নেকলেস গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : গ্যী দ্য মোপাসা এর লেখা “নেকলেস” গল্পটিতে দেখা যায় উচ্চবিলাসী ও লোভী এক নারীর চরিত্র। যে কিনা বিলাসীতার কারণে মুহূর্তেই নিঃস্ব হয়ে যায়। পরবর্তীতে পরিশ্রমে ফলে ধার-দিনা পরিশোধ করার মাধ্যমে “পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি” উক্তিটি প্রকাশ পেয়েছে। আবার গল্পের শেষ অপ্রত্যাশিত বাক্য থেকে শিক্ষা পাওয়া যায়, একটু অসাবধানতা জীবনে কীরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
আজ আমরা কোর্সটিকায় উচ্চ মাধ্যমিকের বাংলা ১ম পত্র বইয়ের “নেকলেস” গল্প থেকে গুরুত্বপূর্ণ ৫ টি সৃজনশীল প্রশ্ন আলোচনা করবো। পাশপাশি এখান থেকে PDF ফাইল ডাউনলোড করে পরবর্তী সময়ে অধ্যয়নের জন্য তোমার মোবাইল বা কম্পিউটারে প্রশ্নগুলো সংরক্ষণ করে রাখতে পারো।
নেকলেস গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১: মেধাবী রুবিনার বাবা খুব সামান্য বেতনে চাকরি করেন। তার সহপাঠীরা সকলেই অবস্থাপন্ন পরিবারের। সহপাঠীদের পোশাক, জীবনাচরণের সঙ্গে রুবিনার কিছুতেই খাপ খায় না। তবু তা নিয়ে সে মোটেই হীনমন্যতায় ভোগে না। তার ধনী সহপাঠীরাও রুবিনার বাহ্যিক চাকচিক্যের চেয়ে তার মেধাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। নিজের কঠোর পরিশ্রমে রুবিনা পরীক্ষায় খুব ভালো ফল করে। আজ তিনি একজন বড় কর্মকর্তা।
ক. বন্দুক কিনতে মসিঁয়ে কত ফ্রাঁ সঞ্চয় করেছিল?
খ. মাদাম লোইসেল আমন্ত্রণ-লিপিখানা টেবিলের উপর নিক্ষেপ করেন কেন?
গ. রুবিনার সঙ্গে মাদাম লোইসেলের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি বর্ণনা কর।
ঘ. পারস্পরিক সাদৃশ্য থাকা সত্ত্বেও জীবন পরিণতিতে দুজনের জীবন ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত।- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. চারশ ফ্রাঁ সঞ্চয় করেছিল।
খ. শিক্ষামন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার মতো কোনো ভালো পোশাক বা জড়োয়া গহনা মাদাম লোইসেলের ছিল না বলে আমন্ত্রণ লিপিখানা টেবিলের উপর নিক্ষেপ করে।
রুবিনার সঙ্গে মাদাম লোইসেলের সাদৃশ্যপূর্ণ দিক হলো কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা।
পরিশ্রমই মানুষের জীবনে সাফল্য বয়ে আনে। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই নিজ শক্তি সম্পর্কে মানুষ সজাগ হয়। এর মধ্যদিয়ে মানুষ দুঃখ, যন্ত্রণাকে জয় করে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যায়।
গ. ‘নেকলেস’ গল্পে প্রথম জীবনে মাদাম লোইসেল একজন উচ্চাভিলাষী নারী ছিল। কিন্তু ভাগ্য তাকে এই উচ্চাভিলাষী জীবনের আকাঙ্খা থেকে বিচ্যুত করেছে। সংসারে যখন প্রবল দারিদ্র্য উপস্থিত, তখন সে তাকে জয় করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে। শেষ পর্যন্ত সে সফল হয়েছে। উদ্দীপকের রুবিনাও কঠোর পরিশ্রমী। নিজের দারিদ্র্য নিয়ে সে কখনো হীন্যুতায় ভোগে না; বরং কঠোর পরিশ্রম করে সফলতার দিকে ধাবিত হয়।
কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতায় সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকের রুবিনার সাফল্য ও মাদাম লোইসেলের সাফল্য ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত। দুঃখ, দারিদ্র্য ব্যর্থতাকে জয় করার একমাত্র উপায় হলো পরিশ্রম। আলস্য জীবনের করুণ পরিণতিকেই ডেকে আনে। পক্ষান্তরে পরিশ্রম বয়ে আনে সৌভাগ্য ও সফলতা।
ঘ. ‘নেকলেস’ গল্পে মাদাম লোইসেল দারিদ্র্য ও দেনার দায় থেকে মুক্তির জন্য কঠোর পরিশ্রম শুরু করে। তারা বাসা বদল করে, দাসীকে বিদায় করে, ঘরের সবকাজ সে একে করে। এভাবে দশ বছর পর তারা তাদের দেনা পরিশোধ করে এবং কিছু সঞ্চয়ও করতে সমর্থ হয়। উদ্দীপকের রুবিনাও কঠোর পরিশ্রমী। নিজের মেধা ও পরিশ্রমই তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এ দিয়েই শেষ পর্যন্ত সে সফল হয়।
উদ্দীপকের রুবিনা ও ‘নেকলেস’ গল্পের মাদাম লোইসেল উভয়েই পরিশ্রমী। রুবিনা নিজ পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয় আর মাদাম লোইসেল দেনার দায় থেকে মুক্তি পায় এই পরিশ্রমের বিনিময়ে। তার সাদৃশ্য থাকলেও তাদের জীবন পরিণতি ভিন্ন।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২: ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মিরাজ সাহেব ব্যাংক ঋণে জর্জরিত হয়ে হারিয়ে ফেললেন সমস্ত বিষয় সম্পত্তি। এমনকি তাদের রাজপ্রাসাদের মতো বাড়িও উঠল নিলামে। কিন্তু সাহস ও মনোবল দিয়ে তিনি টিকে রইলেন কঠোর পরিশ্রম করে। শুরু করলেন নতুন ব্যবসা। শোধ করতে লাগলেন ব্যাংক ঋণ। এত বড় বিপদে একমাত্র মনোবল ও সাহসই তাঁকে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
ক. লোইসেল ও তার স্ত্রী ঋণ শোধের জন্য কত বছর কষ্ট করেছিল?
খ. ‘সামান্য একটি বস্তুতে কী করে একজন ধ্বংস হয়ে যেতে পারে আবার বাঁচতেও পারে।’- ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের সিরাজ সাহেবের মনোভাব কীভাবে ‘নেকলেস’ গল্পে প্রতিফলিত হয়েছে? -ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও ‘নেকলেস’ গল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উদ্দীপকে উপস্থিত।”- বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩: নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
দৈন্য যদি আসে আসুক লজ্জা কিবা তাহে?
মাথা উঁচু রাখিস
সুখের সাথী মুখের পানে যদি না চাহে,
ধৈর্য ধরে থাকিস।
ক. “নিয়তির ভুলেই যেন এক কেরানির পরিবারে তার জন্ম হয়েছে।”-কার?
খ. মাদাম লোইসেল কেন তার ধনী বান্ধবীর সাথে দেখা করতে চাইত না?
গ. উদ্দীপকের ভাবনার সাথে ‘নেকলেস’ গল্পের মাদাম লোইসেলের ভাবনার বৈসাদৃশ্য নিরূপণ কর।
ঘ. ‘নেকলেস’ গল্পের প্রেক্ষিতে উদ্দীপকের অংশটুকুর যৌক্তিকতা তুলে কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
পেটটি ভরে পায় না খেতে, বুকের কখান হাড়
সাক্ষী দেছে অনাহারে কদিন গেছে তার।
মিষ্টি তাহার মুখটি হতে হাসির প্রদীপ রাশি
থাপরেতে নিবিয়ে গেছে দারুণ অভাব আসি
পরনে তার শতেক তালির শতেক ছেঁড়া বাস
সোনালি তার গার বরণের করছে উপহাস।
ক. দীর্ঘদিন পর মাদাম ফোরস্টিয়ারের সাথে মাদাম লোইসেলের কোথায় দেখা হয়েছিল?
খ. মাদাম ফোরস্টিয়ার কেন মাদাম লোইসেলকে চিনতে পারলেন না?
গ. উদ্দীপকে ‘নেকলেস’ গল্পের প্রতিফলিত দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘নেকলেস’ গল্পের একটি বিষয়ের প্রতিফলন ঘটলেও সমগ্রতা ধারণ করেনি।” উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫: চুরির দায়ে চাকরি হারানোর পর দুবছর পেরিয়েছে। তবুও কাজের অভাব হয় নি সাকিবের। মিথ্যে সাক্ষ্যের কারণে দুবছরে পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করার রায় হয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভাবের সংসার হলেও রাতদিন পরিশ্রম করে সাকিব ও তার স্ত্রী উভয়ে মিলে এ অসাধ্যকে সাধন করেছে।
ক. হারটি খুঁজতে গিয়ে পরদিন সকাল কয়টার দিকে লোইসেল বাড়ি ফিরে এলো?
খ. “ঐ জড়োয়া গহনা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা আমার করতে হবে।” উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের সাকিবের সঙ্গে ‘নেকলেস’ গল্পের মি. লোইসেলের সাদৃশ্য নিরূপণ কর।
ঘ. “প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উদ্দীপকের পাত্র-পাত্রী যেন মাদাম ও তার স্বামী লোইসেলের মানসিকতার প্রতিচ্ছবি।”-উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
◉ আরও দেখ: একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সকল গল্প-কবিতার CQ-MCQ সমাধান
শিক্ষার্থীরা, উপরে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা মূল বই থেকে নেকলেস গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। একই সাথে পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য আরও অতিরিক্ত ৪টি প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। সবগুলো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ আকারে সংগ্রহের জন্য উপরে ‘ANSWER SHEET’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post