প্রিয় এসএসসি পরীক্ষার্থীরা, কৃষিশিক্ষা ব্যবহারিক পরীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে মৌখিক (Viva) অভীক্ষা। এ অভিক্ষায় শিক্ষার্থীদের কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। আজ কোর্সটিকায় আমরা কৃষিশিক্ষা ২য় অধ্যায় মৌখিক পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর শেয়ার করব। পাশাপাশি তোমরা এ পরীক্ষায় কীভাবে অংশগ্রহণ করবে, তাও আলোচনা করব।
মৌখিক পরীক্ষার প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলি
১. মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করার জন্য টেক্সট বইয়ের অধ্যায় মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে এবং সেখান থেকে যথাসম্ভব সর্বাধিক ছোট ছোট প্রশ্ন শিখে নিতে হবে।
২. মনে রাখতে হবে যে বিষয়টি প্রদর্শন করতে হবে পরীক্ষক মহোদয় শুধু তার ওপরই প্রশ্ন করেন না, সেজন্য সব অধ্যায়ের ওপর দক্ষতা রাখতে হবে।
৩. মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে প্রবেশের পূর্বে ড্রেস এবং চুল ঠিক করে নিতে হবে।
৪. রুমে ঢুকে শিক্ষকদের সালাম/আদাব দিয়ে দাঁড়াবে।
৫. শিক্ষক মহোদয় বসতে বললে বিনয়ের সঙ্গে বসবে।
৬. শিক্ষকদের সামনে কখনো দুর্বল হবে না, আবার কখনো বেশি স্মার্ট ভাব দেখানোর চেষ্টা করবে না।
৭. প্রশ্নগুলো ঠিকভাবে শুনে সংক্ষিপ্ত ও সঠিক উত্তর দিবে। উত্তর বেশি বড় করার চেষ্টা করবে না।
৮. কোনো প্রশ্নের উত্তর নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে তর্ক বা চ্যালেঞ্জ করবে না।
৯. উত্তর জানা না থাকলে এলোমেলো উত্তর দেবে না। ‘সরি (Sorry) এ মুহূর্তে স্মরণ করতে পারছি না’ – এভাবে উত্তর দেওয়া ভালো।
১০. মৌখিক পরীক্ষা শেষ হলে উঠে আসার সময় পুনরায় বিনয়সহকারে সালাম/আদাব জানাবে।
কৃষিশিক্ষা ২য় অধ্যায় মৌখিক পরীক্ষার প্রশ্ন
প্রশ্ন ॥ ৮৯ ॥ বীজ কী?
উত্তর : ফসল উৎপাদনে গাছের যে অংশ ব্যবহার করা হয় তাকেই বীজ বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়।
প্রশ্ন ॥ ৯০ ॥ নমুনা বীজ কী?
উত্তর : বীজ উৎপাদন করার পর সেই উৎপাদিত বীজের গুণমান পরীক্ষার জন্য সুনির্দিষ্ট উপায় অবলম্বন করে যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, তাকে নমুনা বীজ বলে।
প্রশ্ন ॥ ৯১ ॥ সম্পূরক খাদ্য কত দিন পর্যন্ত গুদামজাত করে রাখা যাবে?
উত্তর : সম্পূরক খাদ্য সর্বোচ্চ তিন মাসের জন্য গুদামজাত করে রাখা যাবে।
প্রশ্ন ॥ ৯২ ॥ ফিডিং ফ্রেম কী?
উত্তর : পুকুরে চাষকৃত মাছকে খাদ্য প্রদানের জন্য পুকুরের ওপর তৈরিকৃত কাঠামোকে ফিডিং ফ্রেম বলে।
প্রশ্ন ॥ ৯৩ ॥ একটি উদ্ভিদভোজী মাছের নাম লেখ।
উত্তর : একটি উদ্ভিদভোজী মাছের নাম হলো গ্রাসকার্প।
প্রশ্ন ॥ ৯৪ ॥ স্বল্প মূল্যের সম্পূরক খাদ্যে কতটুকু আমিষ থাকবে?
উত্তর : স্বল্প মূল্যের সম্পূরক খাদ্যে ২০-৩০% আমিষ থাকবে।
প্রশ্ন ॥ ৯৫ ॥ ফসল বীজ কাকে বলে?
উত্তর : উদ্ভিদ তত্ত্ব অনুসারে, উদ্ভিদের নিষিক্ত ও পরিপক্ব ডিম্বককে ফসল বীজ বলে।
প্রশ্ন ॥ ৯৬ ॥ কৃষিতাত্ত্বিক বীজ কাকে বলে?
উত্তর : কৃষিতাত্ত্বিক অনুসারে উদ্ভিদের যেকোনো অংশ (মূল, পাতা, কাণ্ড শাখা) যা উপযুক্ত পরিবেশে একই জাতের ও নতুন জাতের উদ্ভিদ জন্ম দিতে পারে তাকে বংশবিস্তারক উপকরণ বলে। এ ধরনের উপকরণকে কৃষিতাত্ত্বিক বীজ বলে।
প্রশ্ন ॥ ৯৭ ॥ তিনটি অঙ্গজ বীজের নাম লেখ।
উত্তর : ৩টি অঙ্গজ বীজের নাম- আমের কলম, আলুর কন্দ ও রসুন।
প্রশ্ন ॥ ৯৮ ॥ বীজ জমি পৃথকীকরণ কাকে বলে?
উত্তর : বীজের উৎপাদনের জন্য নির্বাচিত জমি ও পার্শ¦বর্তী একই ফসলের জমির মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্বের ব্যবধান থাকাকে বীজ জমি পৃথকীকরণ বলে।
প্রশ্ন ॥ ৯৯ ॥ গোখাদ্য কাকে বলে?
উত্তর : যেসব খাদ্য গবাদিপশুর দেহে আহার্যরূপে গৃহীত হয় এবং পরিপাক, শোষণ ও বিপাকের মাধ্যমে দেহে ব্যবহৃত হয় বা শক্তি উৎপাদন করে তাকে খাদ্য বলে। যেমন : গম, ভুট্টা, ঘাস, খৈল, ভুসি ইত্যাদি।
প্রশ্ন ॥ ১০০ ॥ উন্নত বীজ পেতে হলে কী করতে হবে?
উত্তর : উন্নত বীজ পেতে হলে যথাযথ নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করে বীজ উৎপাদন করতে হবে।
প্রশ্ন ॥ ১০১ ॥ বীজ উৎপাদনের জন্য কখন ফসল কাটতে হবে?
উত্তর : বীজ পাকার রং ধারণ করার পরপরই ফসল কাটতে হবে।
প্রশ্ন ॥ ১০২ ॥ আলুবীজ রোপণের কতদিন পর পর্যন্ত আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে?
উত্তর : আলুবীজ রোপণের ৬০ দিন পর পর্যন্ত আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে।
প্রশ্ন ॥ ১০৩ ॥ কোন ধরনের মাটি আদা চাষের জন্য উপযোগী?
উত্তর : উর্বর দোআঁশ মাটি আদা চাষের জন্য উপযোগী।
প্রশ্ন ॥ ১০৪ ॥ রোগিং কী?
উত্তর : বীজ বপনের সময় যতই বিশুদ্ধ বীজ ব্যবহার করা হোক না কেন জমিতে কিছু কিছু অন্য জাতের উদ্ভিদ ও আগাছা দেখা যাবে। জমিতে গিয়ে ঘুরে ঘুরে অনাকাক্সিক্ষত উদ্ভিদ তুলে ফেলাকে রোগিং বলে।
প্রশ্ন ॥ ১০৫ ॥ বেশি ফলন পেতে আদার জমিতে বেশি পরিমাণে কী প্রয়োগ করতে হবে?
উত্তর : বেশি ফলন পাওয়ার জন্য আদার জমিতে বেশি পরিমাণে জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।
প্রশ্ন ॥ ১০৬ ॥ রোগিং-এর পর্যায় কয়টি ও কী কী?
উত্তর : রোগিং-এর পর্যায় তিনটি। যথা :
i. ফুল আসার আগে, ii. ফুল আসার সময় ও iii. পরিপক্ব পর্যায়ে।
প্রশ্ন ॥ ১০৭ ॥ বীজ রোপণের কতদিন পর্যন্ত আগাছা দমন করতে হবে?
উত্তর : বীজ রোপণের ৬০ দিন পর্যন্ত আগাছা দমন করতে হবে।
প্রশ্ন ॥ ১০৮ ॥ আলুর দুটি রোগের নাম লেখ।
উত্তর : আলুর দুটি রোগের নাম দাঁদ রোগ, কাণ্ড পচা রোগ।
প্রশ্ন ॥ ১০৯ ॥ আলুর রোগ দমনের একটি ছত্রাকনাশকের নাম লেখ।
উত্তর : আলুর রোগ দমনের একটি ছত্রাকনাশকের নাম ডায়থেন এম ৪৫/ম্যানকোজেব।
প্রশ্ন ॥ ১১০ ॥ জাব পোকা আলুর কী ধরনের ক্ষতি করে?
উত্তর : জাব পোকা গাছের রস খায় এবং ভাইরাস রোগ ছড়ায়।
প্রশ্ন ॥ ১১১ ॥ জাব পোকা দমনের উপায় কী?
উত্তর : জাব পোকা দমনে স্বল্পমেয়াদি কীটনাশক, যেমন , ম্যারথিয়ন/ ম্যাল টোপ-৫৭ ইসি ২ মিলি/লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পরপর ¯েপ্র করে জাব পোকা দমন করা যায়।
প্রশ্ন ॥ ১১২ ॥ বীজের হার নির্ধারণ কীভাবে করা হয়?
উত্তর : বীজের বিশুদ্ধতা, সজীবতা, অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা, আকার, বপনের সময়, মাটির উর্র্বরতা শক্তি এসব বিবেচনা করে হেক্টরপ্রতি বীজের হার নির্ধারণ করা হয়।
প্রশ্ন ॥ ১১৩ ॥ আধুনিক জাতের আলু কতদিন পর সংগ্রহ করা যায়?
উত্তর : আধুনিক জাতের আলু (৮৫-৯০) দিনের মধ্যে সংগ্রহ করা যায়।
প্রশ্ন ॥ ১১৪ ॥ হাম পুলিং কাকে বলে?
উত্তর : মাটির উপরে গাছের স¤পূর্ণ অংশকে উপড়ে ফেলাকে হাম পুলিং বলে।
প্রশ্ন ॥ ১১৫ ॥ রাইজোমরট কী?
উত্তর : রাইজোমরট আদায় এক ধরনের রোগ। জমিতে এ রোগ হলে প্রথমে গাছের কাণ্ড হলুদ হয়ে পচে যায় এবং পরে রাইজোম পচে সম্পূর্ণ গাছ মারা যায়।
প্রশ্ন ॥ ১১৬ ॥ আদার কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা কী উপায়ে দমন করা যায়?
উত্তর : আদার মাঝে কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা দমনের জন্য ডাইমেক্রন বা ডারসবান প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে Spray করলে পোকা দমন হয়।
প্রশ্ন ॥ ১১৭ ॥ আদা রোপণের কত মাস পর সংরক্ষণ করা যায়?
উত্তর : আদা রোপণের প্রায় ১০-১১ মাস পর সংরক্ষণ করা যায়।
প্রশ্ন ॥ ১১৮ ॥ কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা দমনের দুটি ছত্রাকনাশকের নাম লেখ।
উত্তর : ডাইমেক্রন, ডারসবান।
প্রশ্ন ॥ ১১৯ ॥ মৌসুমি পুকুর কী?
উত্তর : যেসব পুকুরের গভীরতা কম এবং বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় (৩-৮ মাস) পর্যন্ত পানি থাকে তাকে মৌসুমি পুকুর বলে।
প্রশ্ন ॥ ১২০ ॥ পুকুর কাকে বলে?
উত্তর : ছোট ও অগভীর বদ্ধ জলাশয় যেখানে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে মাছ চাষ করা যায় এবং প্রয়োজনে এটিকে সহজেই সম্পূর্ণভাবে শুকিয়ে ফেলা যায় তাকে পুকুর বলে।
প্রশ্ন ॥ ১২১ ॥ আদর্শ পুকুর কী?
উত্তর : যে পুকুরে মাছ চাষের জন্য সব ধরনের অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান থাকে তাকে আদর্শ পুকুর বলে।
প্রশ্ন ॥ ১২২ ॥ রাক্ষুসে মাছ কী?
উত্তর : যেসব মাছ সরাসরি চাষের মাছ খেয়ে ফেলে, তাদের রাক্ষুসে মাছ বলে। যেমন : গজার, শোল, বোয়াল, টাকি ইত্যাদি।
প্রশ্ন ॥ ১২৩ ॥ ফাইটোপ্লাংকটন কী?
উত্তর : পানিতে যে জীবকণা অর্থাৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদ থাকে এবং মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তাকে ফাইটোপ্ল্যাংকটন বলে। এটি মাছের প্রাকৃতিক খাবার।
প্রশ্ন ॥ ১২৪ ॥ প্রাকৃতিক খাদ্য কী?
উত্তর : পানিতে যে জীবকণা অর্থাৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদ ও প্রাণী থাকে এবং মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তাকে প্রাকৃতিক খাদ্য বলে।
প্রশ্ন ॥ ১২৫ ॥ পানির পিএইচ কী?
উত্তর : পানির পিএইচ বলতে পানির অম্ল বা ক্ষার বা নিরপেক্ষ অবস্থা বোঝায়।
প্রশ্ন ॥ ১২৬ ॥ রোটেনন কী?
উত্তর : রোটেনন হচ্ছে মাছ মারার বিষ যা ডেরিস গাছের মূল থেকে তৈরি এক ধরনের পাউডার।
প্রশ্ন ॥ ১২৭ ॥ বয়স ও দৈর্ঘ্য অনুযায়ী মাছের পোনাকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর : বয়স ও দৈর্ঘ্য অনুযায়ী মাছকে চার ভাগে ভাগ করা হয় : ক. ডিম পোনা, খ. রেণু পোনা, গ. ধানী পোনা, ঘ. চারা পোনা।
প্রশ্ন ॥ ১২৮ ॥ পুকুরের কোন স্তরে ফাইটোপ্লাংকটন বেশি থাকে?
উত্তর : পুকুরের উপরের স্তরে ফাইটোপ্লাংকটন বেশি থাকে।
প্রশ্ন ॥ ১২৯ ॥ পুকুরের বাস্তুসংস্থান কাকে বলে?
উত্তর : পুকুরের জীব সম্প্রদায়ের সাথে পুকুরের পরিবেশের আন্তঃসম্পর্কই হলো পুকুরের বাস্তুসংস্থান।
শিক্ষার্থীরা, ওপরে আমরা কৃষিশিক্ষা মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের নিয়মগুলো সুন্দরভাবে আলোচনা করেছি। তোমরা মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সময় উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে শিক্ষকের সামনে উপস্থিত হবে। কোর্সটিকার আজকের এই পোস্টে আলোচিত কৃষিশিক্ষা ২য় অধ্যায় মৌখিক পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর ওপরে দেওয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে সংগ্রহ করতে পারবে।
এছাড়াও কৃষিশিক্ষা চিত্রসহ ব্যবহারিক রয়েছে কোর্সটিকায়। যা তোমরা বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবে। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post