সাধারণ জ্ঞানের আজকের এই আলোচনায় আমরা ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান শাসনামলের একটি ঘটনাপঞ্জি তৈরি করে দেখাবো। এখানে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম থেকে শুরু করে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত প্রায় সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই উল্লেখ করা হয়েছে।
এই শীটটি আপনার পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করে মোবাইল বা কম্পিউটারে সংরক্ষণ করতে পারবেন। তাহলে চলুন, দেখে নেই পাকিস্তান শাসন আমলের সকল ঘটনাগুলো।
১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান শাসনামলের ঘটনাপঞ্জি
ভাষা আন্দোলন
- পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬% মানুষের মাতৃভাষা- বাংলা।
- উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব প্রথম গৃহীত হয়- ১৯৪৭ সালে ডিসেম্বর মাসে করাচিতে অনুষ্ঠিত শিক্ষা সম্মেলনে।
- অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে – তমুদ্দিন মজলিস প্রতিষ্ঠিত হয়।
- ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় পূর্ব বাংলার মূখ্যমন্ত্রী ছিলেন- নুরুল আমিন।
- ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন- খাজা নাজিমউদ্দিন।
- ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্রথম শহীদ মিনার নির্মান করা হয়- ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী।
- ‘উর্দু এবং একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’ এ কথাটি প্রথম বলেছিলেন- মুহম্মদ আলী জিন্নাহ, ২১ মার্চ, ১৯৪৮ সালে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে।
- সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয় ৩০ জানুয়ারী, ১৯৫২।
- ‘‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু” পুস্তিকার লেখক- ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
যুক্তফ্রন্ট ও ১৯৫৪-এর নির্বাচন
- যুক্তফ্রন্ট কবে গঠিত হয়- ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর।
- আওয়ামী মুসলীমলীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজাম-ই- ইসলাম, বামপন্থী গণতন্ত্রী দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়।
- ১৯৫৪-এর প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ২২৩ টি আসন লাভ করে এবং ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ পায় ৯টি আসন।
- যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা গঠিত হয়- ৩ এপ্রিল, ১৯৫৪ সালে শেরে বাংলা এ.কে.ফজলুল হকের নেতৃত্বে।
- যুক্তফ্রন্টের ২১-দফা কর্মসূচীর মধ্যে প্রথম দফা ছিল- বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা।
- যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা বাতিল ঘোষণা করা হয়- ৩০ মে, ১৯৫৪ সালে।
১৯৬৬-এর ৬ দফা
- লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে ৬ দফা রচিত হয়।
- শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফা দাবী পেশ করেন ১৩ ফ্রেব্রুয়ারী, ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের লাহোরে বিরোধী দলীয় সম্মেলনে।
- ছয় দফা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হয় ২৩ মার্চ, ১৯৬৬ সালে।
- ছয় দফার প্রথম দফা ছিল- প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার গঠন।
- ছয় দফাকে বলা হয়- বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ এবং বাঙালিদের ম্যাগনাকার্টা।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা এবং ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান
- ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলা দায়ের করা হয়- ৩ জানুয়ারী, ১৯৬৮।
- ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলার বিশেষ আদালতের বিচারক ছিলেন- পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি এস.এ.রহমান।
- ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলার আসামী ছিল- ৩৫ জন।
- ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলার প্রধান আসামী ছিলেন- শেখ মুজিবুর রহমান।
- ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলা প্রত্যাহার করা হয়- ২২ ফেব্রুয়ারী, ১৯৬৯ সালে।
- আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হককে গুলি করে হত্যা করা হয়- ১৫ ফ্রেব্রুয়ারী, ১৯৬৯ সালে।
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শহীদ ড. শামসুজ্জোহাকে হত্যা করা হয়েছিল- ১৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৬৯ সালে। ।
- গণঅভ্যুত্থানের জন্য আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়- ২৫ মার্চ, ১৯৬৯ সালে।
- আইয়ুব খান ইয়াহিয়া খানের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমতা হস্তান্তর করে- ২৫ মার্চ, ১৯৬৯ সালে।
- পুলিশের গুলিতে শহীদ আসাদ নিহত হন- ২০ জানুয়ারী, ১৯৬৯ সালে।
- শহীদ আসাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন- আইন বিভাগের।
- পুলিশের গুলিতে শহীদ মতিউর নিহত হন- ২৪ জানুয়ারী, ১৯৬৯ সালে।
- শহীদ মতিউর কোন বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন-নবকুমার ইনস্টিটিউটের, নবম শ্রেণীর ছাত্র।
- ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় ৫ জানুয়ারী, ১৯৬৯।
- ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কর্মসূচিতে ১১ দফা অর্ন্তভূক্ত ছিল।
আরো যা জানতে হবে
- ভারত-পাকিস্তান বিভক্ত হয়- ১৯৪৭ সালে।
- ভারত-পাকিস্তান বিভক্ত হয়- দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে।
- দ্বিজাতি তত্ত্বের প্রবক্তা- মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
- বঙ্গভঙ্গ করেন- লর্ড কার্জন ১৯০৫ সালে।
- বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়- ১৯১১ সালে।
- আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম সভাপতি ছিলেন- মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী।
- আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন- সৈয়দ শামসুল হক।
- আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়- ১৯৫৫ সালে।
- ন্যাপ গঠন করা হয়- ১৯৫৭ সালে।
- পাকিস্তানে গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন বসে -২৩ ফেব্রুয়ারী, ১৯৪৮, করাচিতে।
- লাহোর প্রস্তাব পেশ করা হয়- ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ।
- লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন- শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক।
- পাকিস্তানের গণপরিষদ বাতিল করা হয়- ২৪ অক্টোবর, ১৯৫৪ সালে।
- বাংলাদেশ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত ছিল- ২৪ বৎসর।
- আইয়ুব খানের সহচর ও পূর্ব পাকিস্তানে দীর্ঘকালীন গভর্ণর ছিলেন- মোনায়েম খান।
- পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান কার্যকর হয়- ২৩ মার্চ, ১৯৫৬ সালে।
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান জহুরুল হক হলের পূর্ব নাম- ইকবাল হল।
- বর্তমান আসাদ গেটের পূর্ব নাম- আইয়ুব গেট।
- পূর্ব বাংলার নাম পূর্ব পাকিস্তান হয়- ২৩ মার্চ, ১৯৫৬ সালে।
- হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন- ১৯৫৬ সালে।
- পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের প্রথম অধিবেশন হয়- ঢাকায়।
- পাকিস্তানের প্রথম শাসনতন্ত্র বাতিল করেন- ইস্কান্দার মির্জা ১৯৫৮ সালে।
- পাকিস্তানে প্রথম সামরিক আইন জারী করে- ইস্কান্দার মির্জা ১৯৫৮ সালে।
- আইয়ুব খান ইস্কান্দার মির্জার স্থলাভিষিক্ত হন- ২৭ অক্টোবর, ১৯৫৮ সালে।
- জেনারেল আইয়ুব খান নিজেকে স্বনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ঘোষনা করেন- ২৭ অক্টোবর, ১৯৫৮ সালে।
মৌলিক গণতন্ত্রের প্রবক্তা- আইয়ুব খান। - মৌলিক গণতন্ত্রীদের আস্থা ভোটে আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন- ফেব্রুয়ারী, ১৯৬০ সালে।
- পাকিস্তানের দ্বিতীয় শাসনতন্ত্রের ঘোষনা দেন- প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান । মার্চ, ১৯৬২ সালে।
- ১৯৫৪ সালের পর প্রাদেশিক নির্বাচন হয়- ১৯৬২ সালে।
- ১৯৬২ সালের নির্বাচনের পরে পূর্ব পাকিস্তানের আইন পরিষদের স্পীকার ছিলেন- আব্দুল হামিদ চৌধুরী।
- ১৯৬২ সালের পর প্রাদেশিক নির্বাচন হয়- ১৬ মে, ১৯৬৫ সালে।
- প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের বিপক্ষে ফাতেমা জিন্নাহ দাঁড়িয়ে ছিলেন- ১৯৬৫ সালের জানুয়ারী মাসের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে।
- প্রথম পাক-ভারত যুদ্ধ কবে শুরু হয়- ১৯৪৭ সালে।
- প্রথম পাক-ভারতের যুদ্ধের কারণ- পাকিস্তানের ভারত অধিকৃত কাশ্মীর দখল প্রচেষ্টা।
- ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ স্থায়ী ছিল- ১৭দিন।
- শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয়- ২৩ ফেব্রুয়ারী, ১৯৬৯ সালে।
- শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক ঘোষণা দেয়া হয়- ৩ মার্চ ১৯৭১ সালে।
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমে জাতির পিতা ঘোষণা দেন- আ.স.ম আব্দুর রব।
- ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের উপকূলভাগে ইতিহাসের বৃহত্তম ঘূর্ণিঝড় হানা দেয়- ১২ নভেম্বর।
- ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের আসন পেয়েছিল- ১৬৭ টি আসন (১৬৯-টির মধ্যে)।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক পরিষদের আসন পেয়েছিল- ২৮৮ টি আসন ( ৩০০-টির মধ্যে)। - পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হয়- ৭ ডিসেম্বর, ১৯৭০ সালে।
- পাকিস্তানের প্রাদেশিক নির্বাচন হয়- ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৭০ সালে। আলোচনা ভেঙ্গে দিয়ে ইয়াহিয়া খান ঢাকা ত্যাগ করেন- ২৫ মার্চ, ১৯৭১ সালে।
বাংলাদেশের প্রতিটি চাকরি পরীক্ষা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরীক্ষায় মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর প্রশ্ন থাকবেই। তাই এই লিংক থেকে উপরের আলোচনার ওপর একটি পিডিএফ শীট ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করুন এবং অনুশীলন করুন। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post