নবম শ্রেণির বিজ্ঞান ৬ষ্ঠ অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর : গুণে ও মানে ঠিক একই রকম তুলা পাওয়া সব সময় সম্ভব হয় না। একেক সময় একেক রকম সুতা তৈরি হয়, কখনো ভালো, কখনো মন্দ অর্থাৎ সুতার মান এক হয় না। এছাড়া বিভিন্ন রকম তুলা মিশিয়ে সুতা তৈরি করলে উৎপাদন খরচও কম হয়। তুলা আমদানি করা হয় বিভিন্ন দেশ থেকে। একেক দেশের তুলার মানও একেক রকম হয়। একই রকম তুলার যোগান পাওয়া বাস্তবে অসম্ভব। এজন্য বিভিন্ন রকম তুলা সংগ্রহ করেই মিশ্রণ তৈরি করা হয়।
নবম শ্রেণির বিজ্ঞান ৬ষ্ঠ অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১. পলিমার কাকে বলে?
উত্তর: অনেকগুলো একই রকম ছোট ছোট অংশ একের পর এক জোড়া লাগালে যে একটি বড় জিনিস পাওয়া যায়, তাকে পলিমার বলে। রসায়ন বিজ্ঞানের ভাষায় একই ধরনের অনেকগুলো ছোট অণু পরপর যুক্ত হয়ে পলিমার তৈরি করে।
২. কৃত্রিম তন্তু ও প্রাকৃতিক তন্তুর মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।
উত্তর: কৃত্রিম তন্তু ও প্রাকৃতিক তন্তুর মধ্যে দুটি পার্থক্য নিম্নরূপ—
কৃত্রিম তন্তু:
১. যেসব তন্তু বিভিন্ন পদার্থের রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্বারা কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা হয়, তারা হলো কৃত্রিম তন্তু। যেমন: পলিস্টার, রেয়ন, ডেক্রন, নাইলন ইত্যাদি।
২. কৃত্রিম তন্তুগুলোকে প্রধানত সেলুলোজিক তন্তু ও নন- সেলুলোজিক তন্তু এই দুই শ্রেণিতে ভাগ করা হয়।
প্রাকৃতিক তন্তু:
১. যেসব তন্তু প্রকৃতিতে পাওয়া যায়, তারা হলো প্রাকৃতিক তন্তু। যেমন: তুলা, পাট, লিনেন, রেশম ইত্যাদি।
২. প্রাকৃতিক তন্তুগুলোকে প্রধানত উদ্ভিজ্জ তন্তু, প্রাণিজ তন্তু ও খনিজ তন্তু এই তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়।
৩. পলিমারকরণ প্রক্রিয়া বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মনোমার সংযুক্ত করে পলিমার তৈরি হয়, তাকে বলে পলিমারকরণ প্রক্রিয়া। সাধারণত পলিমারকরণে উচ্চচাপ ও তাপের প্রয়োজন হয়।
৪. তন্তু বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: তন্তু বলতে আঁশজাতীয় পদার্থকে বুঝায়। বস্ত্রশিল্পে তন্তু বলতে বুনন ও বয়নের কাজে ব্যবহৃত আঁশসমূহকেই বুঝায়। তন্তু দিয়ে সুতা ও কাপড় ছাড়াও কার্পেট, ফিল্টার, তড়িৎ নিরোধক ইত্যাদি বিভিন্ন রকম পদার্থ তৈরি করা হয়।
৫. পশমের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য কী কী?
উত্তর: নমনীয়তা, স্থিতিস্থাপকতা, কুঞ্চন প্রতিরোধের ক্ষমতা, রং ধারণক্ষমতা ইত্যাদি পশমের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।
৬. স্পিনারেট বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যে যন্ত্রের মধ্য দিয়ে স্পিনিং দ্রবণ থেকে কৃত্রিম সুতার দীর্ঘ নাল বের হয়ে আসে তাকে স্পিনারেট বলে। এই দীর্ঘ নাল সরাসরি ব্যবহারযোগ্য। এই সুতা কাপড় তৈরি বা বয়নের কাজে ব্যবহার করা হয়।
৭. সুতি কাপড়কে প্রাকৃতিক পলিমার কেন বলা হয়?
উত্তর: প্রকৃতিতে প্রাপ্ত পলিমারসমূহকে বলা হয় প্রাকৃতিক পলিমার। সুতি কাপড় তৈরি হয় কার্পাস গাছের বীজ থেকে যা প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগৃহীত হয়। এজন্য সুতি কাপড়কে প্রাকৃতিক পলিমার বলা হয়।
৮. প্লাস্টিক ও রাবারের মধ্যে পার্থক্য লেখ।
উত্তর: প্লাস্টিক ও রাবারের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:
প্লাস্টিক:
১. তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী।
২. প্লাস্টিকের স্থিতিস্থাপক ধর্ম নেই।
রাবার:
১. তাপ ও বিদ্যুৎ কুপরিবাহী।
২. রাবারের স্থিতিস্থাপক ধর্ম আছে।
৯. বিভিন্ন রকম তুলার মিশ্রণ তৈরি করা হয় কেন?
উত্তর: গুণে ও মানে ঠিক একই রকম তুলা পাওয়া সব সময় সম্ভব হয় না। একেক সময় একেক রকম সুতা তৈরি হয়, কখনো ভালো, কখনো মন্দ অর্থাৎ সুতার মান এক হয় না। এছাড়া বিভিন্ন রকম তুলা মিশিয়ে সুতা তৈরি করলে উৎপাদন খরচও কম হয়। তুলা আমদানি করা হয় বিভিন্ন দেশ থেকে। একেক দেশের তুলার মানও একেক রকম হয়। একই রকম তুলার যোগান পাওয়া বাস্তবে অসম্ভব। এজন্য বিভিন্ন রকম তুলা সংগ্রহ করেই মিশ্রণ তৈরি করা হয়।
১০. রাবারের দ্রবণীয়তা গুণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: রাবার কিছু কিছু জৈব দ্রাবক যেমন—এসিটোন, মিথানল ইত্যাদিতে অদ্রবণীয় হলেও টারপেন্টাইন, পেট্রোল, ইথার, বেনজিন ইত্যাদিতে দ্রবণীয়।
১১. প্লাস্টিক পোড়ালে কী কী ক্ষতিকর পদার্থ নির্গত হয়?
উত্তর: প্লাস্টিক পোড়ালে অনেক ক্ষতিকর পদার্থ তৈরি হয়। যেমন—পিভিসি পোড়ালে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCl) নিঃসৃত হয়। আবার পলিইউরেথেন প্লাস্টিক (যা আসবাবপত্র, যেমন—চেয়ার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়) পোড়ালে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস ও হাইড্রোজেন সায়ানাইড নির্গত হয়।
১২. লুমেন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে সুতি তন্তুকে অনেকটা নলের মতো দেখায়। এ নলের মধ্যকার পদার্থ প্রথম অবস্থায় যে পদার্থ দ্বারা পূর্ণ থাকে তাকে লুমেন বলে।
১৩. লিনেনকে কেন প্রাকৃতিক তন্তু বলা হয়?
উত্তর: প্রাকৃতিক উৎস থেকে লিনেন তন্তু উৎপাদিত হয় বলে লিনেনকে প্রাকৃতিক তন্তু বলা হয়।
যেসব তন্তু প্রকৃতিতে পাওয়া যায় যেমন: পাট, রেশম, পশম, উল, সিল্ক, অ্যাসবেস্টস ধাতব তন্তু তাদের প্রাকৃতিক পলিমার বলে। লিনেনকেও প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। তাই একে প্রাকৃতিক পলিমার বলা হয়।
১৪. মেলামাইনকে কেন পলিমার বলা হয়?
উত্তর: অনেকগুলো একই রকম ছোট ছোট অংশ একের পর এক জোড়া লেগে যে বড় জিনিস তৈরি হয় তাকে বলা হয় পলিমার। মেলামাইন এভাবে গঠিত হয় বলে মেলামাইনকে পলিমার বলা হয়। মেলামাইন হলো মেলামাইন রেজিন নামের পলিমার, যা তৈরি হয় মেলামাইন ও ফরমালডিহাইড নামের দুটি মনোমার থেকে। এ দুই ধরনের মনোমার থেকে মেলামাইন গঠিত হয় বলে মেলামাইনকে পলিমার বলা হয়।
১৫. কার্ডিং এন্ড কম্বিং বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: সুতা কাটার দ্বিতীয় ধাপ হলো কার্ডিং এবং কম্বিং। তুলা, লিনেন, পশম এসব তন্তুর বেলায় এ ধাপটি প্রয়োগ করা হয়। তুলার বৈশিষ্ট্য ও দৈর্ঘ্য অনুযায়ী এ কাজের যন্ত্র ঠিক করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় ব্যবহার অনুপযোগী অতি ছোট তন্তু ও ময়লা বা ধুলাবালি বাদ দেয়া হয়। মিহি মসৃণ ও সরু সুতা তৈরি করতে কম্বিং দরকার হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু কার্ডিং করলেই চলে।
আরও দেখো—নবম ও দশম শ্রেণির বিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
নবম-দশম শ্রেণির প্রিয় শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান ৬ষ্ঠ অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে উত্তরগুলো সংগ্রহ করে নাও। এছাড়াও অধ্যায়ভিত্তিক জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক এবং সৃজনশীল প্রশ্নের সমাধান পেতে উপরে দেওয়া লিংকে ভিজিট করো।
Discussion about this post