিন্তু সরীসৃপের ত্বক শুষ্ক ও আঁইশযুক্ত।
ii. উভচর পানিতে ডিম পাড়ে এবং ব্যাঙাচি দশা দেখা যায় কিন্তু সরীসৃপরা মাটিতে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ফুটে।
৫. কর্ডাটা পর্বের প্রাণীদের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
উত্তর: কর্ডাটা পর্বের প্রাণীদের দু’টি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:
i. পৃষ্ঠদেশে একক, ফাঁপা স্নায়ুরজ্জু থাকে।
ii. সারা জীবন অথবা ভ্রূণ অবস্থায় পৃষ্ঠীয়দেশ বরাবর নটোকর্ড অবস্থান করে। নটোকর্ড হলো একটা নরম নমনীয়, দণ্ডাকার দৃঢ় অখণ্ডায়িত অঙ্গ।
৬. কনড্রিকথিস ও অসটিকথিস শ্রেণির দুটি পার্থক্য লেখ।
উত্তর: কনড্রিকথিস ও অসটিকথিস শ্রেণির দুটি পার্থক্য নিম্নরূপ:
কনড্রিকথিস:
১. কঙ্কাল তরুণাস্থিময়।
২. দেহ প্ল্যাকয়েড আঁইশ দ্বারা আবৃত এবং ফুলকাছিদ্র থাকে। কানকো থাকে না।
অসটিকথিস:
১. কঙ্কাল অস্থিময়।
২. দেহ সাইক্লোয়েড ও টিনয়েড আঁইশ দ্বারা আবৃত এবং ফুলকা কানকো দ্বারা ঢাকা থাকে।
৭. পতঙ্গ প্রাণীদের কীভাবে চেনা যায়?
উত্তর: পতঙ্গ প্রাণীরা আর্থ্রোপোডা (Arthropoda) পর্বের সদস্য। যেসব বৈশিষ্ট্য থাকলে এদের চেনা যায় সেগুলো হলো:
• পতঙ্গ প্রাণীদের দেহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিভক্ত ও সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গ বিদ্যমান।
• এদের মাথায় একজোড়া পুঞ্জাক্ষি ও অ্যান্টেনা থাকে।
• পতঙ্গ প্রাণীদের নরম দেহ কাইটিন সমৃদ্ধ শক্ত আবরণী দ্বারা আবৃত।
৮. দ্বিপদ নামকরণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: একটি প্রাণীর দুই অংশ বা পদবিশিষ্ট বৈজ্ঞানিক নামকরণকে দ্বিপদ নামকরণ বলে।
যেমন: মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম: Homo sapiens। এর ১ম অংশ গণ এবং পরবর্তী অংশ প্রজাতি। এ ধরনের নাম ল্যাটিন অথবা ইংরেজি ভাষায় লিখতে হয়।
১০. “হাইড্রা দ্বিস্তরী প্রাণী’—ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: হাইড্রা দ্বিস্তরী প্রাণী। এর দেহ দুটি স্তরে বিভক্ত।
হাইড্রা নিডারিয়া (Cnidaria) পর্বের প্রাণী। এ পর্বের প্রাণীদের দেহ দুটি ভ্রƒণীয় কোষস্তর দ্বারা গঠিত। দেহের বাইরের দিকের স্তরটি এক্টোডার্ম এবং ভেতরের স্তরটি এন্ডোডার্ম। হাইড্রার দেহেও দুটি স্তর দেখা যায়। অতএব, এটি একটি দ্বিস্তরী প্রাণী।
১১. শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা বলতে জীববিজ্ঞানের সেই স্বতন্ত্র শাখাকে বোঝায় যেখানে জীবজগৎকে ধাপে ধাপে বিন্যাস করার পদ্ধতি আলোচিত হয়।
বিপুল সংখ্যক প্রাণীর গঠন ও প্রকৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জনের সহজ উপায় হলো শ্রেণিবিন্যাস। প্রাণিদেহে বিদ্যমান বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে মিল, অমিল ও পরস্পরের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তার উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। এদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিভিন্ন স্তর বা ধাপে সাজানো হয়। এরই নাম শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা।
১২. ব্যাঙকে উভচর প্রাণী বলা হয় কেন?
উত্তর: ব্যাঙ পানি ও ডাঙা উভয় জায়গাতেই বাস করে বলে একে উভচর প্রাণী বলা হয়।
ব্যাঙ জীবনের প্রথম অবস্থায় পানিতে থাকে এবং মাছের মতো বিশেষ ফুলকার সাহায্যে শ্বাসকার্য চালায় এবং পরিণত বয়সে ডাঙায় থাকে।
৯. কুনোব্যাঙকে কেন উভচর প্রাণী বলা হয়?
উত্তর: কুনোব্যাঙ জলে ও ডাঙায় উভয় জায়গাতেই বাস করে বলে একে উভচর প্রাণী বলা হয়।
মেরুদণ্ডী প্রাণীর মধ্যে যারা জীবনের প্রথম অবস্থায় পানিতে এবং পরিণত বয়সে ডাঙায় বাস করে তারাই উভচর। এরা মাছের মতো বিশেষ ফুলকার সাহায্যে শ্বাসকার্য চালায়। কুনোব্যাঙের মধ্যেও এ বৈশিষ্ট্যগুলো বিদ্যমান। তাই একে উভচর প্রাণী বলা হয়।
আরও দেখো—অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান সকল অধ্যায়ের সৃজনশীল সমাধান
শিক্ষার্থীরা, মূল বই থেকে অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান ১ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য ১২টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তরসহ রয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করে তোমরা পরীক্ষার জন্য কমন পেয়ে যাবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post