পদার্থবিজ্ঞান ১ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর : দৈনন্দিন কাজকর্ম ও ব্যবসা বাণিজ্যের কারণে প্রাচীনকাল থেকেই মাপ-জোখের প্রচলন ছিল। এ মাপ-জোখের জন্য বিভিন্ন রাশির স্থানীয় বা এলাকাভিত্তিক বহু এককের প্রচলন ছিল। বৈজ্ঞানিক তথ্যের আদান-প্রদান ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের জন্য সারাবিশ্বে মাপ-জোখের একই রকম আদর্শের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
এ তাগিদে ১৯৬০ সাল থেকে দুনিয়া জোড়া বিভিন্ন রাশির একই রকম একক চালু করার সিদ্ধান্ত হয়। এককের এ পদ্ধতিকে বলা হয় এককের আন্তর্জাতিক পদ্ধতি বা সংক্ষেপে এসআই (SI)।
পদার্থবিজ্ঞান ১ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১. মৌলিক রাশি ও লব্ধ রাশির পার্থক্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: যেসব রাশি স্বাধীন বা নিরপেক্ষ এবং যেগুলো অন্য রাশির ওপর নির্ভর করে না বরং অন্যান্য রাশি এদের ওপর নির্ভর করে তাদের মৌলিক রাশি বলে। অপরদিকে, যেসব রাশি মৌলিক রাশির ওপর নির্ভর করে বা মৌলিক রাশি থেকে লাভ করা যায় তাদের লব্ধ রাশি বলে।
মৌলিক রাশি মাত্র সাতটি, যেখানে লব্ধ রাশির সংখ্যা অগণিত। মৌলিক রাশির মাত্রা প্রকাশে একটিমাত্র চিহ্ন ব্যবহার করা হয়, অপরদিকে লব্ধ রাশির মাত্রা প্রকাশে একাধিক চিহ্নের ব্যবহার প্রয়োজন হয়।
২. লব্ধ রাশি বলতে কী বোঝ—ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: যেসব রাশি মৌলিক রাশির ওপর নির্ভর করে বা মৌলিক রাশি থেকে লাভ করা যায় তাদেরকে লব্ধ রাশি বলে।
যেমন: ত্বরণ = বেগসময় = দূরত্ব সময় ২।
ত্বরণ রাশিটি দূরত্ব ও সময় এই দুটি মৌলিক একক থেকে লাভ করা যায়। তাই ত্বরণ একটি লব্ধ রাশি।
৩. এককের গুণিতক ও উপগুণিতক কেন ব্যবহার করা হয় ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: পদার্থবিজ্ঞানের বহুসংখ্যক শূন্যযুক্ত মানসমূহ সাধারণভাবে লেখার সময় আমাদের সাবধান থাকতে হবে প্রতিক্ষেত্রে শূন্যের সংখ্যা ঠিকমতো উল্লেখ করা হয়েছে কিনা। কিন্তু এই সংখ্যাটিকেই যদি আমরা এককের উপসর্গ ব্যবহার করে লিখি, তাহলে অনেক সুবিধাজনক, সংক্ষিপ্ত ও নির্ভুলভাবে লেখা সম্ভব হয়।
যেমন: 0.00001m রাশিটিকে লেখা যেতে পারে 10um।
৪. একই রাশির একাধিকবার পরিমাপকৃত মানে অসামঞ্জস্যতা এড়াতে কী করতে হবে?
উত্তর: কোনো একটি ধ্রুব রাশি কয়েকবার পরিমাপ করলে যে ত্রুটির কারণে পরিমাপকৃত মানে অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয় তা হলো দৈব ত্রুটি। সুতরাং দৈব ত্রুটিকে কমিয়ে আনতে হলে তথা একাধিকবার পরিমাপকৃত মানে অসামঞ্জস্যতা এড়াতে পরিমাপটি বার বার নিয়ে এদের গড় নিতে হয়।
৫. মাত্রা সমীকরণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর।
উত্তর: পদার্থবিজ্ঞানে মাত্রা সমীকরণের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। যেসব কারণে মাত্রা সমীকরণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে নিচে তা উল্লেখ করা হলো:
১. যেকোনো ভৌত রাশির একক নির্ণয় করা যায়।
২. একককে এক পদ্ধতি থেকে অন্য পদ্ধতিতে রূপান্তর করা যায়।
৩. বিভিন্ন রাশির সমীকরণ গঠন করা যায়।
৪. যেকোনো ভৌত রাশির সমীকরণের নির্ভুলতা বা সতর্কতা যাচাই করা যায়।
৫. কোনো ভৌত সমস্যা সমাধান করা যায়।
৮. এসআই (SI) একক বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: এসআই এককের পুরো নাম International system of units। বাংলায় বলা হয় এককের আন্তর্জাতিক পদ্ধতি। এ International system বা আন্তর্জাতিক পদ্ধতিকে সংক্ষেপে বোঝাতে SI (এসআই) ব্যবহার করা হয়। দৈনন্দিন কাজকর্ম ও ব্যবসা বাণিজ্যের কারণে প্রাচীনকাল থেকেই মাপ-জোখের প্রচলন ছিল। এ মাপ-জোখের জন্য বিভিন্ন রাশির স্থানীয় বা এলাকাভিত্তিক বহু এককের প্রচলন ছিল। বৈজ্ঞানিক তথ্যের আদান-প্রদান ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের জন্য সারাবিশ্বে মাপ-জোখের একই রকম আদর্শের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এ তাগিদে ১৯৬০ সাল থেকে দুনিয়া জোড়া বিভিন্ন রাশির একই রকম একক চালু করার সিদ্ধান্ত হয়। এককের এ পদ্ধতিকে বলা হয় এককের আন্তর্জাতিক পদ্ধতি বা সংক্ষেপে এসআই (SI)।
৯. স্ক্রু গজের ত্রুটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: স্ক্রুর মাথা যখন স্থায়ী কীলক বা সমতল প্রান্ত স্পর্শ করে তখন বৃত্তাকার স্কেলের শূন্য দাগ রৈখিক স্কেলের শূন্য দাগের সাথে মিলে যাওয়া উচিত। যদি না মিলে তাহলে বুঝতে হবে যান্ত্রিক ত্র“টি রয়েছে। বৃত্তাকার স্কেলের শূন্য দাগ যদি রৈখিক স্কেলের শূন্য দাগের নিচে থাকে তাহলে যান্ত্রিক ত্রুটি হবে ধনাত্মক (+e) আর যদি বৃত্তাকার স্কেলের শূন্য দাগ রৈখিক স্কেলের শূন্য দাগের উপরে থাকে তাহলে যান্ত্রিক ত্রুটি হবে ঋণাত্মক (-e)।
১০. যান্ত্রিক ত্রুটি বলতে কী বোঝ?
উত্তর: স্লাইড কালিপার্সের ক্ষেত্রে, মূল স্কেলের চোয়াল ও ভার্নিয়ার স্কেলের চোয়াল যখন লেগে থাকে তখন সাধারণত ভার্নিয়ার স্কেলের শূন্য দাগ প্রধান স্কেলের শূন্য দাগের সাথে মিলে যায়। যদি ভার্নিয়ার স্কেলের এ মূল স্কেলের শূন্য দাগ না মিলে তবে ঐ যন্ত্রে যান্ত্রিক ত্রুটি রয়েছে বলে মনে করা হয়। আবার স্ক্রু গজের ক্ষেত্রে, বৃত্তাকার স্কেলের শূন্য দাগ যখন রৈখিক স্কেলের শূন্য দাগের সাথে না মিলে তবে ধরে নিতে হবে যন্ত্রে ত্রুটি রয়েছে। এ ত্রুটিকেই যান্ত্রিক ত্রুটি বলা হয়।
১১. লঘিষ্ঠ গণন বলতে কী বোঝ?
উত্তর: স্ক্রু গজের বৃত্তাকার স্কেলের মাত্র একভাগ ঘুরালে স্ক্রুটি যতটুকু সরে আসে তাকে বলা হয় যন্ত্রের লঘিষ্ঠ গণন বা লঘিষ্ঠমান।
স্ক্রু গজের সাহায্যে পাঠ নেওয়ার আগে লঘিষ্ঠ মান নির্ণয় করতে হয়। বৃত্তাকার স্কেলের শূন্য দাগের সাথে রৈখিক স্কেলের শূন্য দাগ মিলিয়ে নিতে হয়। বৃত্তাকার স্কেলটিকে একবার ঘুরালে এর যতটুকু সরণ ঘটে এবং রৈখিক স্কেল বরাবর যে দৈর্ঘ্য অতিক্রম করে তাকে ঐ যন্ত্রের দৌড় বা পিচ বলে। যন্ত্রের পিচকে বৃত্তাকার স্কেলের সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে লঘিষ্ঠ মান পাওয়া যায়।
১২. কোনো স্কু গজের লঘিষ্ঠ গণন 0.01 মিমি বলতে কী বোঝায়-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: কোনো স্কু গজের লঘিষ্ঠ গণন 0.01 মিমি বলতে বোঝায় বৃত্তাকার স্কেলের মাত্র এক ভাগ ঘুরালে এর প্রান্ত বা স্কুটি 0.01 মিমি পরিমাণ সরে আসে। এক্ষেত্রে যন্ত্রটির পিচ এবং বৃত্তাকার স্কেলের ভাগসংখ্যার অনুপাতের মান 0.01 মিমির সমান।
সুতরাং বৃত্তাকার স্কেলের ভাগসংখ্যা 100 হলে পিচের মান= 100 × 0-01 মিমি = 1 মিমি।
আরও দেখো—এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান সৃজনশীল কমন সাজেশন
শিক্ষার্থীরা, তোমাদের আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার জন্য পদার্থবিজ্ঞান ১ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য ১২টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তরসহ রয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করে তোমরা পরীক্ষার জন্য কমন পেয়ে যাবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post