নবম শ্রেণির বিজ্ঞান ৮ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (PDF)

নবম শ্রেণির বিজ্ঞান ৮ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর : মাটিতে পানি না থাকলে গাছপালা জন্মাতে পারে না এবং বেড়ে উঠতে পারে না। মাটি থেকে পাওয়া পানির সাহায্যেই গাছপালা সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে নিজেদের খাবার তৈরি করে ও আমাদের অক্সিজেন দেয়। গাছপালার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি (যেমন—খনিজ পদার্থ, নাইট্রোজেন, ফসফরাস ইত্যাদি) মাটি থেকে সরাসরি গ্রহণ করতে পারে না। এগুলো গ্রহণ করে মূলের সাহায্যে এবং এক্ষেত্রে পানি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। কাজেই পানি না থাকলে উদ্ভিদ মাটি থেকে এসব পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে না। ফলে এদের বেড়ে ওঠা বাধাগ্রস্ত হয়।

নবম শ্রেণির বিজ্ঞান ৮ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

১. মাটিতে বিদ্যমান প্রধান প্রধান খনিজ পদার্থ কী কী?
উত্তর: মাটিতে বিদ্যমান প্রধান প্রধান খনিজ পদার্থ বা অজৈব পদার্থসমূহ হলো: ক্যালসিয়াম (Ca), অ্যালুমিনিয়াম (Al), ম্যাগনেসিয়াম (Mg), লোহা (Fe), সিলিকন (Si), পটাসিয়াম (K) ও সোডিয়াম (Na)।

২. মাটিতে কোন খনিজ পদার্থসমূহ অল্প পরিমাণে থাকে?
উত্তর: মাটিতে অল্প পরিমাণে থাকে ম্যাংগানিজ (Mn), কপার (Cu), জিংক (Zn), কোবাল্ট (Co), বোরন (B), আয়োডিন (I) এবং ফ্লোরিন (F)।

৩. মাটিতে কোন কোন ধাতুর জৈব লবণ পাওয়া যায়?
উত্তর: মাটিতে কার্বনেট, সালফেট, ক্লোরাইড, নাইট্রেট এবং ক্যালসিয়াম (Ca), ম্যাগনেসিয়াম (Mg), পটাসিয়াম (K), সোডিয়াম (Na) ইত্যাদি ধাতুর জৈব লবণ পাওয়া যায়।

৪. বালি ও কাদামাটির কোনটির পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি?
উত্তর: কাদা মাটির পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি। এর কারণ হলো কাদামাটির ক্ষেত্রে মাটির কণাগুলোর ফাঁকে বিদ্যমান রন্ধ্র খুব সূক্ষ্ম, যা পানি ধরে রাখে। অন্যদিকে বালি মাটির বেলায় রন্ধ্রগুলো বড় বড়, যে কারণে পানি আটকে থাকে না বা ধরে রাখতে পারে না।

৫. মাটি আমাদের কী কী কাজে লাগে?
উত্তর: মাটি আমাদের নিম্নলিখিত কাজে লাগে:
১. মাটিতে গাছপালা জন্মায়। যা থেকেই আমরা খাদ্যশস্য পাই।
২. মাটিতেই আমরা ঘরবাড়ি, অফিস, রাস্তাঘাট তৈরি করি।
৩. জীবনধারণের দরকারি পানির বড় একটি অংশ আসে মাটির নিচ থেকে।
৪. আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি (যেমন—তেল, গ্যাস, কয়লা) সিংহভাগ আসে মাটির নিচ থেকে।
৫. সোনা, রুপা, লোহাসহ নানারকম খনিজ পদার্থ মাটিতে পাওয়া যায়।

৬. মাটিতে পানি না থাকলে কী সমস্যা হয়?
উত্তর: মাটিতে পানি না থাকলে গাছপালা জন্মাতে পারে না এবং বেড়ে উঠতে পারে না। মাটি থেকে পাওয়া পানির সাহায্যেই গাছপালা সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে নিজেদের খাবার তৈরি করে ও আমাদের অক্সিজেন দেয়। গাছপালার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি (যেমন—খনিজ পদার্থ, নাইট্রোজেন, ফসফরাস ইত্যাদি) মাটি থেকে সরাসরি গ্রহণ করতে পারে না। এগুলো গ্রহণ করে মূলের সাহায্যে এবং এক্ষেত্রে পানি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। কাজেই পানি না থাকলে উদ্ভিদ মাটি থেকে এসব পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে না। ফলে এদের বেড়ে ওঠা বাধাগ্রস্ত হয়।

৭. বালু মাটিতে বায়বায়ন বেশি হয় কেন?
উত্তর: বালু মাটিতে বিদ্যমান মাটির কণার আকার সবচেয়ে বড় থাকে। ফলে কণাগুলোর মাঝে ফাঁকা জায়গা বেশি থাকে, যার ফলে বায়বায়ন অনেক বেশি হয়।

৮. যেসব ফসলে অনেক পানি লাগে সেগুলো বালু মাটিতে ভালো হয় না কেন?
উত্তর: বালু মাটির পানি ধারণক্ষমতা কম, তাই পানি দিলে তা দ্রুত নিষ্কাষিত হয় এবং গ্রীষ্মকালে উদ্ভিদে পানির স্বল্পতা দেখা যায়। তাই যেসব ফসলে অনেক বেশি পানি লাগে সেগুলো বালু মাটিতে ভালো হয় না।

৯. পলি মাটি চেনার উপায় কী?
উত্তর: পলি মাটি হাতের সাথে লেগে থাকে। সামান্য পানিযুক্ত মাটি নিয়ে আঙুল দিয়ে ঘষলে যদি মসৃণ অনুভূত হয়, তাহলে এটি পলি মাটি। তাই এটাই পলি মাটি চেনার উপায়।

১০. জমিতে পলি পড়ে কীভাবে?
উত্তর: পলি মাটির কণাগুলো ছোট হওয়ায় এরা পানিতে ভাসমান আকারে থাকে এবং একপর্যায়ে পানির নিচে থাকা জমিতে পলির আকারে জমা পড়ে।

১১. ফসল চাষাবাদের জন্য দোআঁশ মাটি খুবই উপযোগী হয় কেন?
উত্তর: দোআঁশ মাটির একদিকে যেমন পানি ধারণ ক্ষমতা ভালো আবার প্রয়োজনের সময় পানি দ্রুত নিষ্কাশনও হতে পারে। তাই ফসল চাষাবাদের জন্য দোআঁশ মাটি খুবই উপযোগী।

১২. পিটি মাটিতে জৈব পদার্থ বেশি থাকে কেন?
উত্তর: পিটি মাটি তৈরি হয় মূলত জৈব পদার্থ থেকে; আর সে কারণে এতে অন্য সব মাটি থেকে জৈব পদার্থের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে।

১৩. ফসল উৎপাদনের জন্য খড়িমাটি উপযুক্ত নয় কেন?
উত্তর: খড়িমাটি ক্ষারীয় হয় এবং এতে অনেক পাথর থাকে। এই মাটি সাধারণত দ্রুত শুকিয়ে যায়। সে কারণে খড়িমাটি ফসল উৎপাদনের জন্য খুব একটা উপযুক্ত নয়।

১৪. মাটির pH এর মান ৭ রাখা গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর: বেশির ভাগ ফসলের ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়া যায় মাটির pH নিরপেক্ষ হলে অর্থাৎ এর মান ৭ বা তার খুব কাছাকাছি হলে। তাই কোনো একটি জমির মাটি পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় এর pH ৭-এর চেয়ে বেশ কম বা বেশি তাহলে এর pH ৭ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়।

১৫. শিল্পকারখানার বর্জ্য মাটি দূষণে কীরূপ প্রভাব বিস্তার করে?
উত্তর: শিল্প-কারখানার বর্জ্যে বিদ্যমান মারকারি ও অন্যান্য ধাতব পদার্থ মাটিতে বিদ্যমান উপকারী অণুজীবসমূহকে মেরে ফেলে মাটির উর্বরতা নষ্ট করে। আবার মাত্রাতিরিক্ত লবণ, এসিড বা ক্ষার গাছপালা ও ফসলের ক্ষতিসাধন করে। এই জাতীয় বর্জ্যে থাকা প্রোটিন বা অ্যামিনো এসিড ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা ভেঙে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস, সালফার ডাইঅক্সাইড গ্যাস ও ফসফরাসের অক্সাইড উৎপন্ন করে, যার কারণে মাটি দূষিত হয়ে পড়ে। এই জাতীয় দূষণের ফলে মাটির জৈব রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন ঘটতে পারে, যা মাটি দূষণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

Answer Sheet

আরও দেখো—নবম ও দশম শ্রেণির বিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

নবম-দশম শ্রেণির প্রিয় শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান ৮ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে উত্তরগুলো সংগ্রহ করে নাও। এছাড়াও অধ্যায়ভিত্তিক জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক এবং সৃজনশীল প্রশ্নের সমাধান পেতে উপরে দেওয়া লিংকে ভিজিট করো।