তোমাকে পাওয়ার জন্যে হে স্বাধীনতা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : তোমাকে পাওয়ার জন্যে হে স্বাধীনতা শীর্ষক কবিতাটি শামসুর রাহমানের শ্রেষ্ঠ কবিতা নামক কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে। কবিতাটি কবির বন্দী শিবির থেকে নামক কাব্যের অন্তর্ভূক্ত। স্বাধীনতা শুধু শব্দমাত্র নয়, এটি এমন এক অধিকার ও অনুভব যা মানুষের জন্মগত কিন্তু এই অধিকার আদায়ের জন্য বাঙালি জাতিকে দীর্ঘ কাল যেমন সংগ্রাম করতে হয়েছে তেমনি করতে হয়েছে অপরিসীম আত্মত্যাগ ।
১৯৭১ সালে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে আপামর বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। যুদ্ধচলাকালে বাঙালির রক্তে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয় পাকিস্তানি যুদ্ধবাজরা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামে সকিনা বিবির মতো গ্রামীণ নারীর সহায়-সম্ভ্রম বিসর্জিত হয়েছে, হরিদাসী হয়েছে স্বামীহারা, নবজাতক হারিয়েছে মা-বাবাকে।
তোমাকে পাওয়ার জন্যে হে স্বাধীনতা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন—১: নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মলগ্ন থেকেই শাসকগোষ্ঠী শুরু করে নানা বৈষম্যনীতি। তারা পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মাতৃভাষাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার হীন ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু এদেশের ছাত্র-শিক্ষকসহ আপামর জনতা এর বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়ে, বিসর্জন দেয় বুকের তাজা রক্ত।
ক. কার সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল?
খ. জলপাই রঙের ট্যাঙ্ককে কবি দানব বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকের যে ভাবটি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় পাওয়া যায় তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বর্ণিত দিকগুলোর একটিমাত্র দিক উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে’—মন্তব্যটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর।
১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. হরিদাসীর সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল।
খ. কবি জলপাই রঙের ট্যাঙ্ককে দানব বলেছেন, কারণ এটি মুক্তিযুদ্ধের সময় দখলদার বাহিনীর অত্যাচার, ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যার প্রতীক।
যুদ্ধের সময় দখলদার বাহিনী শহর ও গ্রামে ট্যাঙ্ক নিয়ে ঢুকে নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, ছাত্রাবাস ও বস্তি উজাড় করেছে। দানবের মতোই এই ট্যাঙ্ক ভয়ংকর ও নির্মম, যা শুধু ধ্বংস আর মৃত্যু বয়ে এনেছে। তাই কবি এই রক্তক্ষয়ী বাস্তবতাকে তুলে ধরতে জলপাই রঙের ট্যাঙ্ককে দানবের সাথে তুলনা করেছেন।
গ. উদ্দীপকের মূল ভাব হলো অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ, যা ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। উদ্দীপকে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী মাতৃভাষার ওপর দমননীতি চালিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু এ দেশের ছাত্র-শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষ এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। ভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দেয় ১৯৫২ সালের বীর শহীদরা।
একইভাবে, শামসুর রাহমানের কবিতায় স্বাধীনতা অর্জনের জন্য অসংখ্য আত্মত্যাগের চিত্র ফুটে উঠেছে। কবি দেখিয়েছেন, এই স্বাধীনতা সহজে আসেনি, অগণিত নিরীহ মানুষ, মুক্তিযোদ্ধা, কৃষক, মাঝি, রিকশাওয়ালা, ছাত্র-তরুণ সবাই প্রাণ দিয়ে এই স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে। কবিতায় বলা হয়েছে, শহরের বুকে ট্যাঙ্ক এসেছে দানবের মতো গর্জন করতে, গ্রামকে পরিণত করেছে ছাইয়ে, আর অবুঝ শিশুরা পিতামাতার লাশের ওপর হামাগুড়ি দিয়েছে। কবি প্রশ্ন করেন, এই স্বাধীনতার জন্য আর কতবার রক্তগঙ্গায় ভাসতে হবে? আর কতবার খা-বদাহনের মতো ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে হবে? এভাবে কবিতাটি মুক্তিযুদ্ধকালীন শহীদদের ত্যাগ ও যন্ত্রণাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
উদ্দীপকের ভাষা আন্দোলন ও কবিতার মুক্তিযুদ্ধÑদুটিই ছিল অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। ভাষার জন্য ১৯৫২ সালে মানুষ প্রাণ দিয়েছে, আর মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য ১৯৭১ সালে অগণিত মানুষ শহীদ হয়েছে। দুটো ক্ষেত্রেই একটি মহৎ অর্জনের জন্য ত্যাগের প্রয়োজনীয়তা প্রকাশ পেয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের ভাব ও কবিতার চেতনার মধ্যে গভীর মিল রয়েছে।
ঘ. “তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা” কবিতায় বর্ণিত দিকগুলোর একটিমাত্র দিক উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে”—এই মন্তব্যটি যথার্থ। কারণ কবিতাটি স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে সর্বব্যাপী ত্যাগ ও দুঃখ-যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে, তার এক বিস্তৃত চিত্র তুলে ধরেছে, যা উদ্দীপকে আংশিক প্রতিফলিত হয়েছে।
উদ্দীপকে শুধুমাত্র ভাষার অধিকারের জন্য আত্মত্যাগের প্রসঙ্গ এসেছে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অন্যায় দমননীতি ও উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বাংলার জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছিল। ছাত্র-শিক্ষক, সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং জীবন উৎসর্গ করে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। এটি ছিল বাংলার স্বাধীনতার পথে প্রথম রক্তাক্ত আন্দোলন।
অন্যদিকে, শামসুর রাহমানের কবিতায় ভাষা আন্দোলন ছাড়াও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, স্বজনহারা মানুষের বেদনা, যুদ্ধবিধ্বস্ত গ্রাম-শহর, নির্যাতিত নারীদের দুঃখ, অনাথ শিশুদের আর্তনাদসহ স্বাধীনতার জন্য সর্বস্তরের জনগণের আত্মত্যাগের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। কবি দেখিয়েছেন, কীভাবে শহর বিধ্বস্ত হয়েছে, গ্রামের পর গ্রাম পুড়ে ছাই হয়েছে, রাস্তায় ট্যাঙ্কের দানবীয় তা-ব চলেছে, শিশু তার পিতামাতার লাশের উপর হামাগুড়ি দিয়েছে, বিধবারা ভগ্নস্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছে।
এসব চিত্র উদ্দীপকে অনুপস্থিত।
অতএব, উদ্দীপকে শুধুমাত্র ভাষার অধিকারের জন্য আত্মত্যাগের বিষয়টি এসেছে, কিন্তু কবিতায় স্বাধীনতার জন্য সব ধরনের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের বিস্তৃত চিত্র ফুটে উঠেছে। তাই বলা যায়, এই মন্তব্যটি যথার্থ, কারণ কবিতার বহুমাত্রিক দিকগুলোর মধ্যে কেবলমাত্র একটি দিক উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে, সম্পূর্ণ চিত্র নয়।
সৃজনশীল প্রশ্ন—২: নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
তোমাকে অভিবাদন, বাংলাদেশ,
তুমি ফিরে এসেছ তোমার লাল সূর্য আঁকা পতাকার ভেতরে
যার আলোয় এখন রঞ্জিত হয়ে উঠেছে সাহসী বদ্বীপ,
তোমাকে অভিবাদন, বাংলাদেশ
তুমি ফিরে এসেছ তোমার অনাহারী শিশুটির কাছে
ফিরে এসেছ তোমার প্লাবনের কোমল পলিমাটিতে
যার মুঠোর ভেতরে এখন একটি ধানের বীজ;
ক. ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
খ. ‘আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়।’ বুঝিয়ে বলো।
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কোন দিকটির মিল রয়েছে? আলোচনা করো।
ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে হে স্বাধীনতা’ কবিতার মূলভাবটি প্রকাশিত হয়েছে কি? উত্তরের সপক্ষে বা বিপক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করো।
২ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ নামক কবিতাটি ‘শামসুর রাহমানের শ্রেষ্ঠ কবিতা’ শীর্ষক কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
খ. বাংলার মানুষকে স্বাধীনতার জন্য পৃথিবীর বুকে অনেকবার রক্ত দিতে হয়েছে।
স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। এই অধিকার অর্জনের জন্য এদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পাকিস্তানি বাহিনী এদেশে ছাত্রাবাসগুলোতে আক্রমণ করে। নির্মমভাবে গণহত্যা চালায়। পুড়িয়ে দেয় দেশের শহর ও গ্রামের লোকালয়। সম্ভ্রম হারায় অনেক নারী। যুদ্ধে আত্মত্যাগ করে অনেক নারী ও পুরুষ। রক্তের গন্ধ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। তবুও মাথা নত করেনি বাঙালি। বার বার এদেশ অত্যাচারীর অত্যাচারে রক্তগঙ্গায় ভেসেছে। এ কারণেই কবি বলেছেন—‘আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?’
গ. ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার শেষ অংশ যেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার নিশ্চয়তার কথা রয়েছে সে অংশের সঙ্গে উদ্দীপকের মিল রয়েছে।
বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। অনেক রক্তের বিনিময়ে বাঙালির স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। এর জন্য বাঙালিকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে নয় মাস। স্বাধীনতার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে এদেশের লাখো মানুষকে আত্মাহুতি দিতে হয়েছে। নির্যাতিত ও বিধবা হতে হয়েছে অসংখ্য নারীকে। ধ্বংস হয়েছে অজস্র জনপদ। উজাড় হয়েছে অনেক বস্তি ও ছাত্রাবাস। আর এর বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতার রক্তলাল পতাকা।
উদ্দীপকে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বর্ণিত হয়েছে। কবি এখানে নতুন বাংলাদেশকে স্বাগত জানিয়েছেন। কবি বলেছেন, ‘তুমি ফিরে এসেছ তোমার লাল সূর্য আঁকা পতাকার ভেতরে, ফিরে এসেছ তোমার অনাহারী শিশুটির কাছে, ফিরে এসেছ তোমার প্লাবনের কোমল পলিমাটিতে।’ বস্তুত ফিরে আসা বলতে মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে আসাকেই বোঝানো হয়েছে।
অন্যদিকে কবিতায় দেখতে পাই যুদ্ধের সময় অনেক রক্তগঙ্গা বইয়ে আমাদের স্বাধীনতা এসেছে। পিতা-মাতার লাশের উপর হামাগুড়ি দিয়েছে অনেক অবুঝ শিশু। সম্ভ্রম হারিয়েছে অনেক নারী। নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে উদ্দীপকের পতাকার মতো লাল পতাকা উড়িয়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বলা যায়, এভাবে স্বাধীনতার আকাক্সক্ষার বিষয়টিতে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার মিল রয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার মূল ভাবটি প্রকাশিত হয়নি।
স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। এ অধিকার অনুভবেরও বটে। কিন্তু পাকিস্তানিরা বাঙালি জাতির এ অধিকার হরণ করেছিল। এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য আপামর বাঙালি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পাকিস্তানি বাহিনী এদেশে গণহত্যা চালায়। পুড়িয়ে দেয় গ্রাম ও শহরের অজস্র লোকালয়। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং রক্তগঙ্গার বিনিময়ে অবশেষে স্বাধীনতা অর্জিত হয়। বাংলার আকাশে ওঠে স্বাধীনতার লাল সূর্য।
উদ্দীপকে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে অভিবাদন জানানো হয়েছে। উদ্দীপকের কবি এখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির আবেগকে সাবলীল ভাষায় তুলে ধরেছেন। কবির স্বপ্নের স্বাধীনতা ফিরে এসেছে বাংলার কোমল পলিমাটিতে, অনাহারী শিশুটির কাছে। উদ্দীপকটিতে যুদ্ধের কোনো বর্ণনা দেওয়া হয়নি। এছাড়া বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায় না উদ্দীপকে।
অন্যদিকে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতাটিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আবহকে তুলে ধরা হয়েছে। বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধ বিস্তৃত পরিসরে ফুটে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাঙালির রক্তে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয় পাকসেনারা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য অনেক নারী সম্ভ্রম হারিয়েছেন, অনেক নবজাতক হারিয়েছে মা-বাবাকে। আর্তনাদ করেছে কুকুরও। মুক্তিযুদ্ধে বাংলার শ্রমিক, কৃষক, জেলে প্রমুখ সাধারণ মানুষও আত্মত্যাগ করে। এভাবে দেখা যায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের চিত্রায়ন রয়েছে কবিতাটিতে।
উদ্দীপকে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটের কথা বলা হয়েছে। সেখানে নতুন স্বাধীন বাংলাদেশকে অভিবাদন জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত মুক্তিযুদ্ধের কথা বর্ণিত হয় নি। আর ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতাটিতে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বাপর প্রসঙ্গসহ মুক্তিযুদ্ধের একটি চিত্র ফুটে উঠেছে। তাই বলা যায়, ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতাটির মূল ভাব উদ্দীপকে ফুটে ওঠেনি। আংশিক চিত্রকে ধারণ করেছে মাত্র।
সৃজনশীল প্রশ্ন—৩: নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
অনেক যুদ্ধ গেল,
অনেক রক্ত গেল
শিমুল তুলোর মতো সোনারুপো ছড়াল বাতাস।
ছোট ভাইটিকে আমি কোথাও দেখিনা,
নরম নোলক পরা বোনটিকে আজ আর কোথাও দেখিনা,
কেবল পতাকা দেখি
কেবল উৎসব দেখি
স্বাধীনতা দেখি
তবে কি আমার ভাই আজ ঐ স্বাধীন পতাকা?
তবে কি আমার তিমিরের বেদিতে উৎসব?
ক. ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় সবচেয়ে সাহসী লোক কে?
খ. যার ফুসফুস এখন ‘পোকার দখলে’ এখানে পোকার দখলে বলতে কোন বিষয়টি নির্দেশ করা হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটি তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবিতার সাথে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের মূলভাব এবং তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা কবিতায় মূলভাব চেতনাগত দিক থেকে এক সূত্রে গাঁথা- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন—৪: নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ লক্ষ জনতার সামনে ভাষণ দেন। এই ভাষণে তিনি বলেন—‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। তিনি আরো বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।
ক. অবুঝ শিশু কিসের ওপর হামাগুড়ি দিয়েছিল?
খ. পাকিস্তানিরা কেন ছাত্রাবাস উজাড় করে দিয়েছিল?
গ. ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কোন বিষয়টি উদ্দীপকে রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. কবিতায় উল্লিখিত ‘তোমাকে আসতেই হবে’ আর উদ্দীপকের ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বাক্য দুটির মূলসুর একই—মন্তব্যটির যথার্থ বিচার করো।
আরও দেখো— নবম দশম শ্রেণির বাংলা সকল গল্প-কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলা মূল বই থেকে তোমাকে পাওয়ার জন্যে হে স্বাধীনতা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য অতিরিক্ত বেশকিছু সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post