অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান ৬ষ্ঠ অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর : তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলতে সেসব আইসোটোপকে বোঝায় যারা বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় রশ্মি ও কণা বিকিরণ করে।
কোনো মৌলের যেসব পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা সমান কিন্তু ভরসংখ্যা ভিন্ন তাদের আইসোটোপ বলে। সাধারণত আইসোটোপসমূহ অস্থায়ী। অস্থায়ী আইসোটোপ বিভিন্ন তেজক্রিয় রশ্মি ও কণা বিকিরণ করে। তাই তাদের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলা হয়।
অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান ৬ষ্ঠ অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১. ক্যাটায়ন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ক্যাটায়ন বলতে ধনাত্মক আধানযুক্ত আয়নকে বুঝায়।
কোনো পরমাণু যখন এক বা একাধিক ইলেকট্রন হারায় বা বর্জন করে তখন পরমাণুটি ধনাত্মক আধানযুক্ত আয়নে তথা ক্যাটায়নে পরিণত হয়। যেমন: Na পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস ২, ৮, ১। তার সর্বশেষ কক্ষপথে অবস্থিত ১টি ইলেকট্রন হারিয়ে ধনাত্মক আধানযুক্ত আয়ন তথা ক্যাটায়নে পরিণত হয়।
২. অক্সিজেনের পারমাণবিক সংখ্যা ৮ বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: পারমাণবিক সংখ্যা বলতে কোনো মৌলের একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসে বিদ্যমান প্রোটনের সংখ্যাকে বোঝায়। অক্সিজেনের পারমাণবিক সংখ্যা ৮ বলতে অক্সিজেন পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ৮টি প্রোটন এবং নিউক্লিয়াসের বাইরে ৮টি ইলেকট্রন আছে তা প্রকাশ করে।
৩. কার্বনের আইসোটোপ তিনটি কেন?
উত্তর: কার্বনের বেশির ভাগ পরমাণুতে ৬টি প্রোটন ও ৬টি নিউট্রন রয়েছে। কিন্তু কার্বনের কিছু পরমাণুতে ৭টি বা ৮টি নিউট্রন থাকে। এজন্য কার্বনের তিনটি আইসোটোপ রয়েছে। এগুলো হলো, (—)।
৪. চিকিৎসা ও কৃষিক্ষেত্রে আইসোটোপের ব্যবহার আলোচনা কর।
উত্তর: চিকিৎসা ও কৃষিক্ষেত্রে আইসোটোপের ব্যবহার নিচে আলোচনা করা হলো:
চিকিৎসা ক্ষেত্রে: বিভিন্ন রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ে আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়। কোনো ক্ষুদ্র রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তের মাধ্যমে আইসোটোপ পাঠিয়ে তা শনাক্ত করা যায়। একইভাবে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর কোন কোষ ক্যান্সার আক্রান্ত, তা আইসোটোপ পাঠিয়ে নির্ণয় করা যায়।
কৃষিক্ষেত্রে: কৃষিক্ষেত্রে পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে আইসোটোপের তেজষ্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কখন কোন সার কী পরিমাণ ব্যবহার করতে হবে তা জানতে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়।
৫. ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন কীভাবে তৈরি হয় তা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: আধানযুক্ত পরমাণুকে আয়ন বলে। যে আয়নে ধনাত্মক আধান থাকে তাকে ক্যাটায়ন আর যে আয়নে ঋণাত্মক আধান থাকে তাকে অ্যানায়ন বলে। একটি পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন করলে বা হারালে ক্যাটায়নে পরিণত হয়। আর ইলেকট্রন কারো কাছ থেকে গ্রহণ করলে বা নিলে অ্যানায়নে পরিণত হয়। যেমন: সোডিয়াম পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস ২, ৮ ও ১। এটি স্থিতিশীল অবস্থা অর্জনের লক্ষ্যে একটি ইলেকট্রন বর্জন করতে চায়। একটি ইলেকট্রন বর্জনের পর সোডিয়াম পরমাণু ধনাত্মক আধানযুক্ত পরমাণুতে পরিণত হয়। এতে সোডিয়াম পরমাণু ক্যাটায়নে পরিণত হয়। ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন তৈরি হয় ফ্লোরিন পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস ২, ৭। এটি স্থিতিশীল অবস্থা অর্জনের লক্ষ্যে একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করতে চায়। একটি ইলেকট্রন গ্রহণের পর ফ্লোরিন পরমাণু ঋণাত্মক আধানযুক্ত পরমাণুতে পরিণত হয়। এতে ফ্লোরিন পরমাণু অ্যানায়নে পরিণত হয়। এভাবে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন তৈরি হয়।
৬. চিকিৎসাক্ষেত্রে আইসোটোপের দুইটি ব্যবহার লেখ।
উত্তর: চিকিৎসাক্ষেত্রে আইসোটোপের দু’টি ব্যবহার নিম্নরূপ:
১. কোনো ক্ষুদ্র রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তের মাধ্যমে আইসোটোপ পাঠিয়ে তা শনাক্ত করা যায়।
২. ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ নির্ণয় ও ধ্বংস করা যায় আইসোটোপ ব্যবহার করে।
৭. তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলতে কী বুঝ?
উত্তর: তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলতে সেসব আইসোটোপকে বোঝায় যারা বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় রশ্মি ও কণা বিকিরণ করে।
কোনো মৌলের যেসব পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা সমান কিন্তু ভরসংখ্যা ভিন্ন তাদের আইসোটোপ বলে। সাধারণত আইসোটোপসমূহ অস্থায়ী। অস্থায়ী আইসোটোপ বিভিন্ন তেজক্রিয় রশ্মি ও কণা বিকিরণ করে। তাই তাদের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলা হয়।
৮. হিলিয়াম পরমাণু নিষ্ক্রিয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: হিলিয়াম পরমাণুর সর্বশেষ কক্ষপথ পূর্ণ আছে বলে পরমাণুটি নিষ্ক্রিয়।
একটি পরমাণুর সর্বশেষ কক্ষপথে যে কয়টি ইলেকট্রন থাকতে পারে, ঠিক সেই কয়টি থাকলে কক্ষপথটি পূর্ণ থাকে। এরকম পরমাণু নিষ্ক্রিয় হয়। হিলিয়াম পরমাণুতে ইলেকট্রনই থাকে ২টি। প্রথম কক্ষপথে সর্বোচ্চ ২টি ইলেকট্রন থাকতে পারে। তাই হিলিয়াম পরমাণু স্থিতিশীল বা নিষ্ক্রিয় হয়।
৯. ক্লোরিনের পারমাণবিক সংখ্যা ১৭ বলতে কী বুঝ?
উত্তর: ক্লোরিনের পারমাণবিক সংখ্যা ১৭ বলতে বোঝায়, মৌলটির পরমাণুতে প্রোটন আছে ১৭টি।
আবার কোনো পরমাণুতে প্রোটন আর ইলেকট্রনের সংখ্যা সমান। তাই ক্লোরিনের একটি পরমাণুতে ইলেকট্রনও রয়েছে ১৭টি।
১০. অক্সিজেনের ভরসংখ্যা ১৬ বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: অক্সিজেনের ভরসংখ্যা ১৬ বলতে বোঝায় এর পরমাণুতে প্রোটন ও নিউট্রনের সংখ্যার সমষ্টি ১৬।
কোনো মৌলের ভরসংখ্যা = ঐ মৌলের পরমাণুতে প্রোটন সংখ্যা + নিউট্রন সংখ্যা।
অক্সিজেনের নিউট্রন সংখ্যা = ভর সংখ্যা-প্রোটন সংখ্যা = ১৬ – ৮ = ৮
১১. একই মৌলের ভরসংখ্যা ভিন্ন হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: একটি মৌলের ভরসংখ্যা ভিন্ন হওয়ার কারণ নিউট্রন সংখ্যার ভিন্নতা।
কোনো মৌলের পরমাণুতে প্রোটন ও নিউট্রন সংখ্যার সমষ্টিকে ভরসংখ্যা বলা হয়। কিন্তু কোনো মৌলের প্রতিটি পরমাণুতে প্রোটন সংখ্যা একই। তবে নিউট্রন সংখ্যা পৃথক হতে পারে। এ কারণেই মৌলের ভর সংখ্যাও ভিন্ন হয়।
১২. আইসোটোপ বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: কোনো মৌলের ভিন্ন ধরনের পরমাণু যাদের প্রোটন বা পারমাণবিক সংখ্যা সমান কিন্তু ভরসংখ্যা ভিন্ন তাদের ঐ মৌলের আইসোটোপ বলে। যেমন: প্রোটিয়াম, ডিউটেরিয়াম ও ট্রিটিয়াম হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপ। এদের প্রত্যেকের পারমাণবিক সংখ্যা ১ অর্থাৎ একই কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন। এদের ভরসংখ্যা যথাক্রমে ১, ২ ও ৩।
আরও দেখো—অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান সকল অধ্যায়ের সৃজনশীল সমাধান
শিক্ষার্থীরা, মূল বই থেকে অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান ৬ষ্ঠ অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য ১২টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তরসহ রয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করে তোমরা পরীক্ষার জন্য কমন পেয়ে যাবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post